×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • ইউরোপকে কেন্দ্র করে কি আমেরিকা রাশিয়া সংঘাত?

    বিতান ঘোষ | 26-04-2022

    প্রতীকী ছবি।

    রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে রুশপ্রচারমাধ্যম ইতিমধ্যেই তৃতীয় মহাযুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দিয়েছে। সমরাস্ত্র, রণহুংকারে চাপা পড়ে যাচ্ছে জরুরি প্রশ্নগুলো। ইউরোপের ভূ-রাজনৈতিক ব্যবস্থায় কি কোনও স্থিতিস্থাপকতা আসবে? ইউরোপের বাইরে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিও কি এই যুদ্ধের মাসুল দেবে? এই প্রশ্নগুলোকে সামনে রেখেই ক্যালকাটা রিসার্চ গ্রুপ ‘পশ্চিমে যুদ্ধের প্রেক্ষিতে আজকের শান্তির সন্ধান’ শীর্ষক আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল। ভার্চুয়াল এই আলোচনায় বক্তা হিসাবে ছিলেন ইতালির বলগোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক দর্শন বিভাগের অধ্যাপক সান্দ্রোমেজাদ্রা, যুক্তরাষ্ট্রের ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক মার্সেলো মুস্তো এবং ক্যালকাটা রিসার্চ গ্রুপের তরফে অধ্যাপক রণবীর সমাদ্দার। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিভাগের প্রধান, অধ্যাপক পলা ব্যানার্জি।

     

    বক্তাত্রয়ের কথায় অনিবার্য ভাবেই উঠে আসে ভুবনায়ন এবং পুঁজিবাদের বল্গাহীন আধিপত্য বিস্তারের কথা। অধ্যাপক সান্দ্রো ভুবনায়নের (Globalization) ফলে ইউরোপের এক পরিবর্তিত আর্থ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়তাবাদী রাজনীতি যে নব্য নাৎসিবাদের সঙ্গে লড়ে যাচ্ছে, সেই প্রসঙ্গও উঠে আসে সান্দ্রোর কথায়। তবে এতে বামপন্থা কতটা হারানো গ্রহণযোগ্যতা ফিরে পাবে, তা নিয়ে এখনই মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

     

    সান্দ্রো এবং অধ্যাপক সমাদ্দার, উভয়ই এই যুদ্ধের অন্যতম অনুঘটক হিসাবে ন্যাটো (NATO)-র ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ন্যাটো পশ্চিম ইউরোপে তার প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে মত তাঁদের। দর্শকদের মধ্যে চাপা গুঞ্জন, তবে কি ইউরোপকে কেন্দ্র করে আবার আমেরিকা রাশিয়ার আদর্শগত সংঘাত দেখতে চলেছে বিশ্ব?

     

    অধ্যাপক মুস্তো অবশ্য তেমনটা মনে করছেন না। তাঁর কথায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও দিনের শেষে একজন জনপ্রিয়তাবাদী একনায়ক। সুতরাং সেই লেনিনও নেই, আর লেনিনগ্রাদও নেই। তাই এখনই পাশ্চাত্যে বামপন্থার পুনর্জাগরণের খোয়াব দেখা বৃথা বলেই মত তাঁর। তবে বক্তাদের সকলেই একমত যে, নব্য নাৎসিবাদকে রুখতে ইউরোপের মধ্যপন্থী দলগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তাঁরা সম্প্রতি ফ্রান্সের নির্বাচনের উদাহরণ টেনে এনেছেন।

     

    আরও পড়ুন: বাহুবলী বুলডোজারে পিষ্ট ভারতীয়ত্ব

     

    উপসাগরীয় যুদ্ধের পর আমেরিকা সমরাঙ্গন কিংবা কৌশলগত ক্ষেত্র— আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কোথাও তেমন সফল হতে পারেনি। সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকেও তাদের খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চিন ও রাশিয়ার আগ্রাসনকে রুখতে ইউক্রেন সহ ইউরোপের অন্যত্র ন্যাটোর প্রভাব বাড়াতে চাইছে আঙ্কেল টমের দেশ— এমনটাই মত বক্তাদের। এই যুদ্ধের অন্যতম প্রত্যক্ষ কারণ হিসাবে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক বিপর্যয়কে তুলে ধরেছেন অধ্যাপক মুস্তো।

     

    দর্শকদের তরফে প্রশ্ন আসে, আফ্রিকার পশ্চাৎপদ দেশগুলি কেন রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিচ্ছে না। কেন এই দেশগুলি রুশ আগ্রাসনের বিরোধিতা করে বিবৃতি দিচ্ছে না। এই প্রসঙ্গে বক্তাদের মত, ইউক্রেনের পিছনে যে ন্যাটোর মতো শক্তি রয়েছে, তা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট। তাই কোনও না কোনও সময় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের শিকার হওয়া দেশগুলি নেপথ্য থাকা আমেরিকার পক্ষে বা বিপক্ষে কোনও মন্তব্য করতে চাইছে না। দর্শকদের মধ্য থেকে একজন প্রশ্ন করেন, নব্য নাৎসিবাদের বিপদকে বড় করে দেখিয়ে ইউরোপের বড় শক্তিগুলো কি নিজেদের আর্থ-রাজনৈতিক স্বার্থগুলিকে চরিতার্থ করতে চাইছে? রাশিয়ার উদাহরণকে সামনে রেখে এমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে না দিলেও এই নিয়ে সর্বশেষ কোনও সিদ্ধান্তে এখনই উপনীত হওয়া উচিত নয় বলে মত বক্তাদের।

     

    শুরুতেই অধ্যাপক ব্যানার্জি আলোচনার মূল সুরটি বেঁধে দিয়েছিলেন। কলকাতার প্রচন্ড গরমে ভার্চুয়াল এই আলোচনাসভার শেষে বক্তাদের সহাস্য উক্তি, যুদ্ধের জন্য জ্বালানি ও গ্যাসের দাম আরও বাড়লে আর কি বাতানুকূল যন্ত্রের নীচে বসে এমন মনোজ্ঞ আলোচনা করা সম্ভব হবে?

     


    বিতান ঘোষ - এর অন্যান্য লেখা


    সমাজ নির্মিত ‘খুনি' হিসাবে একাকী রিয়াকে যে অসম লড়াইটা লড়তে হচ্ছে, সেই লড়াইয়ে সংহতি থাকবে।

    আমাদের 70 লক্ষ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। তাই, আমরা যে কোনও মিথ্যা খবরকে সত্য করতে পারি

    বিপদের সম্মুখে অসহায় মানুষের আপাত দুর্বল জায়গাগুলো এইভাবেই বুঝি বেআব্রু হয়ে পড়ে।

    বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে বাবুল সুপ্রিয়র জয়ে প্রমাণ হল শাসক দলে ভিড়লে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত হওয়া যায়!

    শীতের ফুটিফাটা শরীরেও প্রেম আসে, আসে দ্রোহও, শাসক তাই বসন্তকে ভয় পায়।

    নিউ নর্মাল সময়ে মহামারী অনেক কিছু বদলে দিয়ে গেলেও বাঙালির এই চিরায়ত অভ্যাসে বদল আনতে পারেনি।

    ইউরোপকে কেন্দ্র করে কি আমেরিকা রাশিয়া সংঘাত?-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested