×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • ‘শাট’কাহন – করোনায় দিনযাপন

    অয়ন্তিকা দত্ত মজুমদার | 23-03-2020

    প্রতীকী ছবি

    আমার শাটডাউন শুরু ২২ মার্চ থেকেই। গোটা দিন ঘরবন্দি থেকে সন্ধের পর অফিসও জানালো এই ক’দিন ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করতে হবে। একটানা এতদিন ঘরে শেষ কাটিয়েছিলাম গ্র্যাজুয়েশন ফাইনালের আগে। তাও তখন এত নিষেধাজ্ঞা ছিল না, বাড়িতে সকলে একসঙ্গে থাকতো না। এত ঘনঘন হাত ধোয়ার ঝক্কি ছিল না, মাস্কের কুটকুটানি ছিল না, বারবার জামা-কাপড় ধোয়ার ব্যাপার ছিল না, মাঝেমধ্যেই করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ভয় ছিল না।

     

    ২৩ মার্চ সকালবেলা উঠেই শুনলাম মায়ের ওষুধ ফুরিয়েছে। বেরিয়ে পড়লাম। রাস্তায় যেদিকে চোখ যাচ্ছে শুধু কালো মাথা। চোখ ছাড়া বাকিটা মাস্কে ঢাকা, ভাগ্যিস!

     

    ২২ মার্চ দোকানপাট পুরোপুরি বন্ধ থাকায় অনেকেই প্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুত করতে পারেননি, ফলে ২৩ তারিখ সকাল থেকে বাজারে উপচে পড়ছে ভিড়। গিজগিজ করছে লোক। কেউ আলুর বস্তায় হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন তো কেউ তেলের দোকানে লাইন রেখে এটিএম ছুটছেন। হঠাৎ দেখলে মনে হচ্ছে মোচ্ছব লেগেছে। বিয়েবাড়ির বাজার করছে যেন! তায় আবার তাদের মেজাজ। লাইন দেবেন না, ভাল জিনিস চাই, হাজার প্রশ্ন করে দোকানদারকে উত্যক্ত করা এসব তো লেগেই আছে। এসব কিছুর মধ্যে দোকানদার একটু জোর গলায় কথা বললে তিনি খারাপ।

     

    সবমিলিয়ে একেবারে হইহই রইরই ব্যাপার। এরই মধ্যে দেখলাম পাড়ার মোড়ে ছয়-সাতজন বয়স্ক মানুষ রোজের মতনই আড্ডা বসিয়েছেন। অবশ্য বিকেল ৫টা থেকে তো লকডাউন। তখন সবে বেলা ১২টা। কত্ত সময় বাকি! করোনাও এতদিন ঘুরে ঘুরে আজ হয়তো ক্লান্ত। ওনাদের খবর দিয়েছেন, তাই নিশ্চিন্তে আড্ডা দেওয়াই যায়! ২২ মার্চ বিকেল ৫টায় প্রধানমন্ত্রী থালা-বাসন বাজাতে বলেছিলেন যখন সেই কথা অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়েছিল। গোটা দিন ঘরে থেকে হঠাৎ বিকেলে রাস্তায় নেমে থালা-বাটি-চামচ-কাঁসর-ঘণ্টা বাজাতে শুরু করলেন সকলে! তাহলে সারাদিন ঘরে থাকার কী মানে? ‘হলিডেইং’ করার জন্য তো নয়! কিন্তু সেই সরকারই এমনকী ডাক্তাররাও যখন বলছেন রাস্তায় অযথা জমায়েত করবেন না, বিশেষ করে বয়স্ক এবং বাচ্চাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, তখন সেই কথা শুনতে কি ইচ্ছে করে না?

     

    যাই হোক! যাদের শোনার নয় তারা কখনওই শুনবে না। আমি বরং এই ফাঁকে আমার রান্নার হাত পাকাচ্ছি। প্রথম রান্না সুপারহিট। পরেরটা দেখা যাক কী হয়! আপাতত আমি চিন্তিত গোটা হপ্তা দাদাকে কীভাবে সহ্য করব ভেবে। দেড়দিনেই অতিষ্ঠ, ঝগড়া করে কূল পাচ্ছি না। বাকি দিনগুলো কী যে হবে! তবু বাড়িতে থাকবো, আপনারাও তাই করুন। সুস্থ থাকুন!

     


    অয়ন্তিকা দত্ত মজুমদার - এর অন্যান্য লেখা


    অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অকপট মতামত জানাচ্ছে আজকের নারী। সেই মতামতে রয়েছে রামধনুর রঙের মতোই অপার বৈচিত্র।

    নিজের মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা নজরে এলে সঙ্গে সঙ্গে সাহায্য নিন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের।

    তুরস্কের প্রাচীন সৌধ আয়া সোফিয়াকে পুনরায় মসজিদে পরিণত করার ডিক্রি পাস করলেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট।

    অনেকের কাছেই সোশাল মিডিয়া বেদ বাইবেল কোরানের তুল্য

    সোশাল মিডিয়া ব্রেকিং নিউজ দেওয়ার উপযুক্ত স্থান নয়।

    তাস নিয়েই জব্বর কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন আলিপুরদুয়ার জংশনের শুভ্রনীল মিত্র।

    ‘শাট’কাহন – করোনায় দিনযাপন-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested