×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন বিচার

    4thpillars ব্যুরো | 19-11-2020

    সাংবাদিক সুদীপ্ত সেনগুপ্তের সঙ্গে আলোচনায় আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ, কবি-প্রাবন্ধিক সব্যসাচী দেব এবং সাংবাদিক রজত রায়।

    ব্যক্তি স্বাধীনতার ধ্বজা উড়িয়ে জনপ্রিয় টিভি অ্যাঙ্করকে জামিন দিল সুপ্রিম কোর্ট, অথচ বছরের পর বছর জামিন পান না প্রবীণ অধ্যাপক, কবি, সমাজকর্মী লেখকরা! ন্যায়বিচার কি একেক নাগরিকের জন্য একেক রকম? এই নিয়েই www.4thpillars.com গত 19 নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) একটি আলোচনার আয়োজন করেছিল। এই আলোচনায় সাংবাদিক সুদীপ্ত সেনগুপ্তের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ, কবি-প্রাবন্ধিক সব্যসাচী দেব এবং সাংবাদিক রজত রায়।


    1) ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় অভিযুক্তকে জামিন দেওয়ার আগে প্রধানত তিনটি বিষয় দেখে নেওয়া হয়। এক, অভিযুক্তের পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা। দুই, অভিযুক্ত বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে কিনা। তিন, অভিযুক্ত তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতে পারে কিনা। অশীতিপর, অসুস্থ ভারভারা রাও-এর ক্ষেত্রে এই তিনটি সম্ভাবনার একটাও কি ফলার সম্ভাবনা আছে? তাহলে কীসের জন্য জামিন দিতে এই টালবাহানা?

    2) নিম্ন আদালতের বিচারকরা রায় দেওয়ার আগে উচ্চ আদালতের মুখাপেক্ষী থাকেন। এই প্রবণতা এতটাই বাড়ছে যে, নিম্ন আদালতের বিচারকদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাই তৈরি হচ্ছে না। তারা ওপরমহলকে তুষ্ট করতে চাইছেন।

    3) বিচারবিভাগ একটি বিশেষ মত এবং পথের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। কাশ্মীরে 370 নং ধারার অবলুপ্তির পর গোটা রাজ্যটাকে যখন কারাগারে পরিণত করা হল, তখন সাংবাদিক, সমাজকর্মীদের অনেকেই এর আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে উচ্চ আদালতের কাছে গিয়েছিলেন। তখন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, এই অভিযোগ শোনার কোনও প্রয়োজনীয়তা খুঁজে পাননি। অথচ, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে অবসর গ্রহণের আগে তিনি অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণা করলেন।

    4) অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করার দায় তো অভিযোগ যে বা যারা করছেন, তাদের। ইদানিং দেখা যাচ্ছে, অভিযুক্তকেই প্রমাণ করতে হচ্ছে যে তিনি অভিযুক্ত। বিনা বিচারে অনেককে দীর্ঘদিন কারাবন্দি রাখা হচ্ছে। পরে যখন প্রমাণ হচ্ছে, তিনি নির্দোষ, তখন তার জীবন থেকে মূল্যবান কয়েকটা বছর হারিয়ে গেছে। এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন ছাড়া আর কিছু নয়। অথচ যাদের জন্য সেই ব্যক্তির জীবনের এতগুলো বছর নষ্ট হয়ে গেল, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার মতো কোনও সহজ সংস্থান আমাদের দেশের বিচার ব্যবস্থায় নেই।

    5) সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই শাস্তি পেতে হচ্ছে। বিশেষ উদ্দেশ্য থেকেই ইউএপিএ আইনে বদল আনা হয়েছে। এখন কোনও সংস্থা কিংবা সংগঠনের পাশাপাশি ব্যক্তিকেও সন্ত্রাসবাদী বা দেশবিরোধী কার্যকলাপে অভিযুক্ত করে কারাবন্দি করা যাবে। ভারভারা রাও কিংবা বিনায়ক সেনদের অপরাধটা কী, তা কিন্তু এখনও প্রমাণ করা যায়নি।

    6) বর্তমান কলেজিয়াম ব্যবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতিদের নিয়োগ করে। এতে স্বজনপোষণ অনেক বেড়ে গেছে। রাজ্যের অনেক প্রতিভাবান আইনজীবী বিচারপতি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না, শুধুমাত্র তারা শাসক দলের সমর্থক নয় বলে।

    7) বিচারপতিরা বিশেষ কোনও পদ বা উপঢৌকনের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছেন। প্রধান বিচারপতির মতো সম্মানজনক পদে বসেও অনেকে রাজ্যসভায় সাংসদ পদ গ্রহণ করছেন। একটা ব্যবস্থায় ভাল-খারাপ উভয় প্রকার মানুষই থাকতে পারে। কিন্তু, সামগ্রিক ব্যবস্থাটা যাতে সঠিকভাবে পরিচালিত হয় সেটার দিকে নজর দেওয়া উচিত।

    8) অযোধ্যা মামলায় বিশেষ ধর্মে বিশ্বাসী মানুষদের বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে রায় দিয়ে দেওয়া হল। বিচারপতিদের বুঝতে হবে, তাদের কার্যকলাপে সাধারণ মানুষ বিচার বিভাগের ওপর আস্থা হারাচ্ছেন। সংবিধান কিন্তু মানুষের জন্য, মানুষের জন্য সংবিধান নয়। মানুষ পথে নেমে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে, সেটা যে অহিংস পথেই এগোবে, এমনটা বলা যায় না।


    4thpillars ব্যুরো - এর অন্যান্য লেখা


    5 বছরের পুরনো নারদ মামলা নিয়ে হঠাৎ সক্রিয় সিবিআই। দুর্নীতি নিয়ে এই রাজনীতির পিছনে আসল খেলাটা কী?

    সবাই জানত করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসবে এবং সেটা আরও মারাত্মক হবে। তবু কেউ সচেতন হল না।

    কবিতা তার জ্যান্ত লাশ, কার?

    আমরা 4thPillars রাজনীতি বলতে ক্ষমতা দখলের অঙ্ক কষা বুঝি না। মানুষের স্বাধীন মতামতই শেষ কথা।

    লকডাউন-এর এই নতুন অধ্যায়ে ‘অবরোধের ডায়েরি’ লিখলেন যশোধরা রায়চৌধুরী

    কলকাতার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সাংবাদিকদের চোখে কেমন লকডাউন চিত্র, আজ দেখুন পঞ্চম পর্ব।

    ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন বিচার-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested