পদার্থবিজ্ঞানে এবারের অন্যতম নোবেল বিজয়ী রজার পেনরোজ। কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে তাঁর কাজের তত্ত্বগত ভিত্তি বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী অমলকুমার রায়চৌধুরীর ‘রায়চৌধুরী ইকুয়েশন’। www.4thpillars.com 7 অক্টোবর (বুধবার) এই নিয়ে এক আলোচনার আয়োজন করেছিল। সাংবাদিক সুদীপ্ত সেনগুপ্তের সঙ্গে এই আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন অধ্যাপক রায়চৌধুরীর দুই কৃতী ছাত্র এবং আজকের দুই বিশিষ্ট পদার্থবিজ্ঞানী অমিতাভ রায়চৌধুরী এবং নারায়ণ ব্যানার্জি।
1) একটা তারার শক্তির উৎস তার মধ্যে নিউক্লিয়ার রিয়্যাকশন। কিন্তু সেই জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে এক অদ্ভুত জিনিস হয়। এই তারার মধ্যে যে ম্যাটার ডিস্ট্রিবিউশন আছে, সেটা নিজেদের মধ্যে আকর্ষণের কারণে সংকুচিত হতে থাকে। তারাটা যখন বেঁচে থাকে তখন যে নিউক্লিয়ার রিয়্যাকশন গুলো হয় তার জন্য একটা প্রেশার থাকে, যার ফলে তখন সংকোচন হয় না। তাই যখন ফুয়েল ফুরিয়ে যায় সেটা নষ্ট হতে থাকে। এই কোলাপ্সকে বাধা দেওয়ার কেউ না থাকলে এটা একটা বিন্দুতে চলে আসে, আর তার ভর আর আয়তনের অনুপাত তখন অসীম হয়ে যায়। বক্রতাও অসীম হয়ে যায়। সিঙ্গুলারিটিটা বাইরে থেকে দেখতে পাওয়া যায়না। তার বাইরে "ইভেন্ট হরাইজন' বলে একটা বস্তু হয়, যার বাইরে থেকে ভিতরে যাওয়া যায়, কিন্তু ভিতর থেকে আর বাইরে আসা সম্ভব হয় না।
2) গ্র্যাভিটি বা মাধ্যাকর্ষণ একটা জ্যামিতিক তত্ত্ব। ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বরের দু'টি গুরুত্বপূর্ণ ভাগ, একটা সিঙ্গুলিরিটি আর একটা ইভেন্ট হরাইজন। এই সিঙ্গুলারিটির তত্ত্বই অমল রায়চৌধুরীর।
3) রায়চৌধুরী ইকুয়েশন যখন আবিষ্কার করেছিলেন, তখন তিনি জেনারেল রিলেটিভিটির থিওরির প্রেক্ষাপটে আবিষ্কার করেন। কিন্তু পরে বোঝা যায় যে ইকুয়েশনটা রিলেটিভিটির বাইরেও পদার্থবিদ্যার অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। জেনারেল রিলেটিভিটি হল এই জ্যামিতিক ইকুয়েশনের একটি বিশেষ প্রয়োগ ক্ষেত্র।
4) সিঙ্গুলারিটি ফ্রি ইকুয়েশন পাওয়া যায় কিনা আইনস্টাইনের ইকুয়েশন থেকে তা খুঁজে বের করাই লক্ষ্য ছিল অমলকুমার রায়চৌধুরীর। এছাড়া জিওডেসিক মোশনে তাঁর দারুণ আগ্রহ ছিল।
5) অমল রায়চৌধুরীর ইকুয়েশনই হল মূল স্তম্ভ, যার উপর সিঙ্গুলারিটির তত্ত্ব দাঁড়িয়ে আছে। ব্ল্যাক হোল তৈরির ইকুয়েশন আর সিঙ্গুলারিটির ইকুয়েশন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। কিন্তু ইভেন্ট হরাইজনের সঙ্গে রায়চৌধুরীর ইকুয়েশনের কোনও যোগ নেই।
6) পশ্চিমবঙ্গের অনেক ছেলেমেয়ে গবেষণার দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে, এটা একদিকে ভাল। ভারতের অন্যান্য জায়গায় এটা অতটা নেই। পদার্থবিদ্যার অনেক ভাল ছাত্রই বাংলার। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কাজের সংখ্যা যে খুব বেশি তা নয়। তবে বিজ্ঞানের গড় মান পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে অনেকটাই উন্নত হয়েছে।
7) একটা সময় ভারতে বিজ্ঞানের এক্সপেরিমেন্টাল কাজ করাই হত না। কারণ এর জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু 90-এর দশক থেকে সরকার অর্থ বরাদ্দ করতে শুরু করে, এবং তারপর থেকে আমাদের এখানেও ভাল পরীক্ষামূলক কাজ শুরু হয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে আবার সরকার থেকে বরাদ্দ করা অর্থ কমে যাচ্ছে।
8) মৌলিক বিজ্ঞানে দূরস্থান, ফলিত বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও বেসরকারি সাহায্য বিশেষ মিলছে না। অথচ পাশ্চাত্য দেশে বহু বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে বেসরকারি অনুদানে, বা চ্যারিটিতে। কিছু ব্যতিক্রম বাদে আমাদের দেশে সেই ট্র্যাডিশন গড়ে ওঠেনি।
9) এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরাও নিজেদের দায় এড়াতে পারেন না। নিজেদের কাজ বৃহত্তর সমাজের কাছে পৌঁছে দিতে আউটরিচ প্রোগ্রাম দরকার। আগে এ কাজটা একেবারেই হত না। এখন অবশ্য এটার উপর জোর পড়েছে। আইসার (IISER) কলকাতায় শুধু এর জন্যই একজন ডিন আছেন।
10) বিজ্ঞানীরা তাঁদের নিজেদের কাজ সহজ করে সাধারণ মানুষের কী উপকারে লাগবে ইত্যাদি বোঝাতে এগিয়ে আসেননি। মিডিয়াও বিজ্ঞানকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়নি। এখন অবশ্য কিছু কিছু সংশোধন হয়েছে এই ত্রুটির।
ভোটের ফল থেকেই স্পষ্ট, মানুষ বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আলোচনায় শিক্ষাবিদ পার্থ প্রতিম রায় এবং JBNSTS-এর অধিকর্ত্রী, অধ্যাপিকা মৈত্রী
সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই শাস্তি পেতে হচ্ছে। বিশেষ উদ্দেশ্য থেকেই ইউএপিএ আইনে বদল আনা হয়েছে।
শাসকদল তো বটেই, বিরোধী রাজনীতিকরাও চান না এমন কেউ সংসদে যান, যিনি সরকারপক্ষকে প্রশ্ন করতে পারবেন।
গোটা দেশের কৌতূহল, বিতর্কিত দু'টি টুইটের "মালিক' প্রশান্তকে সুপ্রিম কোর্ট কী শাস্তি দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে কেন্দ্রের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে ব্যর্থ নরেন্দ্র মোদীর সরকার।