দমনমূলক কালা কানুন UAPA প্রয়োগ করে রাষ্ট্র যে বিচারের নামে যা খুশি করতে পারে, তার জীবন্ত উদাহরণ বরেণ্য তেলেগু কবি ও সমাজকর্মী ভারভারা রাও। দীর্ঘ দুই বছরের বেশি জেলবন্দি অশীতিপর রাও নানা রোগে জর্জরিত হলেও তাঁর জামিনের আবেদন এখনও মঞ্জুর হয়নি। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে বোম্বে হাইকোর্ট 15 দিনের জন্য তাঁকে নানাবতী হাসপাতালে স্থানান্তরের অনুমতি দিয়েছে বুধবার, 18 নভেম্বর।
টিভি অ্যাঙ্কর অর্ণব গোস্বামীর সপ্তাহখানেক কারাবাসের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর জামিন মঞ্জুর করতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি.ওয়াই. চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চ ব্যক্তিস্বাধীনতা নিশ্চিত করার উপর জোর দিয়েছিল। এরপর গত 12 নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট বোম্বে হাইকোর্টকে ভারভারা রাওয়ের জামিনের আবেদনের ভিত্তিতে শুনানির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেয়। আদালত জামিনের পরিবর্তে তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-কে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আদেশ দেয়। উল্লেখ্য, 18 নভেম্বরের নির্দেশ শুধুমাত্র কবিকে শারীরিক উপশম দেওয়ার লক্ষ্যে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার জন্য, জামিনের আবেদন আপাতত মুলতুবি। কবির আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ বারবার আবেদন করেছেন যে, তাঁর মক্কেলের শারীরিক অবস্থা গুরুতর এবং তাঁর মৃত্যু হলে তা পুলিশি হেফাজতে হত্যার সামিল হবে। তিনি জানিয়েছেন কবি শয্যাশায়ী এবং তাঁকে ডায়াপার পরে থাকতে হয়, এই অবস্থায় তিনি কোথায় পালাবেন? তিনি অনুরোধ করেছেন যে, এই অবস্থায় তাঁকে পরিবারের সঙ্গে থাকতে দেওয়া হোক। কিন্তু রাষ্ট্র, সরকার, বিচারব্যবস্থা নির্বিকার! যেখানে একজন মুমূর্ষু রোগীকে চিকিৎসা করার জন্য বিচারব্যবস্থার এত টালবাহানা, সেখানে তাঁর জামিনের আবেদন যে বারবার নাকচ হয়ে যাবে এতে আর আশ্চর্যের কী?
শ্রীমতি ইন্দিরা জয়সিংহ অভিযোগ করেছেন যে, এনআইএ এবং জেল কর্তৃপক্ষ শুনানির কয়েক ঘন্টা আগে মাত্র রিপোর্ট জমা দেয়। আরও অভিযোগ এই মেডিক্যাল রিপোর্ট একটি ছলনা মাত্র। শ্রীমতি জয়সিংহ বলেন, টেলিকন্সালটেশন মাত্র 15 মিনিটের জন্য হয়। তিনি বলেন কবির মূল সমস্যা হচ্ছে ডিমেনশিয়া এবং মূত্রাশয়ের সংক্রমণ, অথচ ডাক্তারদের প্যানেলে কোনও স্নায়ু বিশেষজ্ঞ এবং ইউরোলজিস্ট নেই। তাঁর শেষ চেক আপ হয় 30 জুলাই নানাবতী হাসপাতালে। সেই রিপোর্টে অনেক পরীক্ষানিরীক্ষার কথা বলা হয়, যা আজ অবধি করা হয়নি। অনলাইন পত্রিকা কুইন্ট জানাচ্ছে যে, টেলিকন্সালটেশন 13 নভেম্বর সন্ধ্যা 6.55 থেকে 7.10 অবধি হয়। এতে দেখা যাচ্ছে কবির কোনও জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট কিংবা মূত্রে রক্তের চিহ্ন নেই। তিনি সম্পূর্ণ সচেতন, তৎপর এবং মানসিক ভাবে সুস্থ। শুধুমাত্র তাঁর ক্যাথেটার পাল্টে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে (যা তিন মাসে পাল্টানো হয়নি) এবং আলট্রাসনোগ্রাফি সহ কিছু টেস্ট করতে বলা হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে জয়সিংহ কবিকে নানাবতী হাসপাতালে ভর্তি করে নিরপেক্ষ ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করার যে আবেদন করেন, সেটিই মঞ্জুর হল 18 নভেম্বর।
