×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • উপেক্ষাতেও ধ্রুবক সেই সন্ধ্যা-তারা

    বিতান ঘোষ | 15-02-2022

    অনেক গান মনে ভিড় করে আসছে। তেমন অর্থবহ কোনও বিদায়ের গান বা শোকরসাত্মক গানের প্রথম পঙক্তি দিয়ে শিরোনাম তৈরি করে চমৎকারিত্ব দেখাতে মন সায় দিচ্ছে না। তাছাড়া একটা ‘তুমি আমার মা’ কিংবা ‘গানে মোর ইন্দ্রধনু’ দিয়ে তো সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মূল্যায়ন হয় না। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত, খেয়াল কিংবা ভজনেও নিজের স্বকীয়তা বজায় রেখেছেন সন্ধ্যা। অন্য অনেক বাঙালি প্রতিভার মতোই আরব সাগরের তীরে ভাগ্যান্বেষণে গিয়েছিলেন। কিন্তু আমাদের একাধারে দুর্ভাগ্য ও সৌভাগ্য, সন্ধ্যা সেখানে থিতু হতে চাননি। বাংলা মায়ের মেয়ে হয়ে ফিরে এসেছেন আপন গৃহে। কৃতী স্বামী শ্যামল গুপ্তের সুরারোপে বহু গান গেয়েছেন।

     

    সন্ধ্যা তথাকথিত বোম্বেওয়ালি হতে চাননি। একটা সময় বয়স ও অন্যান্য কারণে স্বেচ্ছায় সরে এসেছেন গানের মূলস্রোত থেকে। এর মধ্যে কিছুটা অভিমানও কি লুকিয়ে ছিল না? একদা ল্যুটিয়েন্স দিল্লি সামলানো বাঙালি, মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি চালানো বাঙালি একবারও সোচ্চারে বলল না, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় একটা ভারতরত্ন না হোক, পদ্মবিভূষণ পাওয়ার দাবি রাখেন? এই লজ্জা আমাদের সারা জীবন কুড়ে কুড়ে খাবে। আর সন্ধ্যা! তিনি এসব কেতাবি সম্মান ফম্মানকে কোনওদিনই পরোয়া করেননি। আত্মম্ভরিতায় বা হতাশায় মূলস্রোত থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রাখেননি নিজেকে। বরং রূপম ইসলাম কিংবা অরিজিৎ সিংহের মতো নবীন শিল্পীদের গানের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন, সাহস জুগিয়েছেন। এই ঔদার্য তো একজন প্রকৃত গুণী শিল্পীই দেখাতে পারেন।



    কিছুদিন আগে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে সন্ধ্যার আলাপচারিতার কিছু সংলাপ একটি সংবাদমাধ্যম তুলে ধরেছিল। কিছু অবোধ দেখলাম সেখানে মন্তব্য করেছেন, কোথায় লতা, আর কোথায়....!! হায়, বাঙালি কবেই আর তার মণিরত্নটিকে তার ক্রমান্ধকার খনিগর্ভে খুঁজে নিতে শিখেছে! প্রাতিষ্ঠানিক সম্মানে উদ্বেলিত হয়েছে, সেই নিক্তিতে শিল্প ও শিল্পীকে মেপেছে। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়রা সে সবের উর্ধ্বে। আজ লতা মঙ্গেশকর জীবিত থাকলে বাঙালি দেখত, তিনি শোকগ্রস্ত হয়ে বিবৃতি দিচ্ছেন। সেই সম্ভাবনা তো আর নেই। তবু সঙ্গীতের মহাকাশে সন্ধ্যা-তারার মতোই ধ্রুবক হিসাবে থেকে যাবেন গীতশ্রী— সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। 


    বিতান ঘোষ - এর অন্যান্য লেখা


    যারা ছিন্নমূল তাদের ভালবেসে ফেরানো হোক, হিংসার প্ররোচনায় আরও মানুষকে গৃহান্তরী করা শাসকের কাজ নয়।

    বোরখা পরা নাজমার বর 2002-এর গুজরাতে খুন হয়, এখন মুশকানরা আল্লা হো আকবর বললেই দোষ হয়ে যাবে?

    অমুকের ‘দ্যাশ’, তমুকের ‘ভিটে’ নিয়ে এই ‘দেশ’, তাকে অস্বীকার করাই শাসকের মূর্খামি।

    এতগুলো অবোধ প্রাণকে সহায় সম্বলহীন করে ঘরের মেয়ে কি শ্বশুরঘরে ফিরতে পারে?

    আচ্ছা মৃত্যুর পর কী? মৃত্যুতেই কি সবকিছুর পরিসমাপ্তি নাকি, তার মধ্যে থেকেই সৃষ্টির বীজ উপ্ত হয়?

    প্যালেস্টাইনে আবারও নরমেধ যজ্ঞে কতটা নজর দিতে পারবে মহামারীতে বিপর্যস্ত দুনিয়া?

    উপেক্ষাতেও ধ্রুবক সেই সন্ধ্যা-তারা-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested