×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • মনুর মূর্তি প্রতিষ্ঠা: বিশ একুশে মনুসংহিতা

    রঞ্জন রায় | 31-05-2021

    প্রতীকী ছবি।

    কোভিড মহামারীকে আধুনিক সভ্যতার আপদ হিসেবে দেখে অনেকেই সেই থিওরি আঁকড়ে ধরছেন, দাও ফিরে সে অরণ্যলহ এ নগর’; অথবা ‘ফিরে চল আজ আপন ঘরেএই পিছনে ফেরা মানে কতটা পিছনে? মনুস্মৃতি মেনে চলা বৈদিক হিন্দু সমাজের গুণকীর্তনও প্রায়শই শোনা যাচ্ছে। যেহেতু দেশ তথা সমাজের অতি মান্যগণ্য ব্যক্তিরাও তার সপক্ষে মুখ খুলছেন, সেহেতু আমাদের সকলেরই এখন জানা দরকার তখন ঘরে বাইরে মেয়েদের স্থান কোথায় ছিলতাদের কী চোখে দেখা হত? সমাজের বহুজন বা খেটে খাওয়া মানুষ এবং যাদের পৈতে হয় না তারাই বা কী কী অধিকার ভোগ করতেন? মনুর বিধান নিয়ে তিন কিস্তিতে এই আলোচনার প্রথম পর্বে রইল জাতের কথা।

     

     নিও-নর্মাল কেসি পাল

    ইদানিং চারদিকে শুনতে পাই টেলিভিশন, মোবাইল প্রযুক্তি, উপগ্রহের মাধ্যমে স্থান নির্ণয় (জিপিএস) এসবই নাকি ‘বেদে আছে’!সঞ্জয় ধৃতরাষ্ট্রকে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের লাইভ টেলিকাস্ট করছিলেন। গণেশের নাকে হাতির শুঁড় প্লাস্টিক সার্জারি করে লাগানো হয়েছিল। রামায়ণের পুষ্পক রথ আসলে আধুনিক বিমান ভক্তরা প্রশ্ন করে না,ইলেকট্রিসিটি ছাড়া এগুলো চলত কী করে? পুরাণের কালে রাজার প্রাসাদেও তো সর্বত্র দীপদান এবং মশালের আলো। বৌদ্ধযুগেও বাসবদত্তা সন্ন্যাসী উপগুপ্তকে দেখছে প্রদীপের আলোয়,প্রদীপ ধরিয়া হেরিল তাহার নবীন গৌরকান্তিপৌরাণিক যুগে তো সকলের যাতায়াত পশুতে টানা শকটে বা রথে। তাই দেবতারাও সব বলদবাহনময়ুরবাহনঅশ্ববাহনহস্তীবাহন এবং মকর বা সিংহবাহিনী

     

    আরও পড়ুন: নারীকে ‘রাখা হবে’ কোথায়: বিশ একুশে মনুসংহিতা (2)

     

    অবশ্য প্রমাণিত সত্যের উল্টো প্রচার নতুন কিছু নয়। সৌরজগতের কেন্দ্রে রয়েছে সূর্য নয় পৃথিবী এবং সূর্য পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে, কলকাতার দেওয়ালে এমন দেওয়াল লেখক কেসি পালকে মানুষ বলত পাগল। কিন্তু আজকাল অবস্থা বদলে গেছে। নব্য কেসি পালদের এখন বিরাট দাপট!

     

    কোন মনুর মূর্তি প্রতিষ্ঠা?

    রাজস্থানে মনু মহারাজ বা মনুস্মৃতির প্রণেতা মহর্ষি মনুর মূর্তি স্থাপন করা হবে বলে খবরইদানিং সর্দার প্যাটেলসাভারকরশ্যামাপ্রসাদনাথুরাম গডসের মূর্তি প্রতিষ্ঠা হয়ে গেছে। এবার আমাদের  প্রাচীন স্মৃতিশাস্ত্রের সবচেয়ে প্রামাণ্য গ্রন্থের রচয়িতা মনুর পালা। ভারতের রাষ্ট্রব্যবস্থার বর্তমান পরিচালকরা মনুকে যে অতীব পূজনীয় মনে করেন, তার নিশ্চিত প্রমাণ কিন্তু বাস্তবে পাওয়া যাচ্ছে। এর সামাজিক প্রতিফলন দেখছি বিশেষ করে তিনটে ব্যাপারে:

    (1) খাদ্যাখাদ্য বিচার। ডাক্তার নয়সরকার ঠিক করে দেবে আপনি কী খাবেন বা কী খাবেন না। শুধু তাই নয়ফ্রিজে গোমাংস রাখা আছে এই সন্দেহে আদালতে না গিয়েই লোককে পিটিয়ে মারা হচ্ছে

    (2) নারীর অবস্থান। নিজের ভাল-মন্দ অবলা কোমল ভারতীয় নারী বোঝে না। তার কেমন পোশাক পরা উচিতকার সঙ্গে বন্ধুত্ব বা চলাফেরা করা উচিতকাকে বিয়ে করা উচিত নয়সব ঠিক করে দেবে পুরুষের দলঅর্থাৎ রাষ্ট্র। প্রাপ্তবয়স্ক চাকুরে মেয়ে যদি অন্য ধর্মের ছেলেকে ভালবেসেস্বেচ্ছায় বিয়ে করেতাহলে তার কথায় কান না দিয়ে তার বাবা-মা বা সমাজের কোনও অতি উৎসুক যুবকের তরফে ‘জোর করে ধর্মান্তরণ করা হচ্ছে' অভিযোগ পেয়ে নতুন স্বামীকে জেলে পোরা যাবে। এটাই কয়েকটি রাজ্যে নতুন তৈরি ‘লাভ জিহাদ’ আইন দেশের সংবিধান কী বলছে তা এদের কাছে গৌণ।

    (3) দলিতদের প্রতি উচ্চ বর্ণের মনোভাব ও আচরণ। কথায় কথায় আম্বেদকরের বন্দনা করলেও আজকের শাসকরা ভুলে দেছেন যে কয়েক হাজার অনুগামীর সঙ্গে নাগপুরের দীক্ষাভূমিতে তিনি হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে বৌদ্ধ হয়েছিলেন হিন্দু সমাজে দলিতদের প্রতি হয়ে চলা ক্রুরতার প্রতিবাদেসম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের হাথরসে দলিত মেয়েটিকে দল বেঁধে ধর্ষণ করে হত্যা করার বীভৎস ঘটনাটিকে মেয়েটির মৃত্যুপূর্ব জবানবন্দি সত্ত্বেও যেভাবে সরকারি পুলিশডাক্তার ও কিছু মিডিয়া মিলে মিথ্যেএবং নিহতের পরিবারের ‘অনার কিলিং’ বলে দাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলতা আমাদের নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে

    এই স্বর ক্রমশই নানা দিক থেকে শোনা যাচ্ছে যে মনুসংহিতায় নাকি আমাদের প্রাচীন আচার-বিচারউচিত-অনুচিত মায় সিভিল ও ক্রিমিনাল কোড সবই লিপিবদ্ধ রয়েছে। এমনকি কলোনিয়াল যুগে ব্রিটিশরা এ নিয়ে বেশি খোঁচাখুচি করেনি। তাই হিন্দু কোড বিল রচিত হয়েছিল স্মৃতিশাস্ত্র বা সংহিতা বিশেষ করে মনুস্মৃতি মেনে

    কেন ? কারণ পরাশরযাজ্ঞবল্ক্য ইত্যাদি অনেকগুলো সংহিতা থাকলেও মতভেদ হলে মনুর বিধানই বেদ-অনুসারী এবং মান্য বলে ধরা হয়

    মন্বর্থ বিপরীতা যা সা স্মৃতির্ন প্রশসস্যতে যার ব্যাখ্যা মনুর সঙ্গে মেলে নাতা স্মৃতিশাস্ত্রের মর্যাদা পাবে না

    আবার ‘যদি হাস্তি তদন্যত্র যন্নেহাস্তি ন তৎক্বচিৎ অর্থাৎ যা এই বইয়ে আছে তা অন্য স্মৃতিগ্রন্থেও আছেআর যা এতে নেইবুঝতে হবে তা কোথাও নেই

    এহেন মনুস্মৃতি যদি দেশের শাসক বর্গের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান পথ প্রদর্শক বলে গণ্য হয়, তবে বাস্তবে তাতে কী বিধান দেওয়া আছে তা জানা আমাদের সকলেরই কর্তব্য এবং দায়িত্ব।

     

    মনুসংহিতা কী বলছে?

    বারোটি অধ্যায়ে বিভক্ত মনুসংহিতার প্রথম অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে সৃষ্টিতত্ত্ব। আরও বলা হয়েছে যে ব্রহ্মা এই শাস্ত্র মনুকে শিখিয়েছিলেন। (শ্লোক 1/58) মনু দশজন প্রজাপতি মহর্ষি মরীচিঅত্রিবশিষ্ঠনারদভৃগু প্রমুখকে শিখিয়েছিলেন। এখন ভৃগু উপস্থিত জিজ্ঞাসু মহর্ষিদের শোনাচ্ছেন। (1/59)

    এতে কী কী আছে?

    প্রায় চল্লিশটির বেশি বিষয়ে এতে আলোচনা আছে। কিছু উল্লেখ করছি: পৃথিবীর উৎপত্তিসংস্কারের নিয়মস্ত্রীসংভোগবিবাহের প্রকারমহাযজ্ঞবিধিশ্রাদ্ধবিধিজীবিকাখাদ্যাখাদ্যসাক্ষীকে প্রশ্ন করার নিয়মস্ত্রীপুরুষের পারস্পরিক ধর্মমহাপাতকউপপাতকপ্রায়শ্চিত্তদণ্ডবিধিসম্পত্তির নিয়মবর্ণসংকরবিভিন্ন বর্ণের আপদ্ধর্মদেশধর্মজাতিধর্ম ইত্যাদি। (1/118)

    এই তালিকাটি দেখুন:

    অধ্যায় ক্রমাঙ্ক          বিষয়

     1                 সৃষ্টি থেকে প্রলয়

     2                 ভূগোল– আর্যাবর্তইত্যাদিব্রহ্মচারীর গুরুকুলেপালনীয় বিধি

     3                 গার্হস্থ্য আশ্রমআট প্রকার বিবাহকন্যার লক্ষণশ্রাদ্ধের নিয়ম

     4                 গৃহস্থের আচারসংহিতা 

     5                 খাদ্যাখাদ্য বিচারবেদবিহিত হিংসাকে অহিংসাকে মানা

     6                 বানপ্রস্থের আচার আচরণ

     7                 রাজার আচরণকরব্যবস্থাসাম-দান-ভেদ ও দণ্ডের প্রয়োগ  

     8                 দন্ড বিধি (পেনাল এবং ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোড)

     9                 স্ত্রী-পুরুষ সম্পর্কউত্তরাধিকার, (সিভিল ও সিভিল প্রসিডিওর কোড)  

    10                বর্ণাশ্রম ধর্মতাদের আচার-আচরণ বিধি

    11                নিয়মের উল্লঙ্ঘন করলে প্রায়শ্চিত্ত ও শাস্তি

    12                শরীর উৎপত্তিস্বর্গ ও নরক গমনব্রহ্মবেত্তার লক্ষণ      

     

    এবার তিনটে কিস্তিতে মনুসংহিতা অনুযায়ী সমাজে শূদ্রের স্থাননারীর স্থান ও খাদ্যাখাদ্য বিচার নিয়ে কথা বলব। আমি চেষ্টা করব এই স্বল্প পরিসরে মনুসংহিতার স্বরূপের বর্ণনা করে তিনটি ভাগে খাদ্যাখাদ্যজাতিপ্রথা এবং নারীর অবস্থান নিয়ে উনি কী বলেছেন তা তুলে ধরতে। জাতিপ্রথা নিয়ে আগে কথা বলা উচিত। কারণওটাই আমাদের সমাজের মৌলিক কাঠামো। খাদ্যাখাদ্য বা নারীর অবস্থান নির্ধারিত হয়েছে ওই কাঠামোকে মেনে।    

     

    মনুসংহিতা অনুসারে সমাজে দলিতদের স্থান

    মনুসংহিতা কখনওই শূদ্রদের মানুষের মর্যাদা দেয়নি। চারবর্ণের উৎপত্তি দেখুন

    লোকবৃদ্ধির জন্য (স্রষ্টা) মুখ থেকে ব্রাহ্মণবাহু থেকে ক্ষত্রিয়উরু থেকে বৈশ্য এবং চরণ থেকে শূদ্র সৃষ্টি করলেন।“ (1/31)

    মনু বলছেন- ব্রাহ্মণক্ষত্রিয় ও বৈশ্য— এই তিন বর্ণ হল দ্বিজকারণ এদের পৈতে উপবীত হয়ে দ্বিতীয় জন্ম হয়। চতুর্থ বর্ণ শূদ্রের একই জন্ম (দ্বিজত্ব নেই)কোনও পঞ্চম বর্ণ নেই (10/4) 

     ব্রাহ্মণের কাজ বিদ্যাচর্চাঅধ্যাপনাঅধ্যয়নযজন, যাজনদান ও প্রতিগ্রহ

    ক্ষত্রিয়ের লোকরক্ষাদানযজ্ঞঅধ্যয়ন ইত্যাদি

    বৈশ্যের কাজ পশুপালনকৃষিসুদে টাকা খাটানোদানযজ্ঞঅধ্যয়ন

    শূদ্রের একটি মাত্র কাজ হল বাকি তিনবর্ণের সেবা। (1/88 থেকে 91)

    আবার মুখ বা উত্তমাঙ্গ থেকে উৎপন্ন এবং বেদজ্ঞ বলে ব্রাহ্মণ শ্রেষ্ঠ। (1/93)

    সৃষ্টির মধ্যে ব্রাহ্মণ শ্রেষ্ঠ বলে 1/94 থেকে 1/103 পর্যন্ত বর্ণনা করা হয়েছে

    এবার জন্মের পর সন্তানের নামকরণ দেখুন

    ব্রাহ্মণের নাম হবে শুভসূচকক্ষত্রিয়ের বলবাচকবৈশ্যের ধনবাচকএবং শূদ্রের নাম নিন্দাবাচক হবে। এই চারবর্ণের উপনাম হবে যথাক্রমে শর্মবর্মভূতি ও দাস। (যেমন শুভশর্মাবলবর্মাবসুভূতি এবং দীনদাস প্রভৃতি)। (2/31 এবং 32) 

     

    আজীবিকা এবং দৈনন্দিন জীবনে শূদ্র দাসত্ব

    শূদ্র ব্রাহ্মণের দাসত্বের জন্যেই ব্রহ্মা কর্তৃক সৃষ্ট হয়েছে। প্রভু কর্তৃক অন্য দাসেরা মুক্ত হলেও শূদ্র দাসত্ব থেকে মুক্ত হয় না। দাসত্ব তার স্বভাবে রয়েছে (8/413, 414)

    উচ্চ তিন বর্ণের উপনয়ন হয়ে দ্বিজ বা দ্বিতীয় জন্ম হয়। শূদ্রের উপনয়নে অধিকার নেইসে বেদপাঠেরঅধিকারী নয়। দ্বিজের মতো উপবীত বা অন্যান্য চিহ্ন ধারণ করলে শূদ্রের মৃত্যুদন্ড বিধেয় (9/224)

    ব্রাহ্মণের তপস্যা হল জ্ঞানক্ষত্রিয়ের তপস্যা রক্ষা করাবৈশ্যের তপস্যা কৃষি এবং গো-পালনশূদ্রের তপস্যা দ্বিজগণের সেবা করা (11/235)

    কোনও প্রকার সংস্কারে শূদ্রকে অধিকার দেওয়া হয়নি (10/126) বর্ণত্রয়েরঅর্থাৎ ব্রাহ্মণক্ষত্রিয় ও বৈশ্যের সেবাই শূদ্রের একমাত্র বৃত্তি। প্রভুর ফেলে দেওয়া ছেঁড়া কাপড়ছাতাখড়ম ও তোষক প্রভৃতি শূদ্র ব্যবহার করবে। প্রভুর খাওয়া হয়ে গেলে পড়ে থাকা এঁটো খাবার তার ভক্ষ্য বা খাদ্য। (10/123,125)

    যজ্ঞে পাওয়া জিনিসপত্র ব্রাহ্মণ কখনও শূদ্রকে দেবেন না (4/80)

    শূদ্রের নিষিদ্ধদ্রব্য খাওয়ায় পাপ নেইসে উপনয়নাদি সংস্কারের যোগ্য নয়ধর্মে তার অধিকার নেই (10/126)

    দাসবৃত্তি থেকে শূদ্রের কোনও প্রকার মুক্তি নেই। “ন স্বামিনানি সৃষ্টো অপি শূদ্রোদাসাদ বিমুচ্যতে” (মেধাতিথির ভাষ্য)

     

    মনু বলছেন যেশূদ্র সক্ষম হলেও ধনসঞ্চয় করবে না। কারণ শূদ্র ধনলাভ করলে গর্ববশে ব্রাহ্মণকে পীড়া দিতে পারে (10/129) ব্রাহ্মণ কখনও শূদ্ররাজার রাজ্যে বাস করবেন না (4/61)

    যে পথ দিয়ে উচ্চবর্ণের লোকেরা যাতায়াত করেনসেই পথে শূদ্রের মৃতদেহ বহন করা চলবে না (5/92)

    বিবাহ সম্বন্ধে মনুর বক্তব্য নিজের নিজের জাতে বিয়ে করাই ভালনইলে সন্তান বর্ণসংকর (বাস্টার্ড) হয়। তবে অনুলোম বিবাহঅর্থাৎ যদি পিতা উচ্চবর্ণেরমাতা নিম্নবর্ণের হয় তাহলে সিদ্ধ। তাতে সন্তানের জাত মায়ের থেকে উচ্চ কিন্তু পিতার থেকে নিম্ন হবে। সে পিতার ভাল গুণ পাবে। কিন্তু প্রতিলোম বিবাহ, যেখানে মাতা উচ্চবর্ণেরপিতা নিম্নবর্ণের, তা অসিদ্ধ। এদের সন্তানের স্থান পিতার থেকে নিচেএরা পিতার নীচ গুণ পাবে। যেমন শূদ্র ব্রাহ্মণীকে বিয়ে করলে সন্তান ‘নরাধম চণ্ডাল’ হবে (10/16)

    শূদ্রদেরই মনু আসল বর্ণসংকর মনে করতেন এবং বলতেন এটা বাড়লে রাজ্য ও সমাজ রসাতলে যাবে। ব্রাহ্মণ থেকে শূদ্রনারীর গর্ভে জাত সন্তান ‘আর্য’ হয়কিন্তু শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণীতে উৎপন্ন সন্তান ‘নিকৃষ্ট’ হয় (10/67)

    সুলেখক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর আত্মজীবনীমূলক ‘ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন’ বইটি পাঠককুলে সমাদৃত। কিন্তু চন্ডালদের প্রতি অমানবিক ব্যবহার মনুর বিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণদেখুন মনু কী বলছেন:

    চন্ডালদের আশ্রয় গ্রামের বাইরে। এদের ধন বলতে কুকুর ও গাধা। এদের জলপাত্র দিতে নেই। এদের খাবার দিতে হবে চাকরের হাত দিয়ে ভাঙা বাসনে। এরা পরবে শ্মশানের মড়ার কাপড়লোহার গয়নাবইবে অনাথ শবকিন্তু রাতে গ্রাম-নগরে ঘুরে বেড়ানো মানা। রাজাদেশে দণ্ডিত ব্যক্তিদের বধ করা এদের কাজ, মানে আজকালকার জেলের ফাঁসুড়ে (10/51–56)

    পৈতৃক সম্পত্তির অধিকার সম্বন্ধে মনু বলছেন- দ্বিজ তিনবর্ণের পুরুষ চারজাতের নারীকেই বিয়ে করতে পারেন। উত্তরাধিকারে সমস্ত সম্পত্তির দশভাগ করে ব্রাহ্মণীর পুত্র চারভাগক্ষত্রিয়ের পুত্র তিনবৈশ্যের পুত্র দুই এবং শূদ্রের পুত্র একভাগ পাবে। যদি শূদ্র ছাড়া অন্য স্ত্রীদের একটিও সন্তান না থাকেতবুও সেই সন্তান দশভাগের একভাগই পাবেবেশি নয় (9/153, 154) উচ্চ তিন দ্বিজ জাতির পিতার শূদ্র স্ত্রীর পুত্রের সম্পত্তির অধিকার নেইপিতা নিজের ইচ্ছেয় যা দেবে তাই (9/155) অর্থাৎ ওই দশভাগের একভাগও আসলে শূদ্র-স্ত্রীর সন্তানের অধিকার নয়লোকব্যবহার এবং সর্বোচ্চ সীমা মাত্র!

     

    আরও পড়ুন: শববাহিনী নদীবক্ষে গুরুদেব ও মহাত্মা

     

    জাতিভেদে অপরাধের শাস্তি

    ইচ্ছুক বা অনিচ্ছুক ব্রাহ্মণ নারীর সঙ্গে অবৈধ যৌন সংসর্গের অপরাধে মনু শূদ্রের মৃত্যুদণ্ডের বিধান দিয়েছেন। কিন্তু ব্রাহ্মণের ‘অরক্ষিত’ ভার্যার সঙ্গে সহবাসে ‘লিঙ্গচ্ছেদ’ বিধান (8/374)

    কিন্তু শূদ্রনারীর সঙ্গে অনুরূপ সংযোগের অপরাধে ব্রাহ্মণকে কিছু জরিমানা দিলেই চলবে (8/385)

    যে অপরাধে অন্য বর্ণের প্রাণদণ্ড বিধেয়সেখানে ব্রাহ্মণের মাথা মুড়িয়ে দিলেই হবে (8/379)

    ব্রাহ্মণের নিন্দা করলে শূদ্রের জিহ্বা ছেদন বিধেয় (8/270); কিন্তু শূদ্রের প্রতি ব্রাহ্মণ অনুরূপ ব্যবহার করলে সামান্য জরিমানা (8/268)

    ব্রাহ্মণকে চোর বলে গাল দিলে ক্ষত্রিয়ের সামান্য অর্থদণ্ডবৈশ্যের দেড়শ’ বা দুশ পণ অর্থদণ্ডকিন্তু শূদ্রকে বধ করা হবে (8/267)

    শূদ্র যদি ব্রাহ্মণের গায়ে হাত তোলে তাহলে তার হাত কেটে ফেলা হবেপদাঘাত করলে পা (8/280) ব্রাহ্মণের সঙ্গে সমান আসনে বসলে তার কোমরে গরম লোহার ছ্যাঁকা দিয়ে নির্বাসিত করা হবেঅথবা তার নিতম্ব এমন ভাবে কাটা হবে যেন তার মৃত্যু না হয় (8/281) ব্রাহ্মণের গায়ে থুতু দিলে শূদ্রের ঠোঁট কেটে ফেলা হবে। গায়ে মলমূত্র ফেললে তার লিঙ্গ কাটা হবে এবং বাতকর্ম করলে তার গুহ্যদ্বার চিরে দেওয়া হবে (8/262)

