কেন্দ্রীয় শাসকের প্ররোচনায় সোশাল মিডিয়ায় দেশপ্রেম এখন শত্রুদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধের বীরগাথা, সমরাস্ত্রের ঝংকার। এই আরোপিত দেশপ্রেমের একমাত্র ভাষা হিন্দি। এই ছাঁচে ঢালা দেশপ্রেমের ভাবনায় কোথায় নানা ভাষা নানা জাতি নানা ধর্মের স্থান? এই নিয়েই গত 9 জুন (বুধবার) 4thpillars.com একটি আলোচনার আয়োজন করেছিল। এই আলোচনায় সুদীপ্ত সেনগুপ্তর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী শিবাজী প্রতিম বসু, সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র এবং শিক্ষিকা সোনালী দত্ত।
1) দেশপ্রেমের তেমন কোনও সংজ্ঞা হয় না, তবুও এই ভাবনার মধ্যে বিগত কয়েক বছরে যে একটা বিশাল পরিবর্তন এসেছে, তা লক্ষণীয়। স্বাধীনতা দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে 10টা গান হলে তার মধ্যে 8টা গানই হিন্দি হয়। কেন? বাংলায় কি কোনও দেশাত্ববোধক গান নেই? সর্বোপরি দেশপ্রেম বলতে এখন মাপা হয় আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে কতটা যুদ্ধে পরাজিত করা হল, কতটা শায়েস্তা করা হল তার নিরিখে।
2) আমাদের দেশের যে মিশ্র সংস্কৃতি, যা দেখে আমরা বড় হয়েছি যে সংস্কৃতি ভাবনায় রবীন্দ্রনাথ থেকে আরও অনেকে জড়িয়ে ছিলেন আজ সেখানে জায়গা নিয়েছে বলিউডি ভাবনা। দেশপ্রেম ভাবনার উপর প্রচ্ছন্ন ছাপ ফেলেছে বলিউডের সিনেমা। আর সেই সিনেমায় অন্যান্য সব ভাষা বাদ দিয়ে একমাত্র হিন্দি ভাষাকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
3) দেশপ্রেম দেশপ্রেম করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতি যুদ্ধ ইত্যাদির কথা বলা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু আমরা কি স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস জানি? জানলেও কতটা? কতজন মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামীকে চিনি আমরা? ফলে শুধু দেশপ্রেম, জাতীয়তাবাদের কথা বললেই হবে না, নিজেদের মানুষ, বাঙালি সত্তা এবং ভারতীয় পরিচয় তিনটে জিনিসকেই ব্যালেন্স করে চলতে হবে।
4) ভারতীয় মানে শুধুই গোবলয়ের মানুষ না, ভারতীয় মানে বাঙালি, ওড়িয়া, সাঁওতাল, সবাই। এটা মনে রাখতে হবে।
5) আমাদের কাছে এখন তাঁরাই দেশপ্রেমিক হয়ে দাঁড়িয়েছেন, যাঁরা যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছেন। শুধু যুদ্ধ করলেই দেশপ্রেমিক হওয়া যায়? আর যাঁরা অশিক্ষা, কুসংস্কার, অপুষ্টির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন তাঁরা কি তবে দেশপ্রেমিক নন?
6) দেশপ্রেম কিসে কিসে হয় তার একটা ভাবনা আমাদের মনের মধ্যে গেঁথে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের যে মিশ্র বহুমুখী সংস্কৃতি, সেটাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। অন্যান্য ভাষা, ধর্মের মানুষও যে যুদ্ধে যাচ্ছে, দেশের জন্য লড়াই করছে সেটাকে অস্বীকার করা হচ্ছে, যেটা ভয়ঙ্কর।
প্রায় চার বছর পরে আবার তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে এলেন দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মুকুল রায়। এরপর কী?
শিক্ষার অধিকার থেকে শিশুদের বঞ্চিত না করে স্কুলকে পঠনপাঠন চালুর বিষয়ে স্বাধীনতা দেওয়া হোক।
বিজেমূল নিয়ে ভুল স্বাকারের পর প্রতিষ্ঠানবিরোধী বাম রাজনীতির পরিসরটা কি ফিরে পেতে পারে তারা?
দুর্নীতিমুক্ত আদর্শবাদী রাজনীতি করি বলে বুক ঠুকে বলার দম কতজন বিরোধী নেতার আছে?
সব বিষয়েই ফেল করা সরকার শুধু প্রচারের নিনাদে প্রথম!
আজকের উপাচার্যের আমলে বিশ্বভারতী কি ক্রমশ বাংলা ও বাঙালির লজ্জায় পরিণত হচ্ছে?