এনআইএ এইভাবে বারবার কবির শারীরিক অবস্থাকে লঘু করে দেখিয়েছে। তারা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে যে, তাঁকে জেলে ডাক্তাররা নিয়মিত দেখাশোনা করছে এবং সমস্ত রকম মেডিক্যাল সাহায্য তাঁকে দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা এতটাও অভিযোগ করেছেন যে, কোভিড ও শারীরিক অবস্থার অজুহাত দেখিয়ে তিনি জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন। কারাবরণ ভারাভারা রাওয়ের কাছে নতুন কোনও ব্যাপার নয়। 1973 সালে তিনি মিশায় (MISA-MAINTENANCE OF INTERNAL SECURITY ACT) প্রথমবার গ্রেপ্তার হন। সেই থেকে গত 47 বছরে তিনি অন্তত আরও 25 বার গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে প্রতিবারই বেকসুর খালাস হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ‘সেকেন্দ্রাবাদ ষড়যন্ত্র মামলা’, যা 1974-এর মে মাস থেকে 1989 সাল অবধি চলে। এই পনেরো বছর তিনি বারবার গ্রেপ্তার হন এবং জামিন পান। 1988 সালে অরুন শৌরির অনুরোধে তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে তাঁর জেল জীবনের অভিজ্ঞতা লেখেন। 2005 সালে মাওবাদীরা একটি থানা আক্রমণের পর পুলিশ অভিযোগ করে যে, ভারভারা রাও এবং ‘রেভুলিউশনারি রাইটার্স এ্যাসোসিয়েশন’ তাঁদের লেখার মাধ্যমে এই ধরণের কার্যকলাপকে উৎসাহিত করছেন। দু’জন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীকে দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করিয়ে এমনও অভিযোগ আনা হয় যে, কবির বাড়িতে থানার ওপর এই হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এই মামলার বিচার শুরুর আগেই প্রমাণাভাবের কারণে তিনটি অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়। মামলাটি কয়েক বছর চলার পর কবিকে ‘নট গিলটি’ ঘোষণা করা হয়। 2014 সালে তেলেঙ্গানা রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তিনি চারবার গ্রেপ্তার হন। শুধু তিনি নন, তাঁর স্ত্রী, কন্যা, জামাই বারবার সরকারি দমনপীড়নের শিকার হয়েছেন। এমনকি কারাবরণও করেছেন। কংগ্রেস, এন.টি.রামা রাও, চন্দ্রবাবু নাইডু ইত্যাদি সরকারের আমলে রাজনৈতিক মদতপুষ্ট গুণ্ডারা তাঁর ওপর বেশ কয়েকবার হামলা করেছে, তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। একবার তো জীবনের আশঙ্কার কারণে তিনি জামিন না নিয়ে জেলে থেকে যাওয়াই নিরাপদ মনে করে ছিলেন।
ভারভারা রাওয়ের প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় 1957 সালে। তখন তাঁর বয়স সতেরো। কবিতাটি ‘তেলেগু স্বতন্ত্র’ নামক একটি পত্রিকায় ছাপা হয়। ওই সময় তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়া লাইকা নামক একটি পথকুকুরকে স্পুটনিক 2-তে মহাকাশে পাঠায়। এটাই ছিল কবিতার বিষয়বস্তু। কবিতার নাম, ‘সমাজতান্ত্রিক মেজাজ’। তাঁর সংস্কৃত ভাষার অধ্যাপক তাঁকে বলেছিলেন ‘ও তুমি তাহলে কমিউনিস্ট হয়ে যাচ্ছ’। কিশোর বয়স থেকেই ওই যে তিনি নিজেকে বামপন্থী মতাদর্শের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন, দীর্ঘ আশি বছরের জীবনে আর কোনওদিনও সেটা থেকে বিচ্যুত হননি। তিনি কিন্তু কখনওই সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। শিল্পী, লেখক, সাংস্কৃতিক কর্মীদের বিভিন্ন সংগঠন, পত্রিকা এবং অন্যান্য কার্যকলাপের সঙ্গে আজীবন যুক্ত থেকেছেন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও গণতান্ত্রিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন। রাষ্ট্র এইসব সংগঠনকে অতিবাম বা মাওবাদী তকমা দিয়ে তাঁকে হেনস্থা করেছে। যদিও কী মাপকাঠিতে একটা সংগঠনকে অতিবাম বলা হবে, তা কোথাও নির্দিষ্ট করা নেই।
28 আগস্ট, 2018 তিনি ভীমা কোরেগাঁও মামলায় গ্রেপ্তার হন। বছরের শুরুতে এলগার পরিষদ ব্রাহ্মণদের নিপীড়ন ও আধিপত্যের বিরুদ্ধে মাহার জনগোষ্ঠীর ঐতিহাসিক সংগ্রামের 200 বছর পূর্তিতে দু’দিন সভা-সমাবেশ করেন। দক্ষিণপন্থীরা এই সমাবেশের ওপর আক্রমণ করে এবং সারা রাজ্য জুড়ে হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। পুণে পুলিশের বক্তব্য হিংসাত্মক কার্যকলাপের মাধ্যমে সরকারকে উৎখাত করতে মাওবাদীরা এই সমাবেশ সংঘটিত করেছিলো এবং প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করাও এঁদের পরিকল্পনা ছিল। অথচ এলগার পরিষদের নেতৃত্ব, দু’জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, জাস্টিস বিজি কলসে পাতিল এবং পিবি সাওয়ান্ত অভিযোগ করেন যে, দলিত সমাবেশের ওপর দক্ষিণপন্থীরা হামলা করেছিল। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন তাদের ব্যাপারে নিষ্ক্রিয়। তাঁরা প্রকাশ্যে বারবার বলেছেন যে, এই সমাবেশের উদ্দেশ্য ছিল সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা। ভারভারা রাওয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যার প্রচেষ্টায় যুক্ত ছিলেন। এছাড়া তিনি মাওবাদীদের নেপাল ও মণিপুর থেকে অস্ত্রশস্ত্র কিনতে সাহায্য করেছেন এবং আর্বান নক্সালদের অর্থ সংগ্রহ করতে সাহায্য করেছেন। অথচ সংগঠকরা বলেছেন, এই ঘটনার জন্য যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁদের প্রায় কেউই এলগার পরিষদের সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত নয় এবং এঁদের গ্রেপ্তারের আগে সংগঠকরা তাঁদের নামও জানতেন না। পুলিশের উপরোক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে বরেণ্য কবি দু’বছরের অধিক সময় ধরে কারাবাস করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ প্রয়োগ করা হয়। ইতিপূর্বে এই আইন কতটা দানবীয়, তা এই পোর্টালে আলোচনা করা হয়েছে। এখন এই আইনে সরকার কোনও বিচার ছাড়াই একজন ব্যক্তিকে, কোনও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না হলেও সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করতে পারে এবং গ্রেপ্তার করতে পারে। কোনও অভিযোগ ছাড়াই কাউকে অন্তত 180 দিন আটকে রাখা যায়, যা নানা ছুতোয় দীর্ঘায়িত করা যায়। ইউএপিএ-তে জামিন পাওয়া প্রায় দুঃসাধ্য, তদন্ত শ্লথ গতিতে এগোয়, মুক্তি প্রায় অসম্ভব। বিচারক সরকার পক্ষের উকিল যে অভিযোগ আনেন, তাই সঙ্গত ধরে নেন এবং জামিনের দাবি হেলায় অগ্রাহ্য করেন। এই আইন এতটাই নির্মম যে, অভিযুক্তের ওপরেই নিজেকে নিরপরাধ প্রমাণ করার দায় বর্তায়। দুই বছরের অধিক অতিক্রান্ত, কিন্তু কবির এখনও বিচারই শুরু হয়নি। আর হবেই বা কীভাবে, যা সব অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে সেগুলির সপক্ষে তো কোনও প্রমাণ দাখিল করা হয়নি। তাই অনির্দিষ্ট কালের জন্য জেলে ফেলে রাখা, যাতে কারাবাসই শাস্তিতে পরিণত হয়।
ইতিমধ্যে এই বছরের শুরু থেকেই করোনার প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। এই কারণে কারাগার খালি করার কথা বলা হয়। কিন্তু একইসঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়, যে বা যারা কোনও বিশেষ আইনে অভিযুক্ত তাদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। মহারাষ্ট্রে মহামারী ভয়ানক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে, কারাগার গুলিতেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে।কবি কারাবরণের বছরখানেক পর থেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, এমনকি তাঁর জীবনহানির আশঙ্কাও ঘটে। এই কারণে তাঁর স্ত্রী হেমলতা রাও এতদিনে অন্তত আটবার জামিনের আবেদন করেছেন এবং প্রতিবারই আদালত তা নাকচ করে দিয়েছে। অথচ সুপ্রিম কোর্ট বলে জামিন পাওয়া দস্তুর, কারারুদ্ধ করে রাখা ব্যতিক্রম মাত্র। গত মে মাসে ভারভারা রাও জেলে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। 28 মে ওনাকে জে.জে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তড়িঘড়ি চিকিৎসা করে ওনাকে 1 জুন আবার জেলে স্থানান্তরিত করা হয়। কবির পরিবার অভিযোগ করেন যে, তিনি যাতে জামিনের জন্য আবেদন না করতে পারেন, সেই কারণে তিনি পুরো সুস্থ হওয়ার আগেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। 