×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • প্রাণ বাঁচাবে ভেটিভার

    অয়ন্তিকা দত্ত মজুমদার | 15.11.2019

    ভূমিক্ষয় রোধে ভেটিভার ঘাস।

    বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আভাসমাত্র পাওয়া গেছিল। তাতেই কুপোকাত রাজ্যের বেশ কিছু জেলা। শেষপর্যন্ত ঝড়ের দাপট কমল সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভের দৌলতে। গত বুধবার মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সাইক্লোন বিধ্বস্ত জেলাগুলিতে ত্রাণের ব্যবস্থার জন্য বৈঠক করেন। সেখানে তিনি প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানোতে জোর দিয়েছেন।সমুদ্র-নদীর পাড়ে ভূমিক্ষয় রুখতে বিপুল পরিমাণে ঘাস লাগাতেও বলেন।

     

    ম্যানগ্রোভ অরণ্যই শুধু নয়, ভূমিক্ষয় রোধে বিশেষ ভূমিকা নেয় ভেটিভার নামে এক বিশেষ ঘাসও। বাংলায় যা খুস বা হিন্দিতে খসখস, তাই ইংরেজিতে ভেটিভার। বাম আমলে আরামবাগের খানাকুলে ভাঙন রুখতে ভেটিভার লাগানো শুরু হয়। গতবছর রাজ্যের ১৫ জেলায় ভূমিক্ষয় রুখতে এই ঘাস লাগিয়েছে সরকার। এর গুণাবলি কী? এর শিকড় মাটির ভেতরে প্রায় ৮-১০ মিটার গভীরে চলে যায়, ফলে মাটিকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরতে এর জুড়ি মেলা ভার। নদীয়ার সাড়ে পাঁচশ কিলোমিটার নদীবাঁধে, পশ্চিম মেদিনীপুরের আড়াইশ কিলোমিটারের বেশি নদীপাড়ে, মূর্শিদাবাদ, মালদহ, জলপাইগুড়ি ইত্যাদি স্থানে লাগানো হয়েছে এই ঘাস। মিলেছে সুফলও। অনেক স্থানেই রোখা গেছে বর্ষায় নদীর পাড় ভাঙা। এক কিলোমিটার নদীর পাড় বালির বস্তা ফেলে বাঁধাতে যা খরচ তা ভেটিভার বোনার খরচের প্রায় দশগুণ। এই বিপুল পরিমাণ কর্মযোজ্ঞের ফলে হয়েছে একশ দিনের কর্মসংস্থানও। এই ঘাস চাষের পর ক্ষয়ে যাওয়া ভাঙা নদীর পাড় সুন্দর সবুজ হয়ে উঠেছে।

     

    ভেটিভার ঘাস

    উপকারিতা এখানেই শেষ নয়। সুগন্ধী দ্রব্য, আয়ুর্বেদিক ওষুধ, ঘাসের দড়ি ইত্যাদিও পাওয়া যায় এর থেকে। এর কার্বন আবদ্ধ করার ক্ষমতাও অন্যান্য অনেক উদ্ভিদের থেকে বেশি। ফলে উপকৃত পরিবেশও। জল বা মাটি থেকে শুষে নিতে পারে ধাতুও, ফলে ল্যান্ডফিল সাইটের পাশে লাগালে দূষণ হয় কম। ভেটিভার ঘাসের হস্তশিল্পেরও যথেষ্ট চাহিদা আছে বাজারে। সেই কাজকেও সরকার উৎসাহ দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সবুজায়ন প্রকল্পের একটা বড়া অংশই এই ভেটিভার ঘাষের চাষ।

     

    তবে বন্যা নিয়ন্ত্রণের পুরনো পন্থা ছেড়ে একমাত্র ভেটিভার চাষই উপায় হতে পারেনা। তাহলে এর উপায় কী, এখনও জানা যায়নি। এই কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এবং জনমানসে সচেতনতার অভাব। বেনো ঘাসকে ভেটিভার বলে চালাচ্ছে বেশ কিছু ব্যবসায়ী। আবার এই ঘাস বুনতে যে চার-পাঁচ ফুট জমি লাগবে তা দিতে রাজি হচ্ছেন না অনেক জমির মালিক। ফলে জনমানসে সচেতনতা ছড়ানোটাও এই কাজের একটা বড় অঙ্গ। সেটা যত তাড়াতাড়ি করা যাবে, ততই পরিবেশের এবং নিজেদের প্রাণ বাঁচানোর উপায়ও বাড়বে।


    অয়ন্তিকা দত্ত মজুমদার - এর অন্যান্য লেখা


    পরিবেশ দূষণ, ভূমিক্ষয় ইত্যাদির ফলে প্রাকৃতিক দূর্যোগ এখন জলভাত। কিন্তু প্রাণ বাঁচানোর উপায় কী?

    'টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং'। কারা এই গ্যাং-এর সদস্য? কোথা থেকে তাদের উৎপত্তি? জবাব মিলল?

    পড়ন্ত বেলায় ইতিউতি চাউনি। যদি কেউ ভুল করেও ডাবের জলের খোঁজে আসেন।

    তাস নিয়েই জব্বর কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন আলিপুরদুয়ার জংশনের শুভ্রনীল মিত্র।

    নিজের মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা নজরে এলে সঙ্গে সঙ্গে সাহায্য নিন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের।

    এই ‘জাতীয়তাবাদ’-এর সংজ্ঞা নিজেদের মতো করে তৈরি করে নেওয়া নেহাতই একনায়কতন্ত্রের লক্ষণ।

    প্রাণ বাঁচাবে ভেটিভার-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested