বল্লরী সেন
এই কবির কবিতা শুভ্র শঙ্খের সৌন্দর্য, গমগমে নিনাদ আবার কখনও শাঁখের করাত। নব্বই দশকের শেষ ভাগে প্রকাশ পায় তাঁর বই, ভিন্ দেশি পাখি। মনখারাপের গায়ে হলুদ, বিহানরাতের বন্দিশ, লেফাফা বন্দি দুই তারা, রাত্রি যখন শিউলি গুনে তোলে এবং বিষাদ গেরস্থালি -এই তাঁর পেনসিলের শব্দবুদ্বুদ। নানা নিরীক্ষার অনুশীলনে ইংরেজীতেও লিখেছেন কিছু সময়ের প্রবাহকে, নাম- The Window Seller. ২০১৮-তে গবেষণার বিষয় নিয়ে প্রকাশ পেল নারীবীক্ষায় পুরুষের কবিতা বইটি। পেশা- অধ্যাপনা।
কবিতা
১
যুধিষ্ঠিরকে জানানো হল
বৃষ্ণিবংশ লোপ পেতে বসেছে, বসুদেব এক দীর্ঘ হাতল কেদারায় শুয়ে
একে একে বলরাম ও কৃষ্ণের ধ্বংস দেখে চলেছেন
প্রাসাদময় পুত্রবধূদের ক্রন্দনে অভ্যস্ত কবুতরের দল
আজ নেই
যুধিষ্ঠির এখানেই প্রথম তাঁর অযাচিত পরামর্শলিপ্সা থেকে
বেরোতে পারলেন
কাউকে ভয় পেলেন না
নিজের কাছে নিজেকে গচ্ছিত না রেখে
দাবদাহ ধারণ করলেন একা
ক্ষত পালনের জন্য আমাদের কাছেও আজ আগুন মৃত
ঘৃত, দুগ্ধ, অশ্রু, অন্ন
সমস্ত অরন্ধন।
বাড়ি বাড়ি আলুনি হচ্ছে গতকাল।
এসো, হাত জড়ো করি, কোনও ডোম করুণা করেনি
কাক চিল নকুলের পরিত্যক্ত কঙ্কাল, সবাই আজ বিধর্মী
যবন
২
এখন খাস বেলা ফুটছে। ঘড়িতে ভারতীয় ১০.৪৭ সকাল, আমার জানলা দিয়ে দেখা যাচ্ছে ওদিকের বারান্দার তারে জ্যান্ত কাপড় গেঞ্জি মোজা রুমাল শুকোচ্ছে। ওর আরও পাশে কিচ্ছু নেই সদর গলি অব্দি সুনসান একটা ইউক্যালিপ্টাসের চামড়া শোওয়ানো রাস্তা একা পিঠ উল্টে পড়ে আছে।
আমার হাতে আর সময় নেই। এই কলম কালি খাতা সব জীবাণু সংক্রমিত হয়েছে। একটা আপাদমস্তক ব্লু ফিল্ম হয়ে আছি। আছি। এখনও ৬৬৫৪ সেকেণ্ড ধরে করোনায় আমার মগজ বিস্ফারিত, ঘুমোতে যাই না, খাবার নেই এখানে। জল নেই, জলজ গুল্ম কেবল দেখি।
দেখি একটা রোববারে মায়ের সঙ্গে গীর্জায় বসে আছি। কালও ছিলাম। আজ ইঁদুরের মতো ওরা লাথি মেরে আমাকে জালের মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়ে যাবে নির্বাসনে।
যেখানে আলো কেবল অন্ধের মতো চুপচাপ গলা বিঁধিয়ে দেয়। চালগুঁড়োর গন্ধ আমার শেষ কয়েক ঘন্টার শ্বাসবায়ু।
এও তো একরকমের থাকা, নয়...
৩
স্বরবর্ণ থেকে ব্যঞ্জন কেয়ামত্ আগুনের মতো ধরে যায় গোলাপ গাছের আয়ুরস সাইকেলে বসিয়ে একটা দিন কেবল মাঠানের গায়ের সুবাস মনে পড়ে। তারপর কাজ নেই আর। ভেনিসের ল্যাম্পপোস্টের তলায় যেমন মৌমাছিরা মরবার জন্য ভিড় করে শববাহিকায় তোমার বাহু ধরে ভাবি একদিন আমারও সময় আসবে। মুসুরডালের গাগরি ভেঙে একফালি বেগনি চাঁদসুতো, সাইকেলের চাকায় আটকে যাওয়া সালোয়ারে কোনদিন মরিনি তো। সুতোর মতো কত জন্ম নিরোধক খেয়ে মায়ের জঠরের রক্তলাগা ঠোঁটে কালসিটে জাবর কাটা ১০ টা দিন তোমার নীরবতার ঝাঁকাবন্দি হয়ে আর একবার ঐ হাত ভিজিয়ে দেব অমানুষ চুম্বনে তুমি ঘুমের ভেতর ভাববে অবিরাম দোয়েল ডাকছে তুমি আমার গায়ের গন্ধে মৌজ মৌতাতে বেঁচে থেকো স্বয়ম্বরা হয়ে।
কেন লিখি
যে লিখছে। লিখছে আসলে কে? লিখছে সে যে এখনো জানেনি, নচিকেত সত্তার অপর কোনো দিগন্তে কমা দাঁড়ি আর মনখারাপ নিয়ে কেউ নিজের ভেতর থেকে আর একজনকে সনাক্ত করার কাজে কারফিউ উপেক্ষা করে লিখছে! ক্লেমেন্ট রশে তাকেই বলেন আমি ও আমার যমজ, যে আয়নায় দেখা দেয়, যার নাম নেই গোত্র নেই, সে।
কবিতা আমার কাছে প্লাস্টিক মোড়া এক দেহ, যাকে কাঁধ দেওয়া দূর, চিতার আগুনও নেবে না। প্রেসার কুকারের মতো কফিনে বেঁধে ফেলে দেবে ওরা। কবিতা তার জ্যান্ত লাশ, কার?
ফোর্থপিলার্সের ক্যামেরায় ধরা পড়ল এবং বারাসাতের ‘আনলকড’ চিত্র।
সরকারি হাসপাতালই সবার ভরসা। কিন্তু বেড অ্যালটমেন্ট ন্যায্য হবে তো?
পশ্চিমবঙ্গে এবারের ভোটে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে অজস্র প্রশ্ন।
বাংলার নির্বাচনে স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে বিজেপির কি মাথাটাই গেল?
সুপ্রিম কোর্ট তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ।
শুক্রবার আলোচনার পঞ্চম দিনে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ, অধ্যাপক অভিরূপ সরকার।