2 জুন এনআইএ স্পেশাল সেশনস কোর্টে তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানি ছিল। হাসপাতালের ‘নর্মাল’ রিপোর্ট দেখিয়ে পুলিশ এই আবেদনের বিরোধিতা করে এবং তাঁকে আবার জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরিবারের অভিযোগ, রিপোর্টে তাঁর সোডিয়াম স্বাভাবিকের চেয়ে কম ছিল এবং পটাসিয়ামের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে যৎকিঞ্চিৎ ঊর্ধ্বে ছিল। জেলে প্রবীণ কবির শারীরিক অবস্থার উত্তরোত্তর অবনতি হতে থাকে। উনি বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েন, কথাবার্তা অসংলগ্ন হয়ে যায় এবং এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েন যে, দাঁত মাজা, স্নান করার মতো অপরিহার্য দৈনন্দিন কাজগুলির জন্য অন্যদের সাহায্যের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তবুও তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে কর্তৃপক্ষ গড়িমসি করে। এর বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হয়। 19 জুন কিছু সাংসদ ওনাকে অবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য মহারাষ্ট্র সরকারকে অনুরোধ করেন। পরিবার এবং বিশিষ্টজনেরা আবেদন করেন যে, কারাগারে ভারভারা রাওকে হত্যা করবেন না। কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। 13 জুলাই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং কয়েক দিন বাদেই দেখা যায় যে, তিনি কোভিড আক্রান্ত। পরিজনদের অভিযোগ দু’দিন বাদে তাঁরা হাসপাতালে গিয়ে দেখেন যে, কবি বিছানায় নিজের মূত্রের মধ্যে শুয়ে আছেন। তাঁরা আরও জানান সেই 28 মে থেকে জেলে বা হাসপাতালে তাঁরা কবির সঙ্গে এই একবারই মাত্র দেখা করতে পেরেছেন। স্বামীর জামিনের জন্য হেমলতার আবেদনের শুনানি 17 জুলাই থেকে দু’বার পিছিয়ে 27 জুলাই করে দেওয়া হয়। এরপরে হাইকোর্টের অনুমতিতে 31 জুলাই তাঁরা 20 মিনিটের জন্য ওনার সাথে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন।
শুধু ভারভারা রাওয়ের ক্ষেত্রেই নয়, ভীমা কোরেগাঁও মামলায় অন্যরা যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁরাও একইভাবে রাষ্ট্রের প্রতিহিংসাপরায়ণতার শিকার। জি.এন.সাইবাবা, মাওবাদী যোগের কারণে যাবজ্জীবন কারাবাসে দণ্ডিত। তিনি একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষ, 90% শারীরিক ভাবে অসুস্থ। তাঁকে তাঁর অসুস্থ মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাঁর শেষকৃত্যে উপস্থিত থাকার জন্য অনুমতিও দেওয়া হয়নি। দু’বারই হায়দ্রাবাদ পুলিশ নাকি জানিয়েছে, তাঁর কয়েক দিনের জন্য বাইরে আসাটাও বিপজ্জনক। 8 অক্টোবর 83 বছর বয়সি বিশিষ্ট সমাজকর্মী স্ট্যান স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি পার্কিনসন্স ডিজিজ নামক স্নায়ুরোগের শিকার।খাবার নিজে খেতে পারেন না, জলের গ্লাস ধরতে পারেন না, হাত কাঁপে। জল বা কোনও তরল পান করার জন্য তিনি স্ট্র এবং সিপার ব্যবহার করেন। এই দু’টি জিনিস তাঁর একটি ব্যাগে রাখা থাকে, যেটা এনআইএ তাঁকে গ্রেপ্তারের সময় বাজেয়াপ্ত করে। এগুলি ফেরত পাওয়ার জন্য তাঁকে আদালতে আবেদন করতে হয়েছে। মহামান্য আদালত 28 নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেছে। এরপর আর কোনও মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন! ধন্য আমাদের বিচার ব্যবস্থা, ধন্য গণতন্ত্র!
রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতী এখন রাজনীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
নিজের ভাষায় ফিল্মের গল্প বলেন কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরার শিরোপা পাওয়া পায়েল কাপাডিয়া।
শেষ পর্যন্ত এবারের ভোটে মুসলিম ভোট বাংলায় মমতার ঝুলিতেই যাবে।
কৃষক আন্দোলন নিয়ে শীর্ষ আদালতের এই 'সক্রিয়তা' কি নিছক কেন্দ্রীয় সরকারের মুখরক্ষার খাতিরেই?
পীড়নকারী, হত্যাকারী পুলিশের শাস্তি হয়নি কোনও আমলেই।
কোনও কিছুই আর গোপন নয় আমাদের জীবনের।