নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবার পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে। তবুও রক্তাক্ত নির্বাচন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতেই ভোটারদের মৃত্যু। কোথায় গেল নির্ভয়ে ভোট দানের ব্যবস্থা? এই বিষয়ে গত 10এপ্রিল (শনিবার) www.4thpillars.com একটি আলোচনার আয়োজন করেছিল। সুদীপ্ত সেনগুপ্তের সঙ্গে এই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক রজত রায় এবং সমাজকর্মী অনিকেত চট্টোপাধ্যায়।
1) লকেট চ্যাটার্জির গাড়িতে আক্রমণের ভিডিওটি দেখলে স্পষ্ট ভাবেই বোঝা যাচ্ছে ভিতর থেকে আঘাতের ফলেই কাঁচ ভেঙেছে। বাইরে থেকে আঘাতের ফলে নয়। এমন নির্লজ্জ রাজনীতি বাংলা আগে কখনও দেখেনি।
2) এখন মেরুকরণের ভোট হচ্ছে, দু'পক্ষ দু'ভাবেই দেখছে বিষয়টা, কারও মতে কেন্দ্রীয় বাহিনী দায়ী কারও মতে মমতা ব্যানার্জির উস্কানি। সেখানে আর নতুন করে অন্য কোনও বিষয়ে মেরুকরণ হওয়ার জায়গা নেই।
3) এবার অনেক মানুষ প্রথমবার ভোট দিচ্ছেন এত বছরে বা বহু বছর পর আবার ভোট দিচ্ছেন এবং তাঁদের অধিকাংশই এটা ঘোষণা করে দিচ্ছেন যে তাঁদের ভোট বিজেপিকে নয়। অর্থাৎ বিজেপিকে হারাতেই তাঁরা ভোট দান করেছেন।
4) নির্বাচন কমিশন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে কোচবিহার জেলায় বেশ কিছু প্রশাসনিক রদবদল ঘটালেও শীতলকুচির ঘটনা প্রমাণ করল কমিশন এই ব্যাপারে ব্যর্থ।
5) আধা সামরিক বাহিনীকে ঘেরাও করে প্রাণনাশের চেষ্টার তত্ত্বও ঠিকঠাক দাঁড়াচ্ছে না। প্রশাসনের রিপোর্ট বলছে ধস্তাধস্তি হয়েছে, হয়তো কোনও ভোঁতা জিনিস দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু তার জন্য গুলি চালানো কোনওভাবেই মানা যায় না।
6) যারা নিহত হলেন তারা ধর্মপরিচয়ে মুসলমান। তারা গরিব প্রান্তিক। নিহতদের পরিজনদের কান্নার ছবি দেখার পর এই রাজ্যের সংখ্যালঘু, সর্বোপরি সাধারণ মানুষ কি নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে? আবার অন্যদিকে এই ঘটনা তাদের আরও মরিয়া করে তুলতে পারে। তারা হয়তো তখন আরও বেশি সংখ্যায় ভোটের লাইনে দাঁড়াবে।
7) বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে বাংলা বাঙালি অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। সমাজ বহুধাবিভক্ত হয়ে যাবে। এই পরিণতির কথা ভেবে এমন অনেকেই এবারে ভোট দিচ্ছেন, যারা প্রায় বিগত দু-দশকে ভোটের লাইনে দাঁড়াননি।
8) বিজেপি অর্থবলে, ক্ষমতাবলে কোনওক্রমে ক্ষমতায় এলে, বাংলার ভবিষ্যৎ নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠবে, তেমনি বিজেপিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো দুঁদে একজন বিরোধী রাজনীতিকের মোকাবিলা করতে হবে। সেটা কিন্তু অনেকের কাছেই চিত্তাকর্ষক একটা ব্যাপার হবে।
বাংলার ভোটাররা যদি এ রাজ্যে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনেন তাহলে সেটা একপ্রকার "খাল কেটে কুমির আনা" হবে।
হিন্দি আগ্রাসনের থাবা ভোটের মুখে শীর্ষ বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠানে।
শিক্ষা নিয়ে এমন ছেলেখেলা কেন?
এই প্রথম একটা রূপালী রেখা দেখা যাচ্ছে।
মিডিয়ায় ঠিক ভুল যুক্তির বিচারে হোক, সংখ্যার জোরে নয়! শুধু ঝড়ের নামে নয়, সর্বর্ত্রই!
ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন ছাড়াও বাঙালি বনাম অবাঙালি, নারী এবং পুরুষ বিভাজনও এবারের ভোটে সক্রিয়।