সমীরণ ঘোষ
কবিতার নিগূঢ় পথের অভিযাত্রী বহরমপুরের এই কবি। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা: সিভিল এঞ্জিনিয়ারিং। প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ: চাঁদলাগা চৌষট্টি আশমান, অন্তর্বর্তীরেখা, কালোপাথরের হারমোনিয়াম, মরচে গোধূলির পাঠ, মরিচগন্ধের সেতু, হাড়ের দূরবিন, হাতআয়নার ঘুম। অনূদিত নাটক: সুইফট নির্মিত প্রাসাদ।
একগুচ্ছ কবিতা
প্রতীক্ষা
সাতহাজার অপেক্ষা-শেষে তোমার কংকাল বুড়ো নাবিকের কাঠের তোরঙ্গে
হয়তো সাতঘন্টার ধুধু। হয়তো সাত শতাব্দীর শিস কেলাসিত হচ্ছে এক কোণে
কেবিনের অন্ধকারে হাড়ের নিরালা বালিঝঞ্ঝার শীতে অস্পষ্ট বাজছে
হয়তো নাবিক তার দিনলিপি থেকে সেই গান খড়কে দিয়ে
শূণ্যে তুলছে অবিকল
ধ্বস্ত কুলুঙ্গি থেকে খুলির প্রদীপ শুধু কাহিনির মোম
বাকি জলের ফসফরাসে কোঁদা অবসানহীন নোনা রাতের খিলান
অভিনয়
পরের তোমাকে খুঁড়ি আগের বরফে পুঁতে শিখার চূড়ায়
হাতচিঠি নদীর গোধূলি। জোনাকিপুচ্ছে নামা বনের পাগল
সন্ধে ফোলে রুটির অন্তিম ভাপে। সমগ্র কণায়
জানলায় ঝরা মুখ করমচাপ্রাচীন
আগের তোমাকে ফুঁড়ি ছিদ্রে গলে সুচের রেখায়
কাঠ কয়লার বন
ফুলে ওঠা বাঁশি। আর গলে যাওয়া পাখির চৌরাসিয়া
যেন কেউ সম্পর্ক করছে ভাঙা রিডে। নিষ্করুণ চাপের ছাপায়
দোলনা সামান্য। কিন্তু বসেছে কেউ। মুখের জ্যামিতি ভেঙে সূর্যাস্তশিখায়
সুরও গলছে। ফুটো থেকে তামার জোনাকি। আংশিক। ইথারসামান্য
ডানার হিজাব তুলে মুণ্ড উড়ছে। মুখে হারানো জিভের শিস
লাভার নতুন দেশ। নীচে বসতির পোড়া খুনসুটি
পাতালসরণি থেকে ছায়া সরে আত্মকাহিনিহীন কাঠকয়লার বনে
তল্লাশ
কালো ধোঁয়ার ভেতর নাটকীয়ভাবেই তোমাকে চিনতে পারবে না দুই হাত
কিন্তু ব্রিজের ওপর শেষ চিৎকার ঘষা খাওয়া বিদ্যুতের ছিলকেসমেত
অসংলগ্ন আর বায়ুর ধারালো
দুই ছিন্ন হাত প্যাকিং বাক্সের ভেতর অশ্লীলরকম তোমাকে খুঁজছে
কালো ছায়াকে খুঁজছে মৃত আঙুলের কৃমির শ্মশান
ফুরিয়ে যাওয়া চাকার পাশেই খড়ের কাঠামোসহ ভ্রান্ত নদীতীর
রাতের কঙ্কাল কাঁধে তোমার চিৎকার বালি ফুঁড়ে তুলে যাবে
লুপ্ত দুই হাতের বয়ান
কবিতা ভাবনা
ঠান্ডা জমাট উডপেন্সিলের ভেতর যেন শুয়ে থাকা রুদ্ধশ্বাস লেখার কেলাস। ওই পাথুরে আত্মার দু-প্রান্তে অনন্তকাল নিবে থাকা শিষের বিন্দু, কখন যে শিশ্মমুণ্ডের সুচালো অভিঘাত নিয়ে বেরিয়ে পড়ে! সাদা কাগজের ঝিলে কর্তনের এফোঁড়-ওফোঁড়। চ্যাটচেটে কালো রক্তের প্রাণালী। কালো পরম্পরা। । যা আমার ছিন্ন মুণ্ড দু-ডানার নিষ্পেষণে, স্তনে গুঁজে, পান দেয় অসমচারীর। সেই প্রবঞ্চক ঘটনাসূত্রে ক্লাউনের ভূমিকায় এক নির্মাণকারিগর। বাকি ওই ডানার অন্তিম বায়ু যেখানে নামায়। যতিচিহ্নহীন এক ঘূর্ণাবর্তে। হয় সে লেখাকে ওড়ায়। নি:শেষ করে। কিংবা থিতু করে শেষের দরজায়। মুখে ফেনা ওঠে। চারপাশের কাঠের প্যাঁচানো ছিলকে কষের আগুন মুছে দেয়। পুননির্মানের ধুনি জ্বেলে বসি। লেখা তো নির্বিশেষ নির্মাণকারিগরি। অতিচেতনার মূলে স্থল পাওয়া শিষের আধান।
রাষ্ট্রের নজরদারির ঘৃণ্য নজির এবার ভোট পর্বের প্রচারে।
সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই শাস্তি পেতে হচ্ছে। বিশেষ উদ্দেশ্য থেকেই ইউএপিএ আইনে বদল আনা হয়েছে।
অনেকেই মনে করেন মানব সভ্যতার প্রথম সাহিত্য: গিল্গামেশ-কাব্য
খাঁচার তোতাপাখি সিবিআই কি মালিকের হুকুম মানতে গিয়ে আইন ভাঙছে?
ভারতীয় গণতন্ত্রেও চলছে নিউ নর্মাল ব্যবস্থা।
কলকাতার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সাংবাদিকদের চোখে কেমন লকডাউন চিত্র, আজ দেখুন চতুর্থ পর্ব।