×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • আকাশছোঁয়া বাজারদর, ব্যাগ ভরাতে নাভিশ্বাস মধ্যবিত্তের

    সুদীপ্ত চ্যাটার্জি | 26-11-2021

    প্রতীকী ছবি।

    দোরগোড়ায় শীত। এই মরসুমে বাঙালির পাত সেজে ওঠে তাজা তরিতরকারিতে। তবে এ বারের শীতে আমবাঙালির ঘরের এই চিত্রটা বোধহয় ব্রাত্যই থাকতে চলেছে। কারণ, বাজারে গিয়ে শীতের সব্জিতে হাত দিলেই রীতিমতো ছ্যাঁকা খেতে হচ্ছে বাড়ির কর্তা-গিন্নিদের! বিট, গাজর, শিম থেকে ফুলকপি, বাঁধাকপির মতো শীতকালীন সব্জির বাজারদর রীতিমতো লাগাম ছাড়িয়েছে। অবশ্য কেবল শীতকালীন নয়, বরং সব সব্জিরই দাম আকাশছোঁয়া। আর তাই হেঁশেলে তাজা সব্জির জোগান দিতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে মধ্যবিত্ত বাঙালির।

     

     

    শীতের দুপুরে ধোঁয়া ওঠা গরম ভাত আর সঙ্গে দই দিয়ে ফুলকপির ডালনা বা রাতে গরম গরম রুটির সঙ্গে উইন্টার স্পেশাল বিট-গাজর আর কড়াইশুটির মাখা মাখা তরকারি, এ সব লোভনীয় খাবারের স্বাদ আস্বাদনের আশা অধরাই থেকে যাচ্ছে মধ্যবিত্তের। কারণ, বাজারে ফুলকপি প্রতি পিস 35-40 টাকা, জ্যোতি আলু 18-20 টাকা বা চন্দ্রমুখী আলু 26-28 টাকা প্রতি কিলোতে বিকোচ্ছে। অন্য দিকে, গাজর কিলোপ্রতি 80 টাকা, বিনস ও ক্যাপসিকাম 150 টাকা। বেগুন ও টম্যাটোর দাম ছুঁয়েছে 100 টাকা কিলো। যে কাঁচালঙ্কা বা আদাবাটা ছাড়া বাঙালির রান্না মুখে রোচে না সেই আদা লঙ্কা বিকোচ্ছে 100-120 টাকা কিলোতে।

     

     

    এই অগ্নিমূল্য বাজারে থলি ভরাতে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে শহরবাসীর। তাই বাজারে ঢুকলেও শীতের সব্জি না কিনেই শুকনো মুখেই বাড়ির পথ ধরতে হচ্ছে অধিকাংশ মানুষকে। চিত্রটা কিন্তু মানিকতলা থেকে লেক মার্কেট, সর্বত্র একই রকম। কিন্তু কেন এমনটা হচ্ছে? কারণ হিসাবে উত্তরপাড়া বাজারের এক সব্জিবিক্রেতা জানালেন, শীত পড়লেও শীতের সব্জির জোগান কম, তার উপর গত কয়েক মাসে অসময়ের বৃষ্টি সমস্ত ফলন নষ্ট করে দিয়েছে। যার জেরে সব্জির দাম চড়চড় করে বেড়েই চলেছে। অন্য এক বিক্রেতার মতে, ‘‘আমরা পাইকারি বাজার থেকে যেমন দামে পাব, তেমন দামেই তো খদ্দেরকে বেচব! বিক্রিবাট্টা হচ্ছে না, এতে আমাদেরও লস হচ্ছে। তবে কি আমরা লাভ ছাড়াই বেচব?’’

     

    আরও পড়ুন: এক আঁটি শাক আর 14 জনের পরিবারের দুবেলা খাওয়া

     

    মফস্বল এলাকার বালি বাজারে গিয়ে দেখা গেল এক প্রৌঢ় হাপুস নয়নে তাকিয়ে রয়েছেন তাজা সব্জির দিকে। কিছু ক্ষণ ভেবে জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘কিরে, কিছু কম হবে না?’’ সব্জিবিক্রেতা ব্যাজার মুখে সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘‘না!’’ নিমাইবাবু ফাঁকা ব্যাগ হাতেই বেরিয়ে এলেন বাজার থেকে। বালির বাসিন্দা নিমাই দত্ত পেশায় গৃহশিক্ষক। তাঁর কথায়: ‘‘এমনিতেই করোনার জেরে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমেছে, তার সঙ্গে রোজগারও। সংসার চালাতে নাজেহাল হতে হচ্ছে, দু-বেলা দু’মুঠো জোটানোই দায়, তার উপর এত্ত দাম যে হাত দেওয়া যাচ্ছে না! আমাদের মতো অসংগঠিত ক্ষেত্রের মানুষদের কথা কে ভাববে!’’

     

     

    আবার বালি হপ্তাবাজারের এক বিক্রেতার দাবি, পেট্রোপণ্যের দাম যত দিন না কমবে, শুধু সব্জি নয়, কোনও কিছুরই দাম কমবে না। তিনি অবশ্য সব্জির এই অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পিছনে ফড়েদের দাপটকেও দায়ী করেছেন। তর্ক-বিতর্ক চলতেই থাকবে, কিন্তু সাধারণ মানুষের হাঁড়ির হালহকিকতের খবর কে রাখে?

     


    সুদীপ্ত চ্যাটার্জি - এর অন্যান্য লেখা


    শীত দরজায় কড়া নাড়লেও খাদ্যরসিক বাঙালির পাতে শীতের সব্জির দেখা নেই।

    ভারতীয় রাজনীতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে পরিবারতন্ত্র, তবে এর সমালোচনা বিজেপির মুখে মানায় না

    শবরপাড়ার মেয়েরা লড়াই করতে জানে। ওদের কোনও ইনাম লাগবে না, লাগবে শুধু অধিকারটুকু

    আইন যা-ই বলুক, স্ত্রীর অসম্মতিতে বলপূর্বক যৌনসঙ্গম আদপে কিন্তু ধর্ষণই!

    শেক্সপিয়রের ‘ম্যাকবেথ’ অবলম্বনে নির্মিত সিরিজ ‘মন্দার’ এক ক্ষমতার লড়াই ও করুণ পরিণতির গল্প বলে।

    ক্রিপ্টোকারেন্সি ও ভারতে তার ভবিষ্যৎ

    আকাশছোঁয়া বাজারদর, ব্যাগ ভরাতে নাভিশ্বাস মধ্যবিত্তের-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested