চৈতালী চট্টোপাধ্যায়
সুর ও সংগ্রাম তাঁর অন্তর্জাত। তাঁর মা, শচীনকর্তার ভাগ্নি বিভাস কুমারী দেববর্মণ। বাবা, হরিপদ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। বর্ণপরিচয়ের দ্বিতীয়ভাগ না পড়ে, নিজেই যুক্তাক্ষর শিখে নিয়েছিলেন।বইয়ের সরবরাহ জোগাতে জোগাতে ক্লান্ত বাবা মাকে ক্ষান্ত করতে ছোট মেয়েটি উল্টোভাবে ধরে বই পড়ত, সময় বেশি লাগবে বলে। পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা হলেও বিষয়ান্তর, সাহিত্য। পেশা ছিল প্রখ্যাত বিজ্ঞাপন সংস্থায় কপিরাইটিং। বিভিন্ন সংবাদপত্রে একের পর এক লিখে চলেছেন নানাকিছু। বিদেশি কিংবা প্রতিবেশী সাহিত্য থেকে অনুবাদ করেছেন। বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়েছে তাঁর কবিতা। কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধবই প্রকাশ পেয়েছে বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞাপনের মেয়ে(১৯৮৮), বান্ধবীর ডায়েরি থেকে, বিষাক্ত রেস্তোরাঁ, দেবীপক্ষে লেখা কবিতা(১৯৯০) প্রভৃতি। ছোটোদের জন্য লেখা গল্পবই-এর জন্য পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী পুরস্কার। পেয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের উদয়ভারতী জাতীয় পুরস্কার।মীরাবাঈ, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, বিষ্ণু দে পুরস্কার ও প্রসারভারতী কর্তৃক জাতীয় কবি নির্বাচিত হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি প্রবর্তিত বিভা চট্টোপাধ্যায় স্মারক সম্মান অর্পণ করা হয়েছে বাংলা কবিতায় তাঁর সামগ্রিক অবদান স্মরণে রেখে। ভালোবাসেন ভ্রমণ ও বন্ধুতা।
কবিতা
১
প্যাটার্ন
ও-পারে সর্বসুখ।
এ-পারে তুমি নিরাবলম্ব ঝুলে আছ।
ও-পার এইমাত্র সূর্যকে পেল, রেডিওতে গুর্জরি টোড়ি বাজছে,
এ-পার ভূতথইথই চরাচর।
ও-পারে নক্ষত্রপর্যন্ত স্বাধীনতা,
এ-পারে একটি মেয়েকে বেত মারছিল একদল পুরোহিত।
তুমি ও-পারে যাবে
আর, ও-পারের উৎসব তখনই, নদী টপকে
এ-পারে চলে আসবে।
এভাবেই কুয়াশা ও পলাশফুলের মধ্যে আন্তর্বয়ানের কাজ চলতে থাকে
২
একটি সাক্ষাৎকারের কিয়দংশ
- তোমাকে বেঁচে থাকার আলো কে দিয়েছে?
- ভোগবাদী জীবন ও মনুসংহিতা।
- প্রিয় নারী?
- ত্যাগ,তিতিক্ষায় ভরা মা ও পিসিমারা।
- তুমি সমকামী?
- ভালোবাসি কাছাকাছি চেতনাজগৎ।তার বাঁক,
অলিগলি,যৌনতাও সেভাবেই...
- বিবাহ করবে না?
- সূর্যাস্তের পর একটি গ্রে-লাইন নাকি দিগন্ত বরাবর থাকে,
অনেকে দেখেছে, আমি কোনওদিনও খুঁজে পাই নি
৩
ঘরের কথা
ভাঙা মাসে ওরা খোলেনি হিসেবেখাতা
আসবাবহীন বিছানা-উপুড় রাতে
জলথইথই বাথরুমে বাল্ব নেই
পোকা আছে কিছু কুসুম সাজানো আছে
এ-সবই ঘরের কথা কেউ-কেউ ভাবে
ব্যঞ্জনাছাড়া ধূ-ধূ আর সাদামাটা
ওরা তা ভাবেনি ওরা জানে ফাঁকা মানে
ভরে তুলবার অজস্র উপকথা
কেন লিখি
যাপনে ছিল, আজও আছে কবিতা আর তীব্র অনিশ্চয়। উত্তর কোলকাতার সরু গলি, উঠোন, ময়ূরের খাঁচা, রুপোলি মাছ ছিটকে-আসা গঙ্গাজলের কল, রোমান ক্যাথলিক স্কুলের চ্যাপেল ও অর্গানের অনুষঙ্গ, এসবই ভাসতে ভাসতে আমার কবিতার অভিমুখি হয়। নিজেকে অনুবাদ করার আর কোনও মাধ্যম আমার কাছে নেই। তাই কবিতা লিখি। একধরণের উপায়হীনতাও বটে! ব্যোদলেয়র বলেছিলেন literature must come before everything else... আমি তা বলব না। কিন্তু এ-ও জানি, কবিতা আমার নিয়তি।
দুর্গাপুজোর মতোই আবারও আদালতের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন দীপাবলিতে দূষণ ঠেকাতে?
এবারের ভোটে বাংলায় সবচেয়ে বড় সত্যিকারের ইস্যু বেকারত্ব। তা নিয়ে চর্চা কোথায় বড় নেতাদের মুখে?
কোভিড মোকাবিলায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় সরব মাদ্রাজ হাইকোর্ট। কত প্রাণ যাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়?
গোটা দেশের কৌতূহল, বিতর্কিত দু'টি টুইটের "মালিক' প্রশান্তকে সুপ্রিম কোর্ট কী শাস্তি দেয়।
মৌতাতে হুঁকো ধরালেন স্বপ্নময় চক্রবর্তী
লুপ্ত দুই হাতের বয়ান