    শূদ্র তিন দ্বিজজাতিকে জাত তুলে গাল দিলে শাস্তি হবে তার মুখে দশ- আঙুল মাপের জ্বলন্ত লোহার শলাকা ঢুকিয়ে দেওয়া (8/271)

    আর শূদ্র যদি ব্রাহ্মণকে জ্ঞান বা ধর্মোপদেশ দেয় তাহলে রাজার নির্দেশে তার মুখে ও কানে গরম তেল ঢালা হবে (8/272)

    ব্রাহ্মণ কর্তৃক শূদ্রহত্যা ‘উপপাতক’ মাত্র (11/66), অর্থাৎ সামান্য পাপ যা গোসাপপেঁচাবেঁজিব্যাঙবিড়ালকুকুর বা কাক বধের তুল্য (11/131) কিন্তু শূদ্র ব্রহ্মহত্যা করলে মৃত্যু বিধেয়

    ব্রাহ্মণের ‘রক্ষিতা স্ত্রী’-র সঙ্গে সঙ্গমে অন্য বর্ণের শুধু অর্থদন্ড হবেকিন্তু  শূদ্র এই অপরাধ করলে তার সর্বস্বহরণ করে মৃত্যুদন্ড বিধেয়। যদি ব্রাহ্মণ ভার্যা ‘অরক্ষিতা’ হনতাহলে সেই নারী সঙ্গমকারী শূদ্রের খালি লিঙ্গচ্ছেদ হবে (8/374)

     

     বিচারালয়ে শপথ নেওয়ার সময় শূদ্রকে বলতে হবে যে মিথ্যা বললে সে সকল পাপের ভাগী হবে। এটা অন্য তিন বর্ণের প্রতি প্রযোজ্য নয় (8/113) শূদ্রকে আদালতে স্ত্রী এবং সন্তানের মাথায় হাত রেখে দিব্যি গালতে হবে। এছাড়াও আছে জ্বলন্ত কয়লার উপর হাঁটানো বা জলে ডুবিয়ে রাখা। এ দুটো থেকেও যদি না পুড়ে এবং না ডুবে ভেসে ওঠেতাহলে বুঝতে হবে যে শূদ্র সত্য কথা বলছে (8/114 এবং 115)

     

    ব্রাহ্মণের বিশিষ্ট স্থান

    মহাপাতকের ক্ষেত্রে মনু শারীরিক দণ্ডবিধানের দশটি স্থান নির্দেশ করেছেন। কিন্তু সেটা ব্রাহ্মণ ছাড়া অন্য তিন বর্ণের জন্যে প্রযোজ্য। ব্রাহ্মণ অক্ষত দেহে দেশ থেকে বেরিয়ে যেতে পারবেন। তাঁকে অর্থদণ্ড দিতে হবে না। অন্য তিনবর্ণকে দোষের হিসেবে নির্বাসিত হওয়ার আগে আর্থিক এবং শারীরিক দণ্ড ভোগ করতে হবে (8/123, 124)

    ব্রাহ্মণের মৃত্যুদণ্ড হলে শুধু মাথা মুড়িয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে। অন্য তিনবর্ণের ক্ষেত্রে শাস্তিটি প্রাণঘাতী হবে। সকল অপরাধে অপরাধী হলেও রাজা ব্রাহ্মণকে কখনও হত্যা করবেন না। তাঁকে তাঁর সমস্ত ধনসম্পদ সহ অক্ষত দেহে শুধু রাজ্য থেকে বহিষ্কৃত করবেন। পৃথিবীতে ব্রাহ্মণবধ অপেক্ষা গুরুতর অধর্ম নেই। সুতরাংরাজা তার বধ চিন্তাই করবেন না (8/379, 380, 381)

    ব্রাহ্মণ শূদ্রহত্যা করলে প্রায়শ্চিত্তস্বরূপ অন্য কোনও ব্রাহ্মণকে একটি বৃষ ও দশটি শুক্লবর্ণ গাভী দান করবেন। বেড়ালনেউলচাতক পাখিব্যাঙকুকুরগোসাপপেঁচা বা কাক মেরে শূদ্র হত্যার প্রায়শ্চিত্ত করবেন (11/130, 131)

    জাতিকর্ম কি গুণদোষের ভিত্তিতে শ্রম বিভাজননা জন্মজাত বৃত্তি?

    গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলছেন- চাতুর্বর্ণং ময়াসৃষ্টং গুণকর্মবিভাগ শঃ

    গুণ ও কর্মের হিসেবে আমি চার বর্ণ সৃষ্টি করেছি

    মনু বলছেন- নিজধর্ম বা নিজের জাতের যা জন্মসূত্রে নির্ধারিত কাজ তা ঠিকমতো করতে না পারলেও ভালকিন্তু পরের ধর্ম সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হলেও ভাল নয়অপরের ধর্মানুসারে জীবনধারণ করলে মানুষ তৎক্ষণাৎ জাতিভ্রষ্ট হয় (10/97)

    খেয়াল করুনভগবদগীতাতেও ঠিক এটাই বলা হয়েছে

    শ্রেয়ান স্বধর্মোবিগুণঃ পরধর্মাৎ স্বনুষ্ঠিতাৎ

      স্বধর্মে নিধনং শ্রেয় পরধর্মো ভয়াবহঃ।

    অর্থাৎকোনও ব্যক্তির জন্মসূত্রে প্রাপ্ত জাতিধর্ম যদি নিকৃষ্টও হয়তবু অন্য জাতির উন্নত ধর্ম পালনের চেয়ে নিজের জাতিধর্ম পালনে মৃত্যুবরণ করাই শ্রেয়

    এখানে ধর্ম মানে অবশ্যই ধর্মশাস্ত্র (মনুপরাশরগৌতম আদি স্মৃতিশাস্ত্র) অনুযায়ী নির্দিষ্ট জাতিধর্ম। তখন ভারতবর্ষে অন্য কোনও ধর্ম ছিল না

    যে অধম জাতির লোক উৎকৃষ্ট জাতির কর্মদ্বারা জীবনধারণ করেরাজা তাকে নির্ধন করে শীঘ্র নির্বাসিত করবেন (10/96) অর্থাৎশূদ্র যদি শাস্ত্র পড়ে পুরুতগিরি বা টোলে পড়ায়অথবা অস্ত্রবিদ্যা শিখে যুদ্ধ করে তাহলে রাজা তাকে দেশছাড়া করবেন

    ব্রাহ্মণের সেবাই শূদ্রের বিশিষ্ট কর্ম বলে কথিত হয়। এ ছাড়া সে যা করে তা নিষ্ফল হয় (10/123)

    এই প্রবন্ধটি লেখার সময় আমার জনৈক বন্ধু রবীন্দ্রনাথের ‘ব্রাহ্মণ’ কবিতাটির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন— ব্যতিক্রমও ছিল

    উক্ত কবিতাটির বহু পরিচিত কাহিনি অনুযায়ী মাতা ‘ভর্তৃহীনা জবালার’ গোত্রহীন পিতৃপরিচয়হীন পুত্র সত্যকাম যখন ঋষি গৌতমের কাছে অকপটে মায়ের ‘বহু-পরিচর্যার ফল’ হিসেবে নিজের জন্ম-বৃত্তান্ত বর্ণনা করেনতখন মহর্ষি গৌতম তাকে সত্যবাদিতার জন্যে ‘ব্রাহ্মণ’ বলে স্বীকার করে নেন। কারণ এমন সত্যভাষণ কেবল ব্রাহ্মণের পক্ষেই সম্ভব! এই ‘জাবাল সত্যকাম’ পরে উপনিষদের ঋষির সম্মান লাভ করেন

    কিন্তু রবীন্দ্রনাথের এই ‘প্রাচীনত্ব’ বা ‘ঐতিহ্যমুগ্ধতা’-র মধ্যে নিহিত রয়েছে একটি ‘আয়রনি

    একই কাহিনীর সম্পর্কে ব্রহ্মসূত্র কী বলছে দেখুন:

    ব্রহ্মসূত্রের প্রথম খন্ডের তৃতীয় ভাগের নবম পরিচ্ছেদের বিষয় হল শূদ্রের বেদপাঠে বা অন্য সংস্কারকর্মে অধিকার আছে কি নেইতাতে তৈত্তিরীয় উপনিষদের শ্লোক (7.1.1.6) উদ্ধৃত করে বৈদান্তিক বলছেন “শূদ্র যজ্ঞের অধিকারী নয় সূত্র 35 এ জানশ্রুতি ও রৈক্কের গল্প উল্লেখ করে বলা হচ্ছে জন্মসূত্রে যে শূদ্রসে সংস্কারের অর্থাৎ শাস্ত্র অনুযায়ী দৈনন্দিন পুজোপাঠের এবং উপনয়নের অধিকারী নয়

    এবার 37 নম্বর সূত্রের ব্যাখ্যায় ছান্দোগ্য উপনিষদের শ্লোক (4/4/5) উদ্ধৃত করে বলা হচ্ছে গৌতম জবালাপুত্র সত্যকামের ব্রাহ্মণ জন্ম সম্বন্ধে নি:সন্দিগ্ধ হয়ে তাকে শিষ্য বলে স্বীকার করে নিলেন। “কারণ কোনও অব্রাহ্মণ এমন কঠিন সত্য উচ্চারণ করতে পারে না।“ রবীন্দ্রনাথ তাই লিখলেন— “অব্রাহ্মণ নহ তুমি তাততুমি দ্বিজোত্তমতুমি সত্যকুলজাত।

    একটা কথাআজ দিল্লির উপকন্ঠে লাখো কৃষক প্রায় দুমাস ধরে হাড়কাঁপানো শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নীচে ধর্নায় বসেছেন। এই কৃষি হল বৈশ্যের কর্ম বা জাতিধর্ম। কিন্তু মনু কী বলছেন:

    কৃষিকে কেউ কেউ ভাল মনে করেন। কিন্তু ওই পেশাটির সম্বন্ধে ভদ্রজনের মুখ থেকে কোনও ভাল কথা শোনা যায় না। কারণযে কাঠের মুখে লোহা আছে তা জমিকেএবং জমিতে যে প্রাণী আছে তাদের নষ্ট করে”(10/84)

     

    শূদ্রের পরিত্রাণ কীসে?

