×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • সুমন গুণের কবিতা

    4thPillars ব্যুরো | 03-02-2020

    painter at work by Paul Cezanne

    সুমন গুণ

    সমসাময়িক বাংলা ভাষার অগ্রণী কবি ও প্রাবন্ধিক সুমন গুণের জন্ম কলকাতায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যলয় থেকে এম.এ. ও পিএইচ.ডি. করেছেন। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা এবং বিভাগীয় প্রধান তিনি।  ‘দেশ’,  ‘বইয়ের দেশ’,  ‘অনুষ্টুপ’ সহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকার নিয়মিত লেখক। কৃত্তিবাস পুরস্কার এবং পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত। 

     

    কবিতা

    সংরক্ষণ

    গ্রামের বাড়িতে আছ, সামনে মাঠ, ভেতরে পুকুর,
    গৃহপালিত বারান্দা জুড়ে রোদ
    দূরের বন্ধুর মতো সদাহাস্যময় হয়ে আছে।
    পাশের জানালা থেকে আমি সুসময় দেখি, দেখি সন্ধেবেলা
    আরতির প্রসন্ন আগুন
    ভেতরের ঘরে জ্বলছে, তোমরা সবাই
    গোল হয়ে বসে আছো অনির্বচনীয়র দিকে চেয়ে।
    পাশে ব্যস্ত জাতীয় সড়ক, উপর্যুপরি
    উচ্চাকাঙ্ক্ষাভর্তি দ্রুতযান
    টপকে টপকে চলে যায় দ্রুতপাঠ্য গন্তব্যের দিকে

    বিপর্যয়

    পুরনো বাড়ির চিহ্ন মাঝে মাঝে পুনর্মুদ্রিত
    সংসার চমকে দিয়ে যায়।
    খুব ছোট ছোট টুকরো : অব্যবহৃত
    খাতা, ঢাকনাহারা কৌটো, ভাঁজ করা
    পরিপাটি পর্দা কয়েকটি
    মুহূর্তে ঘাতক হয়ে ওঠে, লাফ দেয়
    অসংবৃত জীবনের বুকের ভেতরে,
    সমস্ত সাজানো ইচ্ছে কেড়ে নিয়ে, ভেঙে ফেলে
    পরিযায়ী বাসনাচিহ্নিত ঘরবাড়ি।
    ধ্বংসস্তূপে হাত রেখে মাঝে মাঝে পুনর্জন্ম হয়।

    দাবি

    এতটা নির্মম তুমি কখনো ছিলে না!
    পদস্খলনের পরে পেছন ফিরেও
    আবার নিশ্চিত হাত নীরবে বাড়িয়ে দিতে
    একটু পরেই, এটা মেনে যে, অগ্রজের
    বেদনা ও ভূকম্পন স্নেহ ও ক্ষমায় শুধু অনূদিত হয়।
    আসলে তখনও তুমি পদানত ছিলে
    শুধু, শুধুমাত্র কবিতার কাছে।

    শ্লোক

    অসুখ, তোমাকে আমি উচ্চারণ দেব।
    দেব সাধ্বী তুলসী পাতা, রুদ্ধবাক জল,
    উপদ্রবহীন কিছু খুচরো বাতাসা।
    অসুখ, তোমাকে আমি মরণোত্তর
    সুসংবাদ দেব।

    (সুমন গুণ)

     

    কেন লিখি

     

    আমি যখন লেখালিখির আওতায় প্রথম আসি, তখন শব্দের গোপন দেবনাগরী নিয়ে মজে থাকার আহ্লাদ কবিতায় ধরে দিতে চেয়েছিলাম। এখন যে-সরলতার দিকে আমি নাছোড়ভাবে সরে আসছি, তার ঠিক উলটো জটিলতার দিকে আমার মন ছিল। আমার সেই সময়ের কবিতার দিকে মাঝে মাঝে তাকাই, যেভাবে এই সেদিন বিক্রি করে দেওয়া আমার পুরনো বাড়ির দিকে মনে মনে চেয়ে থাকি। এই ধরনের কবিতায় পরিমিতির যে-রসায়ন, তার মধ্যে একটা উত্তেজনা আছে, চাপা আহ্লাদ আছে। নিজেকে নিয়ে ভোর হয়ে থাকার মধ্যে যে-আশ্লেষ, তা টের পাওয়া যায় এই কবিতা নিয়ে পড়ে থাকার সময়। এখনো আমার অনুচ্চ সমর্থন আছে এই ধরনের প্রতি। কিন্তু ক্রমশ আমি টের পেলাম আরও ছড়িয়ে বলার একটা তাগিদ তৈরি হচ্ছে ভেতরে ভেতরে, একটু খুলে কথা না বললে হচ্ছে না। আমি যদিও পুরো বিবৃতির টানে লিখতে পারিনি কখনও, ভেতরের দিকে, নিজের দিকে, একটা টান থেকেই গেছে। তবে যত দিন যাচ্ছে, সব কথা সরাসরি বলে দেবার ইচ্ছে পেয়ে বসছে । পরের দিকে আমি যতটা খুলে বলার অভ্যাস প্রশ্রয় দিলাম এখানে তার কোনও ছাপ পাওয়া যাবে না। এই প্রশ্রয় শুরু হল সম্ভবত মৃদুল দাশগুপ্ত, গৌতম চৌধুরীদের ‘শত জলঝর্ণার ধ্বনি’ থেকে প্রকাশিত ‘কুসুমের জটিল গমক’ বইটি থেকে। তারপরের বইগুলোতে আমি একটু সচেতনভাবে ছড়াতে চেয়েছি। কতটা পেরেছি সেটা অন্য কথা। হয়তো কিছুই পারিনি। কবিতার হয়ে-ওঠার নিজস্ব রসায়ন আছে।  কাম্য বলে কিছু হতে পারে না কবিতার। একটি বিশেষ কবিতা তার আদল নিজেই ঠিক করে নেয়, আগে থেকে বলে কিছু করা যায় না।

     


    4thpillars ব্যুরো - এর অন্যান্য লেখা


    নির্বাচনী বন্ডোর মাধ্যমে বেসরকারি সংস্থা গোপনে রাজনৈতিক দলকে টাকা জোগাচ্ছে।

    নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্ত্বেও রক্তাক্ত নির্বাচন। কোথায় গেল নির্ভয়ে ভোট দানের ব্যবস্থা?

    আমরা যেন এই মহামারীর সময়ে ঘটা গুজরাতের ভেন্টিলেটর কেলেঙ্কারির কথা না ভুলে যাই।

    রাজনীতিতে বিরোধীর জায়গা থাকবে না? পুরো পরিসর জুড়ে থাকবে শুধুই শাসক?

    অর্থনীতির গতি ক্রমশ নিম্নগামী।

    8 জুন কতটা সচেতন শহরবাসী? সোমবারের কলকাতা কেমন ছিল?

    সুমন গুণের কবিতা-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested