দক্ষিণ দমদম পুরসভার 18 নং ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণ পার্কে থাকেন বছর পঁচিশের শিল্পা সাহা। গত রবিবার তাঁর ঠিক পাশের ফ্ল্যাটের একজন 87 বছরের বৃদ্ধা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। শিল্পার চোখের সামনে দিয়েই সেই বাড়ির আরও চারজনকে পুলিশ নিয়ে গেছে কোয়ারান্টাইনে। ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন শিল্পা ও তাঁর পরিবার। ‘সবসময় মনে হচ্ছে আমরা বাঁচব তো শেষ অবধি?' বাড়িতে বাবার কড়া নির্দেশ, দরজার বাইরে কেউ পা রাখবে না আর। কাউন্সিলরকে ফোন করে যেটুকু বাজার পাওয়া যায়, সেটুকুই আসবে। পাড়া থেকে বেরনোর সব রাস্তা বাঁশ দিয়ে বন্ধ। সব দোকানপাট একেবারে ঝাঁপ ফেলে দিয়েছে। পাশেই দিদির শ্বশুরবাড়ি শিল্পার, কিন্তু সেখান থেকেও দিদিকে বাড়িতে আসতে বারণ করে দিয়েছেন মা। আতঙ্কে ঘুম উড়ে গেছে পাড়ার সকলের।
এটা এখন কন্টেনমেন্ট জোন– অবরুদ্ধ এলাকা, লালের মধ্যেও সবচেয়ে বেশি লাল। এখানে স্তব্ধ হয়ে আছে জীবন।
এই বাড়িতেই থাকতেন করোনায় মৃত বৃদ্ধা
রামকৃষ্ণ পার্কেরই একান্নবর্তী পরিবারের মেয়ে পুজা মাইতি। বাড়িতে 25 জন সদস্য। ফ্ল্যাটের ঠিক পাশের বাড়িটাই তাঁদের। বাড়ির সবচেয়ে বড় জেঠু, পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, খাওয়ার সময় ছাড়া নিজের ঘর ছাড়া অন্য ঘরে প্রবেশ নিষেধ। আর বাড়ি থেকে একটা মানুষের বেরনোও বারণ। বাড়ির সবাই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, ফলে ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। বাড়িতে জীবনযাপনের সমস্যা হচ্ছে। তবুও আতঙ্কে এতটাই সিঁটিয়ে গেছেন, যে ডাল-ভাত খেয়ে থাকবেন তবুও বাড়ির বাইরে পা রাখবেন না। আজ সকালে হেল্থ সেন্টার থেকে এসে পাড়ার সবার শরীরের তাপমাত্রা মেপে গেছে। কাল সবার ব্লাড টেস্ট করা হবে।
এর পরের বাড়ির সদস্য মৌতুলি পাল, মা'র সঙ্গে থাকেন বাড়িতে। বহুদিন হল সেল্ফ কোয়ারান্টাইনে আছেন। এই খবর শোনার পর তাঁর সবচেয়ে বেশি ভয় হচ্ছে মায়ের জন্য, মায়ের 50-এর বেশি বয়স। বারবার হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে, স্যানিটাইজ করছেন, আর বাড়ির দরজা একদম বন্ধ করে দিয়েছেন।
পাড়ায় এক বাড়িতে আর জি কর হাসপাতালের নার্স থাকেন। যে হেতু তিনি হাসপাতালে যাওয়া-আসা করেন, তাই বাড়ির বাইরের একটি ঘরে একদম নিজেকে আলাদা করে ফেলেছেন বহুদিন আগেই। কারোর সঙ্গে মেলামেশা করেন না। পাড়ার কেউ যাতায়াত করেন না তাঁর বাড়িতে। কালকের পর থেকে পাড়ায় একটাও মানুষকে দেখা যাচ্ছে না। জানালার বাইরে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত সম্পূর্ণ জনহীন। রাস্তাঘাটে থমথমে পরিবেশ, হঠাৎ একটা কুকুর ডেকে উঠলেও পিলে চমকে উঠছে "রেড জোন'-এ থাকা প্রত্যেকটা মানুষের। অধীর আগ্রহে বসে তাঁরা, বাড়ির ওই চারজনের ‘করোনা পজিটিভ' কিনা জানতে। তাঁদের সঙ্গে তো কথোপকথন, মেলামেশা হয়েছে সবার! যদি পজিটিভ আসে? তারপর যদি তাঁদের সংস্পর্শে আসা অন্য কারও পজিটিভ আসে? তারপর যদি আরও কারও?
লকডাউনে ঘরে বসেই নাটক নিয়ে নতুন ‘এক্সপেরিমেন্ট’ করেছে ‘ফোর্থ বেল থিয়েটার’
বর্তমান থেমে গিয়েছে, ভবিষ্যৎ কী?? আমরা জানি না।
ইরফান খানের 13টা উল্লেখযোগ্য সংলাপ, যা মানুষকে উজ্জীবিত করে।
রঙের আমি, রঙের তুমি, রং দিয়ে যায় চেনা।
রঘুরাজপুর। বিদেশিরা এসে গুণগান করলেও, কদর নেই এই দেশে
জীবন গোছানোর তাগিদে তাঁর পড়াশোনাটা হয়ে ওঠেনি কখনোই