×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • হরিয়ালি অটো

    অয়ন্তিকা দত্ত মজুমদার | 17-12-2019

    বিজয় দা'র সবুজ অটো

    উত্তর কলকাতার পোস্তা ব্রিজ। ভেঙে পড়ার দৌলতে এখন মোটামুটি সকলেই চেনে। সেখান থেকে গিরীশ পার্কের দিকে খানিক এগোলেই ডান হাতে এক সরু গলি। শিব কৃষ্ণ দাঁ লেন। বিখ্যাত দাঁ রাজবাড়ি। তার পাশেই আরেক মস্ত বাড়ি। বিখ্যাত নয় মোটেই। সেটারই একতলার ঘুপচি ঘরে দিদি ভাগ্নের সঙ্গে থাকেন ৫১ বছরের বিজয় পাল। পেশায় অটোচালক। বাড়ি বিখ্যাত না হলেও তিনি এখন সেলেব্রিটি। কারণটা তাঁর অটো। ফুলবাগান থেকে গণেশ টকিজ রুটের WB 04C 4925 রাস্তায় বেরোলেই সকলেই হাঁ করে চেয়ে থাকে। অটোর মাথায় সাজিয়েছেন আস্ত বাগান। ঘাস-গাছপালা লাগিয়ে অটো এখন তার “গো গ্রিন 

     

    ১৯৮৬ সালে পড়াশোনার ভয়ে গিরিডিতে দেশের বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসেন কলকাতায়। বাবা হাইস্কুলের বিজ্ঞানের শিক্ষক। কিন্তু ছেলে ম্যাট্রিক পাশ করেছেন যা হোক করে। কলকাতায় এসে ভাগ্নের দোকানে হাত লাগান। ১৯৮৯-এ সাড়ে তিন হাজার টাকা দিয়ে অটো কেনেন।  সেই থেকে শুরু। ঝড়-জল-রোদ কোনও দিন গাড়ি থামে না তাঁর। তাঁর জীবনের উপর দিয়েও ঝড়-জল নেহাত কম যায়নি। বড়সড় অ্যাক্সিডেন্টের পরও নতুন উদ্যোগে গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছেন রাস্তায়।

     

    বাগানের শখ তাঁর ছোট থেকেই। দেশের বাড়িতে নিজের উদ্যোগে গাছ লাগিয়ে যত্ন করতেন। সেই স্বভাব এখনও যায়নি। তার ওপর বাবার থেকে বিজ্ঞানশিক্ষাও নেহাত কম পাননি। তাই পরিবেশ সচেতনও বটে তিনি। গাড়িকে বউ বলেন। বউকে তো সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখতে হয়। তাই নানা রকমের সাজপোশাক করেছিলেন। কখনও লাইটিং, কখনও মিউজিক সিস্টেম, টিভি, তো কখনও পেতলের ঘট-কলাপাতা-ধান-দুব্বো। ‘ইয়ারানা’ সিনেমায় বিগ বি-র মত গাড়ির সঙ্গে নিজের পোষাকেও লাইট লাগিয়ে ঘোরেন আশেপাশের রাস্তায়। বাদ দেননি কিছুই। এরপর মাথায় ঢোকে গাড়ি পুরো ঝাউ পাতায় মুড়ে ফেলবেন। সেটাও করেন। কিন্তু মেরেকেটে তিনদিন টেকে সেটা। রোদে পুড়ে নষ্ট।

     

    এরপরেই অটোর মাথায় বাগান বানানোর সিদ্ধান্ত। কোথাও শুনেছিলেন এক ট্যাক্সি ড্রাইভার তার গাড়ির মাথায় বাগান করেছেন। খোঁজ-খবর নিয়ে নিজের বউকেও সাজিয়ে ফেললেন সেভাবেই। গাড়ির গায়ে লাল কালিতে বড় বড় করে লেখা ‘গাছ বাঁচান প্রাণ বাঁচান’। এখন প্রতিদিন সকালে অটো নিয়ে বেরনোর আগে চলে তারই পরিচর্যা। কতটা মাটি দিতে হবে, কতটা জল লাগবে, কতটা সার, সবকিছু হিসেব করে নিয়ম মেনে দেন। এখন গাড়িই তাঁর ধ্যানজ্ঞান। স্ট্যান্ডের বাকি অটোওয়ালারা কেউ হাসি-মস্করা করেন, কেউ আবার পাগল বলে ক্ষেপান। তবে সহকর্মীর খ্যাতিতে তারাও গর্বিত। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু খবরের কাগজ, টিভি চ্যানেলে নাম বেরিয়েছে তাঁর। নিজের বউ, মানে অটোর প্রশংসা করতে গিয়ে চোখ তার চকচক করে ওঠে।

     

     


    অয়ন্তিকা দত্ত মজুমদার - এর অন্যান্য লেখা


    এই বিশ্ব মহামারীর সুযোগ নিয়ে অনেক হ্যাকার ডানা মেলেছে

    অনেকের কাছেই সোশাল মিডিয়া বেদ বাইবেল কোরানের তুল্য

    সবকিছুর মাঝে লাভ হয় বিল্লুর। দোকানে হুড়মুড়িয়ে বিক্রি শুরু হয় তার।

    অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অকপট মতামত জানাচ্ছে আজকের নারী। সেই মতামতে রয়েছে রামধনুর রঙের মতোই অপার বৈচিত্র।

    তাস নিয়েই জব্বর কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন আলিপুরদুয়ার জংশনের শুভ্রনীল মিত্র।

    সরস্বতী পুজোর আগে কুল খেলেই লাল দাগ পড়বে পরীক্ষার রেজাল্টে! এই ডিরেক্ট কানেকশনটা কীরকম?

    হরিয়ালি অটো-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested