রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ ও তার কর্মী বাহিনী দেশজুড়ে চালাচ্ছে সংখ্যালঘু-দলিত বিদ্বেষী, নারীবিদ্বেষী হিন্দুত্ববাদের প্রচার। এই প্রচারে তাঁদের অন্যতম হাতিয়ার ইতিহাসের বিকৃতি এবং অসত্য, অর্ধসত্য তথ্য। এই মিথ্যার উপর দাঁড়িয়েই তাঁরা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেন, ‘2029 সালে ভারতে কোনও এক মুসলমান প্রধানমন্ত্রী পদে বসতে পারেন।’ এমন অলীক তথ্যের ভিত্তিভূমিও সাজানো থাকে ঝুলিতে৷ সম্প্রতি, হরিদ্বারের এক ধর্মসংসদে ধর্মগুরু যতি নরসিংহনন্দ বলেন, ‘‘আগামী 20 বছরের মধ্যে 50 শতাংশ হিন্দু ধর্মান্তরিত হবেন, 40 শতাংশ হিন্দুর নিধন হবে আর পড়ে থাকবেন 10 শতাংশ হিন্দু।’’ এ ভাবেই হিন্দুধর্মের ‘সঙ্কটকালে’ সঙ্ঘীরা ডাক দেন মুসলমান নিধনের।
সাম্প্রদায়িক বিভাজনের চক্রীরা বরাবরই ঘৃণাভাষণের নামে পরস্পর দুই ধর্মের মানুষকে যুদ্ধের ময়দানে নামিয়ে ফায়দা তুলেছে রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও। সাধ্বী প্রজ্ঞা থেকে যোগী আদিত্যনাথ, বিজেপি, সঙ্ঘ পরিবারেও বহু নেতাই শূদ্র জাত, মুসলমানদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভাষণ দিয়েছেন৷
আরও পড়ুন: বুল্লি বাই: বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, সমাজেরই প্রতিচ্ছবি
এগুলো স্রেফ কথার কথা নয়, গুজরাট গণহত্যার সময়ে হাতেনাতে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল এই বিদ্বেষের শিকড় ঠিক কত দূর। আমজনতা থেকে পুলিশ প্রশাসনের নানান স্তরের ব্যক্তিকেই ‘নিজেদের লোক’ বানাতে সমর্থ হয়েছে সঙ্ঘ পরিবার। 2020 সালে দিল্লির পরিকল্পিত দাঙ্গা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর গুলি করে মারার নিদান দেন প্রকাশ্যেই। এর ঠিক এক দিন পরে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মন্ত্রীর আদেশ পালন করেন এক সদ্য তরুণ।
প্রশ্ন ওঠে, পুলিশ প্রশাসন এবং আইনি ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়েও। উমর খালিদ, সারজিল ইমামরা বছরের পর পর কারাবাস করছেন সিএএ বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত থাকার ‘অপরাধ’-এ! অন্য প্রান্তে অনুরাগ ঠাকুর থেকে ধর্মগুরু যতি নরসিংহ নন্দ বহাল তবিয়তে আওড়াচ্ছেন ধর্মের নামে মানুষ মারার মন্ত্র। প্রাথমিক অভিযোগ জমা হলেও আদালত পর্যন্ত এসে পৌঁছচ্ছে না অধিকাংশ কেস। বারে বারে অভিযোগ ওঠে, গণতন্ত্রের বিভিন্ন স্তম্ভও বাস্তবে অনেক সময় কাজ করে সামাজিক, অর্থনৈতিক প্রভাব ও অধিপত্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে। ভারতের সমাজ জীবনে আজও প্রাসঙ্গিক সাভারকর, শ্যামপ্রসাদের উত্তরসূরিরা৷
পরিসংখ্যান বলছে, গত 4 মাসে 1130 শতাংশ ঘৃণা-ভাষণ বৃদ্ধি পেয়েছে দেশজুড়ে। অভিযুক্তেরা অধিকাংশই বিজেপির উচ্চস্তরের নেতা। সংখ্যালঘু ধর্ম, নিচু জাতের প্রতি বিদ্বেষের মাধ্যমেই আরএসএস রচনা করতে চায় গেরুয়া ভারতের সংজ্ঞা। সামগ্রিক ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র চালনার অন্যতম হাতিয়ার তাই মিথ্যা ভাষ্য। বারংবার মিথ্যা বলার মাধ্যমে জনমানসে সত্যের নতুন ধারণা গড়ে ওঠে। "গডসে পূজন'-এ বিভোর সঙ্ঘীদের অনেকেই বিরুদ্ধ স্বর কিংবা সংখ্যালঘু নিপীড়ণকে দেশভক্তির স্বরূপ বলে মনে করেন। এই প্রগতিবিরুদ্ধ, সাম্প্রদায়িক উপাদানকে পুঁজি করে এগিয়ে চলে ফ্যাসিবাদী আন্দোলন।
মিথ্যা ভাষ্য, ঘৃণা ভাষণকে হাতিয়ার করে ধর্ম সভায়, নির্বাচনে মঞ্চে সঙ্ঘ, বিজেপি।
সাম্প্রদায়িক হিংসার বাতাবরণে শ্রীরামপুরে অনুষ্ঠিত হল সম্প্রীতির লক্ষ্যে পদযাত্রা
সাম্প্রতিক ইউক্রেন সংকট তুলে ধরল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সাম্রাজ্যবাদী সংঘাতকেই।
বীরভূমের দেওয়ানগঞ্জে প্রকল্পের সমর্থনে তৃণমূলের মিছিল রুখলেন আদিবাসী নারীরা
মানিকতলা খালপাড়ের ঝুপড়ির ছেলেমেয়েরা সামিল হল মাতৃভাষা দিবসের প্রভাতফেরিতে।
শ্রীলঙ্কায় কাগজের অভাবে বন্ধ পরীক্ষা, খাদ্যদ্রব্য, জ্বালানির এমন তীব্র আকাল কখনও দেখেনি সেই দেশ।