রাষ্ট্রের যাবতীয় সম্পদ দীর্ঘমেয়াদে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ঘোষিত লক্ষ্য পরিকাঠামোর জন্য অর্থের সংস্থান। অতীতের অভিজ্ঞতা কী বলে? ঘটিবাটি বন্ধক রেখে কতদিন চলতে পারে সংসার? এই বিষয়ে গত 25 অগস্ট (বুধবার) 4thpillarwethepeople.com একটি আলোচনার আয়োজন করেছিল। সুদীপ্ত সেনগুপ্তর সঙ্গে আলোচনায় অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার, শৈবাল কর, এবং সাংবাদিক নির্মাল্য মুখোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন।
1) এই সময়টা কি সঠিক সময় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো বিক্রি করার? এখন তো সারা পৃথিবী জুড়ে মন্দা চলছে, ফলে কম দাম পাওয়া যাবে সব জিনিসেরই, সেটা তো স্বাভাবিক। সরকারও সেটা জানে। তাহলে কেন এই সময়টাকেই তারা বেছে নিল? সরকার কী তবে তাদের পছন্দ মতো উদ্যোগপতিদের সস্তায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিল?
2) বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি ঘটছে। এবং আগামীদিনে তা আরও বাড়বে। বেকারত্ব থাকবে কী থাকবে না জানা নেই, তবে পার্মানেন্ট চাকরির বদলে কন্ট্রাকচুয়াল চাকরি আরও বাড়বে।
3) টাকা ছাপানোর সময় পেরিয়ে এসেছি আমরা, এখন মুদ্রাস্ফীতি চলছে আর এটা টাকা ছাপানোর সময় নয়। এখন টাকা ছাপালে ভারতের অর্থনীতির হাল আরও খারাপ হবে। এছাড়াও এই সরকারের যা ভাবমূর্তি তাতে সহজে বাজার থেকে ধারে টাকা তোলা যাবে না এর আগে যেমনটা করা হতো। এখন সরকার সেগুলোকেই লিজে দিয়ে দিচ্ছে। ফলে এখন যদি সরকারকে চটজলদি রাজস্ব আদায় করতে হয় এর থেকে সহজ উপায় আর নেই। কারণ সরকারের টাকা তোলার যে জায়গাগুলো ছিল সেগুলো দিন দিন সংকুচিত হয়ে গেছে।
4) পরিকাঠামো ভাল করার জন্য খরচ বাড়ানো উচিত। কিন্তু মূর্তি বানানো বা সেন্ট্রাল ভিস্তা বানানোকে পরিকাঠামো ভাল করা বলে না।
5) সরকার বলছে টাকা নেই, তাহলে মূর্তি বানানো, সেন্ট্রাল ভিস্তা বানানোর টাকা কোথা থেকে আসছে?
6) সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলোর অপব্যবহার করে সেগুলোকে প্রায় ছিবড়ে করে ফেলেছে। এই অবস্থায় এখন সেগুলো বেসরকারি সংস্থার কাছে বন্ধক দিতে চাইছে।
7) বেসরকারি সংস্থাগুলো যে সর্বাগ্রে নিজেদের লাভের দিকটি বুঝে নেবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সেখানে সরকারের আর কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। অধিকাংশ মানুষের চাকরি যাবে। স্থায়ী চাকরির বদলে চুক্তিভিত্তিক চাকরি দেওয়ার প্রবণতা বাড়বে।
8) নির্দিষ্ট সময়ের পর সংস্থাগুলি সরকারের কাছে ফিরিয়ে নেওয়া বেশ জটিল ব্যাপার। তাছাড়া কী অবস্থায় সেগুলোকে বেসরকারি উদ্যোগপতিরা রাখবেন, তাই নিয়েও প্রশ্ন জাগে।
9) নির্দিষ্ট করে কিছু বলা না গেলেও এটা স্পষ্ট যে আগামীদিনে মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়বে। টাকা ছাপিয়ে বেহাল অর্থনীতি সামাল দেওয়ার সময় আমরা অনেক আগেই পেরিয়ে এসেছি।
10) রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে বাধ্য করা হচ্ছে ঋণ দিতে। টাকা ঘরে ফিরবে না এটা জেনেও বহু ব্যাঙ্ক ঋণখেলাপীদের ঋণ দিতে বাধ্য হচ্ছে৷ এর ফলে ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদ না নন-পারফর্মিং অ্যাসেটের পরিমাণ বাড়ছে।
11) বন্ধক দেওয়া মানেই হয়তো মালিকানা বদল নয়। কিন্তু সবক্ষেত্রেই সরকারের ভাবমূর্তি এমনই যে না আঁচিয়ে বিশ্বাস নেই।
ন্যায়বিচারের স্বাভাবিক নীতি মর্যাদা পেল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে।
অবশেষে হাত জোড় করে হার মানতে হল নরেন্দ্র মোদীকে। শাসক হিসেবে প্রথম বার।
খামখেয়াল হুড়ুমতাল! পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এখন গো অ্যাজ ইউ লাইক!
মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, দেউচা সিঙ্গুর হবে না। সত্যিই হবে না তো?
দেশভাগের যন্ত্রণা কি উদযাপনের বিষয়? কেন্দ্রীয় সরকারের হঠাৎ কেন এই ইতিহাস প্রীতি?
সংসদীয় গণতন্ত্রের কফিনে সর্বত্র সবাই পেরেক পুঁতছেন।