কোভিডের টিকা নিয়ে অযৌক্তিক স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হল মোদী সরকার। বিভিন্ন রাজ্য সরকার, বিশেষজ্ঞ মহল এবং সাধারণ মানুষের দাবি মেনে অবশেষে বিনা পয়সায় সকলকে ভ্যাকসিন। গণতন্ত্রে সাধারণ মানুষের ইচ্ছার মর্যাদা আবারও প্রতিষ্ঠা পেল। এই বিষয়ে গত 7 জুন (মঙ্গলবার) www.4thpillars.com একটি আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল। সুদীপ্ত সেনগুপ্তর সঙ্গে আলোচনায় সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ী এবং ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজিস্ট শান্তনু ত্রিপাঠী উপস্থিত ছিলেন।
1) যেহেতু এখন একমাত্র লক্ষ্য যত দ্রুত সম্ভব বেশি সংখ্যক মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া, তাই টিকা 75 শতাংশ সরকারের কাছে আর 25 শতাংশ বেসরকারি সংস্থাগুলো কাছে থাকায় একপ্রকার ভালই হল, যাঁরা টিকা কিনে নিতে পারবেন তাঁরা বেসরকারি জায়গা থেকে তা নিয়ে নিতে পারবেন। এর ফলে কম সময়ের মধ্যে বেশি মানুষ ভ্যাকসিন নিতে সক্ষম হবেন।
2) এখন প্রশ্ন হচ্ছে ভ্যাকসিন দেব বললেই তো আর দেওয়া যায় না। দেখতে হবে চাহিদা অনুযায়ী জোগান কতটা আছে। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় 16-18 লক্ষ ডোজ ভ্যাকসিন তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে এই তৈরি হওয়া থেকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় তাকে স্টোর করে রাখা এবং মানুষকে দেওয়ার যে গোটা প্রসেসটা রয়েছে তার প্রত্যেকটা ধাপের সঙ্গে প্রত্যেকটা ধাপের তালমিল রাখা ভীষণ জরুরি।
3) ডিসেম্বরের মধ্যে সবাইকে ভ্যাকসিন না দেওয়া গেলেও এই সিদ্ধান্তের ফলে যে আগের থেকে ভাল ফল পাওয়া যাবে এবং দ্রুত ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে তা বলাই বাহুল্য।
4) ভারতের সাক্ষরতার হার যেখানে এখনও 80 শতাংশ হয়নি, প্রচণ্ড টেকস্যাভি মানুষেরাও কো-উইনে রেজিস্টার করতে হিমসিম খাচ্ছেন, সেখানে সবাইকে এই অ্যাপে রেজিস্টার করতে বলা অত্যন্ত অবাস্তব সিদ্ধান্ত। এর থেকে যদি বলা হত ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে গেলেই ওখানে কোনও কর্মী রেজিস্ট্রেশন করে দেবে সেটা একরকম ছিল।
5) দেশের বহু বিরোধী দল বিনামূল্যে টিকাদানের জন্য কেন্দ্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করলেও, কেন্দ্র এই বিষয়ে উচ্চবাচ্য করেনি। শেষে খুব সম্ভবত সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনাতেই এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্যোগী হতে দেখা গেল।
6) 18 বছরের নীচে, শিশু কিশোরদের ওপর কোনও টিকার ট্রায়াল সম্পূর্ণ হয়নি। চিনের মতো কোনও কোনও দেশ এই ট্রায়াল সম্পূর্ণ করে ছোটদের টিকা দিচ্ছে। আমাদের দেশে কোভ্যাকসিনের একটা ট্রায়াল ছোটদের ওপর চালানো হচ্ছে। তার ফলাফল বিশ্লেষণ করলে বোঝা যাবে, ছোটদের টিকাকরণ কবে থেকে শুরু করা সম্ভব।
7) টিকা বন্টন, হিউম্যান ট্রায়ালের অন্তবর্তীকালীন রিপোর্ট— সব বিষয়েই আর একটু স্বচ্ছতার প্রয়োজন আছে। মূলত যে দু'টো কোম্পানির টিকা এখন দেশবাসীকে দেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর ট্রায়ালও সম্পূর্ণ হয়নি।
8) টিকা না নিলে ঝুঁকি বেশি, নাকি না নিলে ঝুঁকি বেশি, এই পরীক্ষায় দেখা গেছে টিকা নেওয়া ব্যক্তির ঝুঁকি তুলনায় অনেক কম। তাই, নির্ভয়ে টিকা নেওয়া জরুরি।
9) যে গতিতে টিকাদান চলছে তাতে সকল দেশবাসীকে টিকা দিতে হলে 3-4 বছর লেগে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে তৃতীয় ঢেউকে সামাল দেওয়া মুশকিল। যারা ইতিমধ্যেই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধক অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে ঠিকই, তবে তা ক্ষণস্থায়ী। জনগোষ্ঠীর মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হতে সময় লাগবে, তাই কোভিড বিধি মানার পাশাপাশি টিকার বিকল্প নেই।
10) বিশ্বের সকল দেশে, এমনকি ভারতের তুলনায় পশ্চাদপদ দেশগুলিতে বিনামূল্যে কোভিডের টিকা দেওয়া হচ্ছে। অতীতে ভারতেও বিনামূল্যে বিভিন্ন রোগের টিকা দেওয়া হয়েছে। তাই বিনামূল্যে টিকা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বা সরকার কোনও দয়াদাক্ষিণ্য করছেন না। এটা সরকারেরই দায়িত্ব।
11) বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশও আমাদের আগে টিকা প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে সে দেশে টিকার জোগান সুনিশ্চিত করেছে। আমরা এই মহামারীকে আটকাতে কোনও পূর্বপরিকল্পনাই করিনি। এতে যেমন সরকারের একটা বড় দায় আছে, তেমনি নাগরিকদের জনস্বাস্থ্য নিয়ে উদাসীনতাও দায়ী।
পশ্চিমবঙ্গের চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল কোন রাজনৈতিক বার্তা দিচ্ছে?
নিপীড়নমূলক আইনের বিরুদ্ধে জনমত প্রভাবিত করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকেও: বিচারপতি অশোক গাঙ্গুলি
আজ না হোক কাল একদিন স্কুল খুলবেই। তখন কার কী করণীয়? কোনও পরিকল্পনা আছে কি?
আপনাদের অনেক প্রশ্ন, সরাসরি উত্তর দিচ্ছেন 4thPillarWeThePeople-এর সম্পাদক সুদীপ্ত সেনগুপ্ত।
ঘোষিত লক্ষ্য পরিকাঠামোর জন্য অর্থের সংস্থান। অতীতের অভিজ্ঞতা কী বলে?
রাজ্যের শিক্ষক মহলের অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন উপস্থিতির হার নিয়ে-বাস্তব চিত্রটা ঠিক কেমন?