ব্রিটিশ আমলে মহাত্মা গান্ধীকে যে আইনে বন্দি করা হত, আজও কি তার প্রয়োজন আছে? এবার প্রশ্নটা তুলল স্বয়ং সুপ্রিম কোর্ট। গণতন্ত্রের পরিপন্থী এই কালা কানুন আর কতদিন? এই বিষয়ে গত 16 জুলাই (শুক্রবার) 4thpillarwethepeople.com একটি আলোচনার আয়োজন করেছিল। সুদীপ্ত সেনগুপ্তর সঙ্গে আলোচনায় সাংবাদিক রজত রায় ও শুভাশিস মৈত্র এবং আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন।
1) অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন এই আইন থাক, কিন্তু তার প্রণয়নের উপর নজর দিতে হবে। কিন্তু আসলে এমন আইন কোনও গণতান্ত্রিক দেশে থাকাই উচিত নয়।
2) সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। অনেকেই ভাবেন সরকার আমায় এটা দিলেন, ওটা দিলেন, আদতে সরকার কিন্তু কিছু দেয় না। আমাদের টাকায় কাজ করে। ফলে নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে এবং আদায় করতে হবে।
3) ভারতীয় দণ্ডবিধির 124 (A) ধারা, যা সিডিশন অ্যাক্ট বা দেশদ্রোহিতামূলক আইন হিসাবে পরিচিত— তা যে একটা নিষ্প্রয়োজনীয় আইন তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
4) জনমানসে এই আইন নিয়ে চর্চা হচ্ছে, অনেকেই বুঝতে পারছেন এই আইন শাসক কর্তৃক বিরোধী বা বিরুদ্ধমতের কন্ঠরোধ করতে ব্যবহৃত হচ্ছে। সরকার হয়তো এই চাপের সামনে একদিন এই আইনকে বাতিল করতে বাধ্য হবে। কিন্তু অন্য কোনও আইনি সংস্থান করে মুক্তচিন্তা ও মুক্তচিন্তকদের কন্ঠরোধ করার চেষ্টা হতে পারে।
5) বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার জনজীবনে কুসংস্কারকে প্রশ্রয় জোগাচ্ছে। সাধারণ মানুষও এমন অনেক কুসংস্কারে বুঁদ হয়ে আছেন। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে প্রায় ঈশ্বরের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ ভাবমূর্তি নির্মাণে বলা হচ্ছে, ‘মোদীজি ছিলেন বলেই এটা সম্ভব হল’। এই ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা ভবিষ্যতের জন্য ভয়ঙ্কর।
6) বিজেপি বিরোধী দলগুলি বিভিন্ন রাজ্যে শাসন ক্ষমতায় থাকলেও এই সিডিশন অ্যাক্ট নিয়ে তাদের খুব বেশি সরব হতে দেখা যাচ্ছে না। তারা অনেকে এই আইনের ভাল প্রয়োগ আর খারাপ প্রয়োগের মধ্যে সীমারেখা টানছেন। সাধারণ মানুষ, নাগরিক সমাজের উচিত, নাগরিক অধিকার রক্ষায় এই আইনকে বাতিল করার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা। এক্ষেত্রে শুধু রাজনৈতিক দলগুলির মুখাপেক্ষী থাকলে চলবে না।
7) সরকারের সমালোচনা মানেই রাষ্ট্রের সমালোচনা করা নয়— এই সহজ ব্যাপারটা অনেকেই বুঝতে পারেন না। শুধু শাসকদল নয়, রাস্তাঘাটের আলোচনাতেও এমন সংখ্যাগুরুবাদের প্রতিধ্বনি অনেক মানুষের কন্ঠে শোনা যায়।
রাজনৈতিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপিকে এক করে দেখার ভুলের কী মাসুল দেবে বামেরা?
বাকি সব কিছু খুললে স্কুলের ক্ষেত্রে অসুবিধা কী? ছোটদের শিক্ষা কি আমাদের ভাবনায় কোথাও নেই?
আপনাদের যা কিছু প্রশ্ন, সরাসরি উত্তর, যা কিছু মতামত খোলাখুলি আলোচনা, সঙ্গে সুদীপ্ত সেনগুপ্ত।
পানশালা, সিনেমা হল খুলছে, বন্ধ শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সব কিছু খুললে স্কুলের ক্ষেত্রে অসুবিধা কী?
দেড়শো বছরের প্রাচীন দমনমূলক সিডিশন আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন তুলে আইনের প্রয়োগ বন্ধ রাখতে বলল।
পড়াশোনা গোল্লায় যাক, শিক্ষক নিয়োগের ব্যবসা চলবে - এটাই বাংলার ভবিতব্য?