কৃষকদের দাবি মেনে সরকারের আইন প্রত্যাহারের কোনও লক্ষণ নেই। দু'পক্ষই অনড়। আন্দোলনের পরিণতি যাই হোক কৃষকরা গণ-আন্দোলনের নতুন ধারা দেখিয়ে দিচ্ছেন ভারতের রাজনীতিতে। এই নিয়েই www.4thpillars.com গত 14 ডিসেম্বর (সোমবার) একটি আলোচনার আয়োজন করেছিল। এই আলোচনায় সাংবাদিক সুদীপ্ত সেনগুপ্তের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ী এবং শুভজিৎ বাগচী।
1) পাঞ্জাবে মূলস্রোতের বামপন্থী আন্দোলন বেশ সক্রিয়। সেই রাজ্যে বিভিন্ন বাম দলের সংগঠন রয়েছে। হয়তো ভোট রাজনীতিতে তার কোনও প্রভাব চোখে পড়ে না, কিন্তু চলমান কৃষক আন্দোলনেও একটা বামপন্থী ঝোঁক থাকতে পারে। একইসঙ্গে এটাও ঠিক যে, বাম দলগুলি এবং নকশালপন্থী দলগুলি দেশে এতটাও শক্তিশালী নয় যে, তারা আগাগোড়া একটা আন্দোলনকে দাঁড় করাতে পারবে।
2) বিজেপি রেটোরিক বানাতে খুবই পটু। যে কোনও ঘটনাকে সম্পূর্ণ ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়ার মতো মেশিনারি ওদের হাতে আছে। এই আন্দোলন স্বতঃস্ফূর্ত কোনও আন্দোলন নয়, এটা যে নকশাল-বামপন্থীদের ষড়যন্ত্র— এই প্রচারটাকে ওরা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারছে। দেশের আর কোনও দলের এই ক্ষমতা নেই।
3) সরকার প্রথমদিকে কৃষক আন্দোলনের প্রতি কঠোর অবস্থান নিলেও, পরে অনেকটাই নমনীয় মনোভাব দেখাচ্ছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, সব কৃষিপণ্যে ন্যায্য সহায়ক মূল্য (MSP) সুনিশ্চিত করা সম্ভব নয়। অর্থাৎ, সরকার প্রকারান্তরে স্বীকার করে নিয়েছে, নয়া আইনে MSP সুনিশ্চিত নয়। সরকার এ কথা বলতে পারে, কেননা MSP একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থার অঙ্গ, এটা আইনি কোনও ব্যবস্থা নয়। সরকার কৃষিক্ষেত্র থেকে হাত গুটিয়ে নিলে বেসরকারি কোম্পানিগুলির MSP সুনিশ্চিত করার কোনও দায় নেই।
4) এপিএমসি বা মান্ডির মাধ্যমে ফসল বিক্রি করার ব্যবস্থা পশ্চিমবঙ্গে নেই। পাঞ্জাবের কৃষকদের সমস্যা আর এ রাজ্যের কৃষকদের সমস্যা এক নয়। সেই কারণেই হয়তো এ রাজ্যের বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে নয়া কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সেভাবে পথে নামতে দেখা যাচ্ছে না।
5) চলতি কৃষক আন্দোলন কিন্তু বিরোধী রাজনীতিকেও অন্য দিশা দেখাচ্ছে। সরাসরি কৃষকদের সমর্থনে পথে না নামলেও, মূলস্রোতের রাজনৈতিক দলগুলি বেসরকারিকরণ কিংবা ব্যাঙ্কের সুদের হার কমানো প্রভৃতি ইস্যুতে পথে নামতে পারে। প্রধান বিরোধী দলগুলির ব্যর্থতার জন্যই আজ কৃষকদের স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে রাস্তায় নামতে হয়েছে।
6) আরএসএস আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে। খুব সম্ভবত তারা সরকারপক্ষ এবং কৃষকদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যম হতে চাইছে। সরকার চাইছে আন্দোলনের মধ্যে ফাটল ধরাতে এবং আন্দোলনকারীদের ওপর দেশবিরোধী স্ট্যাম্প লাগাতে।
7) কোনও আন্দোলনই সুদীর্ঘকাল চলতে পারে না। কোনও না কোনও আলোচনার পথ তো নিশ্চয়ই বেরোবে। স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ইতিমধ্যেই প্রতীকী আন্দোলনের রূপ পেয়েছে। সরকার না আন্দোলনকারী কৃষক— কারা আগে নত হয় সেটাই এখন দেখার। তবে কৃষকরাও সহজে হাল ছেড়ে দেবেন বলে মনে হচ্ছে না। শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানসূত্র বেরোলেই ভাল।
প্রথম বাঙালি হিসাবে রাষ্ট্রপতির আসনেও বসেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি বারবার সুযোগ আসা সত্ত
দেশে ক্রমশ এনকাউন্টার কিলিং কি বৈধতা পাচ্ছে?
এই 'জাতীয় স্বার্থ' বিষয়টা ঠিক কী? কোথায় বলা আছে? কে ঠিক করল? তা কি শুধুই শাসকের বন্দনা?
করোনা পরিস্থিতি যখন সবচেয়ে ভয়াবহ, তখনই হাত গুটিয়ে নিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
সমসাময়িক বাংলা ভাষার অগ্রণী কবি ও প্রাবন্ধিক সুমন গুণের জন্ম কলকাতায়। .
পেশায় রাশিবৈজ্ঞানিক। যুক্ত আছেন আই.এস.আই ও আই.এ.এস.আর-এর সাথে।