দুয়ারে সরকার, দুয়ারে রেশনের সঙ্গে এবার কলকাতার বেহালায় জোর চর্চা চলছে দুয়ারে জল নিয়ে!16 জুন রাতের টানা বৃষ্টিতে বেহালার অর্ধেক অঞ্চল জলের তলায় ডুবে গিয়েছিল। এখনও বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন আছে। কেউ কেউ তাই মশকরা করে বলছে কলকাতা লন্ডন না হলেও বেহালা পুরোপুরি ভাবে ভেনিস হতে সক্ষম হয়েছে!
প্রতি বর্ষায় এ যেন বেহালাবাসীদের কাছে নরকযন্ত্রণা। যার থেকে মুক্তির উপায় তাদের জানা নেই। বর্তমান মেয়র দোষ চাপান প্রাক্তন বামফ্রন্ট সরকারের ঘাড়ে, অন্যদিকে বামফ্রন্টের নির্বাচিত কাউন্সিলর, প্রাক্তন কাউন্সিলররা বলেন ‘একার পক্ষে সব ঠিক করা সম্ভব না।' দোষারোপের বল একবার এর কোর্টে থেকে আরেকবার ওর কোর্টে গেলেও সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় কই? এখনও অবধি আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। ফলে বেহালাবাসী হতে হলে জলযন্ত্রণাকে নিত্যসঙ্গী বানাতেই হবে।
16 জুনের পর প্রায় দেড় দিন কেটে গিয়েছে, এখনও বেহালার 29 পল্লী অঞ্চলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন। পাশেই বাজার, চিকিৎসা কেন্দ্র। ফলে স্থানীয়দের সেই ঠেলেই যেতে হচ্ছে। 119 নম্বর ওয়ার্ডের এক দোকানদার জানান, ‘দোকানের মধ্যে এখনও জল জমে আছে। প্রতিবার একটু বেশি বৃষ্টি হলেই এক জিনিস ঘটে। কবে যে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাব!’ রবীন্দ্রনগর বা পর্ণশ্রীর বাসিন্দারা আরও এক ধাপ এগিয়ে পথে নৌকো নামিয়ে দিয়েছেন। বৃষ্টির ফলে কোনটা পুকুর আর কোনটা রাস্তা এখানে চেনার উপায় নেই। এখানকার এক স্থানীয়, পৌলমী সরকার জানান, ‘প্রায় প্রতি বর্ষায়, বা ঘূর্ণিঝড় এলেই এভাবেই জল ঠেলে যাতায়াত করতে হয়। এক দু’দিনে জল নামে না অনেক সময়ই। ফলে এই জল দিয়ে নিত্য যাতায়াতে পায়ে ঘা হয়ে যায়।' নোংরা জমা জল থেকে যে চর্মরোগ হতে পারে, এ তো জানা কথাই, কিন্তু তাতে কার কী? সখেরবাজার, সরশুনার অনেক জায়গায় এখনও জল জমে আছে। পানীয় জলের কল জমা জলের নিচে। ফলে, পেটের রোগ ছড়ানোরও আশঙ্কা থাকছে।
এভাবেই ডুবে ছিল বেহালার একাংশ
কেন বেহালার এমন অবস্থা হয়? অল্প বৃষ্টিতেই কেন বারবার জল জমে যায়? এর প্রধান কারণ হচ্ছে বেহালার ভৌগলিক অবস্থান। আশপাশের খালের থেকে এখানকার ভূমি নিচু। ফলে স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী বৃষ্টির জমা জল এখান থেকে বের হতে পারে না। তাই লিফটিং, পাম্পিং করে, খালের গভীরতা বাড়িয়েই জমা জল নিকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই মতো 2011 সালেই বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। চারটি পাম্পিং স্টেশন বানানো সহ আরও অনেক কিছুই এই প্রকল্পের মধ্যে ছিল। কিন্তু দশ বছর কেটে যাওয়ার পরেও এই সমস্যার সমাধান হল না।
আরও পড়ুন: ত্রাণের প্লাস্টিকে দূষণের পাহাড় জমছে সুন্দরবনে
তাহলে এত বছর ধরে যে দুর্ভোগ স্থানীয়রা ভোগ করছে, তার থেকে মুক্তি কবে মিলবে? মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বেহালা এবং যাদবপুর অঞ্চলের নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হচ্ছে কলকাতা এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্রুভমেন্ট প্রোগ্রামের অধীনে। বর্তমানে ফেজ 2-এর কাজ চলছে। 2020-তেই এই কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু তা কোনও কারণবশত হয়নি। তবে এই বছর শেষ হয়ে যাবে। এবং তারপর আর কোনও সমস্যা থাকবে না। জল জমবে না।
পর্ণশ্রী এলাকায় কোনটা পুকুর কোনটা রাস্তা চেনার উপায় নেই
যদিও বেহালাবাসী প্রায় এক দশক ধরে এই প্রতিশ্রুতি শুনে আসছে। কিন্তু বাস্তবে তা আজও দেখে উঠতে পারেনি। দেখা যাক কবে তাদের কপাল থেকে এই জলযন্ত্রণা কমে! আপাতত নোংরা জলের ভেনিসের মধ্যেই তাদের দিন গুজরান হচ্ছে।
রিখটার স্কেলে 9.4-9.6 মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে বলে গবেষকরা দাবি করছেন।
ভোট উৎসবে বাঙালির নতুন সঙ্গী রাজনৈতিক মিষ্টি।
প্রাণ যায় যাক, পুণ্যস্নান চাই!
প্রত্যন্ত গ্রাম বাংলার ছবি এবং কীর্তনের অপূর্ব মিশেল ধরা পড়েছে এই সিরিজে।
মানুষের একটি অতি সাধারণ প্রবণতার কারণে একটি গোটা গ্রামকে দেখলে মনে হয়, সে যেন ঘুরছে!
‘বিজেপিকে তাড়াব এই ভোটে’ গানের কথায় বিজেপিকে তুলোধোনা করেছেন এই প্যারোডির স্রষ্টারা।