সর্বভারতীয় কৃষক আন্দোলনের নেতারা বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার করছেন বাংলায়। ভোটে তার কী প্রভাব পড়তে পারে? এই নিয়েই www.4thpillars.com গত 15 মার্চ (সোমবার) একটি আলোচনার আয়োজন করেছিল। এই আলোচনায় সুদীপ্ত সেনগুপ্তের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ী এবং রজত রায়।
1) বাংলার নির্বাচনে কৃষক আন্দোলনের প্রভাব কতটা পড়বে, তা বলা মুশকিল। কৃষকরা বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিতে বলছেন। একমাত্র জামুড়িয়া কেন্দ্রে তাঁরা সংযুক্ত মোর্চা মনোনীত প্রার্থী, ঐশী ঘোষকে জেতাতে বলছেন। মুশকিল হল কৃষকরা তাঁদের বৃহত্তর সমস্যার কথা বাংলার কৃষকদের নিবিড় ভাবে বোঝাতে পারেননি। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম ছাড়া তাঁরা বাংলার অন্যত্র যেখানে যেখানে মহাপঞ্চায়েত করেছেন, সেগুলো সবই শহুরে এলাকা।
2) কৃষকদের বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার আহ্বানে শাসক তৃণমূলের লাভ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সংযুক্ত মোর্চা তৃণমূল- বিজেপির বাইরে নিজেদের তৃতীয় বিকল্প হিসাবে তুলে ধরতে পারলেও, শাসন ক্ষমতায় আসার মতো অবস্থায় নেই। এই প্রচারে তাঁদের কিছু ভোট বাড়লেও বেশি লাভবান হতে পারে তৃণমূল।
3) কৃষক আন্দোলনকারীদের এই রাজনৈতিক অবস্থানে নেতিবাচক ভোটের প্রশ্ন আসতে পারে। কিন্তু জহরলাল নেহরুর পর থেকে এই দেশের শাসকরা নেতিবাচক ভোটেই জিতে এসেছেন। 2011 সালেও এই রাজ্যের মানুষ বামেদের হারানোর উদ্দেশ্যেই মমতাকে নির্বাচিত করেছিলেন। আমাদের দেশে এই জিনিস বরাবর চলে আসছে।
4) বামেদের যে ভোটটা গত লোকসভায় বিজেপির দিকে চলে গিয়েছিল, সেটা এবারে অনেকটাই তাঁদের দিকে ফিরে আসতে পারে। সবটাই হয়তো একবারে ফিরে আসবে না। কিন্তু বামেরা তাঁদের প্রার্থী তালিকায় বড় পরিবর্তন এনেছেন। বেশ কিছু স্বচ্ছ ভাবমূর্তির যুব মুখকে প্রার্থী করা হয়েছে। এতে বামেরা কতগুলি আসন পাবেন, তা এখনই বলা মুশকল। কিন্তু, এতে বামেরা তাঁদের হারানো ভোট ফিরে পেতে পারেন।
5) এমন নয় যে বাংলায় সাম্প্রদায়িকতার চাষ হালে শুরু হয়েছে। দেশভাগের পরও বেশ কয়েকবার বাংলায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে। হিন্দু মহল্লায় মুসলমানকে বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়নি। কিন্তু কেন্দ্রের শাসক, এমনকি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজে সাম্প্রদায়িক বিভাজনে মদত জোগাচ্ছেন— এটা অতীতে কখনও দেখা যায়নি।
6) তত্ত্বগত দিক থেকে দেখলে বিজেপিকে রোখার জন্য বামেরা তৃণমূলের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রাখতে পারতেন। কিন্তু বাস্তবে কিছু রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করতেই হয়। গত 10 বছরের তৃণমূল শাসনে বাম-কংগ্রেস সমর্থকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আবার এই দু'টি দলের বহু জনপ্রতিনিধিকে তৃণমূল তাদের দলে সামিল করেছে। এই পরিস্থিতিতে বাম-তৃণমূল সমন্বয় হলে বাম ভোটাররা হয়তো আরও বেশি বিজেপির দিকে যেতেন। অন্যদিকে বামেদের শক্তি বাড়লে শাসক তৃণমূলেরই লাভ।
7) গত লোকসভার নিরিখে দেখলে বিজেপি 40 শতাংশ এবং তৃণমূল 44 শতাংশ ভোট পেয়েছে। বিজেপিকে ক্ষমতায় আসতে গেলে ভোট শতাংশ আর একটু বাড়াতে হবে। কিন্তু বাস্তবে তেমন কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। সিএএ ইস্যুতে বিরক্ত গোর্খা, রাজবংশী এমনকি মতুয়াদের একটা অংশ বিজেপির বিরুদ্ধে যেতে পারে। বামেরাও তাঁদের বেশ কিছু ভোট বিজেপির থেকে নিজেদের অনুকূলে ফিরিয়ে আনতে পারেন।
8) বিজেপি রাষ্ট্রপতি মনোনীত রাজ্যসভার সদস্যকেও দলীয় প্রতীকে প্রার্থী মনোনীত করছে। এটা প্রমাণ করে যে স্থানীয় এলাকায় প্রার্থী হওয়ার মতো কোনও গ্রহণযোগ্য মুখ বিজেপি খুঁজে পাচ্ছে না। নব্য বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী পূর্ব মেদিনীপুরে এত প্রভাবশালী হওয়া সত্ত্বেও, তাঁর পুরনো দল তৃণমূলের একজন জনপ্রতিনিধিকে ভাঙিয়ে আনতে পারেননি। তাই এঁরা আদৌ কতটা 'প্রভাবশালী', তাই নিয়ে সন্দেহ থাকছে। সংযুক্ত মোর্চার জোট শরিক আব্বাস সিদ্দিকিও কতটা লম্বা দৌড়ের ঘোড়া, তা এখনই বলা মুশকিল।
নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্ত্বেও রক্তাক্ত নির্বাচন। কোথায় গেল নির্ভয়ে ভোট দানের ব্যবস্থা?
কলকাতার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সাংবাদিকদের চোখে কেমন লকডাউন চিত্র, আজ দেখুন চতুর্থ পর্ব।
অনেকেই মনে করেন মানব সভ্যতার প্রথম সাহিত্য: গিল্গামেশ-কাব্য
মানুষের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা সরকারের, বেঁচে গেল সাধারণ মানুষ।
উরুগুয়ের এদুয়ার্দো গ্যালেয়ানো স্পেনীয় ভাষায় লেখেন ‘চিলড্রেন অফ দ্য ডে’জ
জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে আলোচনার দ্বিতীয় দিনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক সুরঞ্জন দাস