    মনু বলছেন: বেদজ্ঞ গৃহস্থ কীর্তিমান ব্রাহ্মণদের সেবা শূদ্রের স্বর্গাদিশ্রেয় লাভ জনক ধর্ম। এমন শূদ্র পরের জন্মে ব্রাহ্মণ হয়ে জন্মাতে পারেন (9/334,335) অর্থাৎ শূদ্র ভাল কাজ করেও সোজা স্বর্গে যেতে পারবে না। তাকে আগে এই জন্মে পন্ডিত ও গুণী ব্রাহ্মণের সেবা করে পরের জন্মে ব্রাহ্মণ হয়ে জন্মাতে হবে- তবে না

    বাদ সেধেছেন আর এক ব্রাহ্মণ রবীন্দ্রনাথ। তাঁর ‘দুরাশা’ গল্পের নায়িকা এক মুসলমান নবাবপুত্রী। সে ব্রাহ্মণ হওয়ার চেষ্টায় সারাজীবন শাস্ত্র অধ্যয়নের পর জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এই উপলব্ধিতে পৌঁছয় যে ‘ব্রাহ্মণত্ব’ আসলে একটি অভ্যাস মাত্র। তাহলে পরিণাম?

    মানুষের অধিকারে বঞ্চিত করেছ যারে কোলে তুলে দাও নাই স্থান,

    অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান ( রবীন্দ্রনাথ, ‘অপমানিত’)

     

    আরও পড়ুন: বাবা রামদেবের ম্যাজিক

     

    জাতিভেদ ধরে রাখতে প্রাণান্তকর চেষ্টা

    শূদ্র যে রাজার সভায় ধর্ম নিয়ে বিচার করেতাঁর রাজ্য চোখের সামনে কাদায় বসে যাওয়া গরুর মতো অবসন্ন হয়। যদি রাজ্যে শূদ্রের ও নাস্তিকের সংখ্যা খুব বেড়ে ব্রাহ্মণ গায়েব হয়ে যায়তাহলে গোটা রাজ্যটাই দুর্ভিক্ষ ও রোগে শীঘ্র বিনষ্ট হয় (8/21, 22)

     

    লিস্টি আর লম্বা করতে চাই না। কিন্তু আজ যখন খোদ আমেরিকাতে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনে মার্কিন রাষ্ট্রের কিছু ইতিহাস পুরুষের স্ট্যাচু নিয়ে নতুন করে মূল্যায়নের প্রশ্ন উঠেছেতখন আধুনিক রিপাবলিক ভারতে মনুর মূর্তি স্থাপন করার আগে একটু চিন্তা করলে হয় নাআমাদের সংবিধানে যে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে আইনের চোখে সবাই সমান! কিন্তু যেভাবে এক যোগীর রাজত্বে দলিত নারীরা ধর্ষিত ও নৃশংস ভাবে নিহত হচ্ছেচারদিকে ঘৃণার বিষবাষ্পতখন বোধহয় আমাদের সবার আগে তাদের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে বলা উচিত— ‘ক্ষমা করো আমরা তা পারব কি?


    রঞ্জন রায় - এর অন্যান্য লেখা


    করোনা মোকাবিলায় টাকা আসবে কোথা থেকে?

    সরকার আগে মন্দার কথা অস্বীকার করলেও লকডাউন তাকে চলতি বছরে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে!

    ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারে পয়সা যথেষ্ট থাকলেও লোন দেওয়ার ব্যাপারে ওরা খুব মেপে মেপে পা ফেলছে।

    নিজেকে চিনতে পেরেছি, আমি কাল্লু। কিসসা শোনা যার নেশা

    মানুষ ক্রমাগত উদ্ভাবন করে চলেছে, এমনকী আদিমতম জীবিকায়ও ইনোভেশন।

    আমরা দেখব যে সাভারকরের হিন্দুত্ব এবং আরএসএস-এর হিন্দুত্বের মধ্যে কী কী মিল এবং কোথায় অমিল।

    মনুর মূর্তি প্রতিষ্ঠা: বিশ একুশে মনুসংহিতা-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested