বাঙালি নাকি অলস এবং কর্মবিমুখ, তাই তাদের দ্বারা ব্যবসা হয় না। এই ‘মিথ’কে ভুল প্রমাণ করেছে তুর্ণী ধর এবং তাঁদের প্রতিষ্ঠান ‘ডিপেনডেবলজ’-এর কাজ। আর ব্যবসায়িক উদ্যোগকে নিছক লাভ-ক্ষতির অঙ্কেই মাপেননি তাঁরা, বৃহত্তর জনসমাজের স্বার্থও যুক্ত করেছেন তার সঙ্গে।
তুর্ণীর ‘ডিপেনডেবজলজ’ বেশ কয়েক বছর ধরে কলকাতার সেই সমস্ত প্রবীণ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দেখভাল করে, যাঁদের সন্তানরা কর্মসূত্রে প্রবাসে থাকেন। তুর্ণীর কথায়, ‘মুম্বাইয়ের চাকরি ছেড়ে যখন কলকাতায় এলাম, চারদিকে তাকিয়ে দেখলাম আমাদের শহরটা একটা ছোটখাটো বৃদ্ধাশ্রমে পরিণত হয়েছে। শহরের অধিকাংশ বয়স্ক মানুষ রীতিমতো বিনা চিকিৎসায়, অনাদরে দিন কাটাচ্ছেন, শুধু কেউ তাঁদের দেখভাল করার নেই বলে।' তাঁর সংযোজন, ‘এমন নয় যে এঁদের কারও আর্থিক সঙ্গতি নেই। কিন্তু আর্থিক সঙ্গতিটাই তো শেষ কথা নয়। তখনই মাথায় আসে এঁদের জন্য কিছু করা প্রয়োজন।'
যেমন ভাবা, তেমনি কাজ। লকডাউনের আগেই ‘ডিপেনডেবলজ’-এর সলতে পাকানো শুরু হয়ে গেলেও, করোনা এবং লকডাউন পরিস্থিতি এই উদ্যোগকে আরও ত্বরান্বিত করে। কলকাতায় বেসরকারি সংস্থার উঁচুপদের চাকরি ছেড়ে তুর্ণী এবং তাঁর দুই বন্ধু স্বর্ণাদিত্য উপল দাস এবং জয়ী বারিকের সঙ্গে ‘ডিপেনডেবলজ’-এর সূচনা করেন। তুর্ণীদের সংস্থা বয়স্কদের বাড়ি বাড়ি খাবার পাঠানো থেকে, ব্যাঙ্কের কাজ করা— যাবতীয় দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে। এক্ষেত্রে অবশ্য কাজের নিরিখে তাঁরা চাররকম প্যাকেজ এনেছেন বলে জানালেন তুর্ণী। তাঁর কথায়, প্রথম যখন শুরু করেছিলাম তখন এটাকে পেশা হিসাবে ভাবিনি। তারপর ধীরে ধীরে আমাদের অভিজ্ঞতা, পেশাদারিত্ব দুই’ই বেড়েছে। অর্থের অভাবে নয়, পরিচর্যা ও দেখভাল করার লোকের অভাবে শহরের যে প্রবীণ-প্রবীণারা অসহায়, তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘ডিপেনডেবলজ’।
এত দায়িত্বের কাজ সামলাতে গিয়ে কখনও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়নি? তুর্ণী বললেন, ‘তা তো পড়তেই হয়েছে। তবে এই চ্যালেঞ্জগুলোই আমাদের আরও অভিজ্ঞ করে তুলেছে।' কোভিড পরিস্থিতিতে এমন কাজ চালানো কতটা মুশকিলের জানতে চাইলে তুর্ণী বললেন, ‘কোভিড রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে বা ছাড়িয়ে আনতেও অনেক সময় আমদেরই যেতে হচ্ছে। তাতে যে একটা ভয় কাজ করছে না, এমনটা বলব না। আমাদের সঙ্গে যুক্ত বহু পরিচারিকা কোভিড রোগীর পরিচর্যা করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কিন্তু আমরা তো শুধু পেশাদার নই, দায়বদ্ধও বটে।'
তাঁর এই ছকভাঙা উদ্যোগে পাশে দাঁড়ানোর জন্য তুর্ণী কৃতজ্ঞ তাঁর বাবা-মা, দুই বন্ধু স্বর্ণাদিত্য, জয়ী এবং পুরনো কর্মস্থলের ম্যানেজমেন্টের কাছে। কোভিড পরিস্থিতিতে অসংখ্য অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধার সহায় তুর্ণী অজস্র ফোন কল ধরতে ধরতে জানালেন, ‘পরে আবার কথা হবে। একজন বয়স্ককে এমারজেন্সিতে ভর্তি করতে হবে এখনই।'
ক্রমশ ছোট হতে থাকা পৃথিবীটা যেন হঠাৎই আবার বিশাল বড় হয়ে অষ্টাদশ শতাব্দীতে ফিরে যাচ্ছে
পাজি, কাঠিবাজ মিডল ক্লাসকে জব্দ করা মার্ক্সের কম্মো নয়, এই কাজটাও একমাত্র মোদীজিই পারেন!
প্রকারান্তরে, তামিলনাড়ু বা কর্নাটকের মতো রাজ্যের দুই-ভাষা নীতিতেই সিলমোহর দিল কেন্দ্র।
দেশপ্রেমের রেসিপিতে একটু মুক্তিযুদ্ধের মশলা মেশালে ঝাঁঝ বাড়ে।
জন্মিলে মরিতে হইবে, ক্যাপিটালিজম সঙ্গ দেবে!
অমুকের ‘দ্যাশ’, তমুকের ‘ভিটে’ নিয়ে এই ‘দেশ’, তাকে অস্বীকার করাই শাসকের মূর্খামি।