তাঁর নাম বং বং। ঠাট্টা নয়, সত্যি এটাই তাঁর নাম। তাঁর পিতৃপরিচয় হল ফার্দিনান্দ মার্কোস (Ferninand Marcos)। তাঁর নামটাও অবশ্য ফার্দিনান্দ, তবে বং বং নামেই তিনি বেশি পরিচিত। হ্যাঁ, তিনি ফিলিপাইনসের কুখ্যাত স্বৈরতন্ত্রী প্রাক্তন শাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসের পুত্র। 20 বছর ধরে স্বৈরতন্ত্রী শাসনের সময় দেশের অর্থভাণ্ডার থেকে কোটি কোটি পেসো লুঠ করে, দেশকে দুর্নীতি ও সাধারণ মানুষকে নির্মম শাসনে ডুবিয়ে দিয়ে এই মার্কোস পরিবার 1986 সালে প্রবল গণবিক্ষোভের মুখে পড়ে ফিলিপাইনস থেকে পালিয়ে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে আশ্রয় নেন। তাড়াহুড়ো করে পালিয়ে যাওয়ার পরে তাঁদের ফেলে যাওয়া বিলাসবহুল জিনিসপত্র দেখে দেশবাসী বুঝতে পারেন, কী ভাবে দেশের অর্থ নয়ছয় করে চলেছিলেন তাঁরা। বলা হয়, মার্কোসের স্ত্রী ইমেলডা (Imelda)-র ফেলে যাওয়া জুতোই ছিল অন্তত 2700 জোড়া। ইমেলডার ওই সব জুতোর সম্ভার ফিলিপাইনসের ন্যাশনাল মিউজিয়মে নিয়মিত প্রদর্শিত হয়। পরে এই প্রসঙ্গে ইমেলডা বলেছিলেন, ওরা আমার সব আলমারি খুলে অনেক নরকঙ্কাল পাবে আশা করছিল। কিন্তু পেয়েছে শুধু জুতো।
মার্কোস আর স্ত্রী দেশে ফিরে আসেননি। 1989 সালে মার্কোস মারা গেলেও তাঁর স্ত্রী ইমেলডা এখনও প্রবাসেই বেঁচে রয়েছেন।
তাঁর বাবা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মার্কোস ও তাঁদের পরিবারের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার ভূত যে জনমানসে এখনও চেপে বসে রয়েছে, সেটা আশঙ্কা করেই বং বং আবেদন করেছিলেন, তাঁর পরিবারের অতীত কর্মকাণ্ডের কথা মাথায় না রেখে তাঁর কাজকর্মকে বিবেচনা করেই যেন দেশবাসী ভোট দেন। সম্ভবত, ফিলিপাইনসের মানুষও সেই রক্তাক্ত কালো অধ্যায়কে পিছনে ফেলে সামনের দিকে তাকাতে চান। অন্তত, ভোটের প্রাথমিক ইঙ্গিত সেদিকেই।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মার্কোস দেশের সেনাবাহিনীর উপর নির্ভর করে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে যথেচ্ছ ভাবে দমন করেছিলেন। তাঁর আমলেই দেশের অন্যতম বিরোধী রাজনীতিক বেনিনো অ্যাকুইনোকে হত্যা করা হয়। মার্কোস পরিবার দেশ ছেড়ে পালালে অ্যাকুইনোর স্ত্রী কোরাজন দেশের প্রেসিডেন্ট হন।
কিন্তু তাঁদের ছেলে বং বং অবশ্য দেশে ফেরেন 1991 সালে। আর তারপর থেকে দেশের পার্লামেন্টে (সেনেটে) সদস্য হিসাবে সক্রিয় রাজনীতি করছেন। এবার সেই বং বংই সম্ভবত ফিলিপাইনসের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে চলেছেন। সরকারি ভাবে নির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে আরও কিছুদিন পরে। তবে, নির্বাচনের পরে সমীক্ষায় সেরকমই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:অপব্যবহারই সিডিশন আইনের স্বাভাবিক ব্যবহার
বং বং শেষ পর্যন্ত যদি প্রেসিডেন্ট হয়ে ক্ষমতায় আসেন, তা হলে তিনি কোন পথ ধরেন, দেশকে আবারও বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দুর্নীতি ও অপশাসনে ডুবিয়ে দেন কিনা, সেদিকে লক্ষ্য রাখছে আন্তর্জাতিক দুনিয়া।
মনে করা যেতে পারে, ভারতে নেহরু-গান্ধী পরিবারের উত্তরাধিকারী হিসাবে কংগ্রেসের নেতার পদ পেয়ে যাওয়া রাহুল গান্ধীকে নিয়েও দেশে ও দেশের বাইরে নানা প্রশ্ন উঠছে। তাঁর হঠাৎ হঠাৎ বিদেশে পাড়ি দেওয়া, দলের দায়িত্ব না নিয়েও পিছন থেকে কলকাঠি নাড়া, আবার কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির ধর্মকেন্দ্রিক রাজনীতির মোকাবিলা করতে গিয়ে নিজেকে সাচ্চা হিন্দু বলে জাহির করা, মন্দিরে মন্দিরে ঘোরা— সব মিলিয়ে এই যুবরাজকে নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠছে। উল্টে, পরিবারতন্ত্র নিয়ে বিজেপিকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে রসদ জোগাচ্ছেন। রাহুল দলকে নির্বাচনে জেতাতে পারেননি। কিন্তু মার্কোস-পুত্র পেরেছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের মুখ দেখতে। রাহুল ও বং বংয়ের মধ্যে এখানেই বিরাট পার্থক্য।
রাশিয়া এবং পশ্চিমি দুনিয়া, দুপক্ষই আসলে ভাবের ঘরে চুরি করছে!
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এক কথায় প্রায় নজিরবিহীন। দেশজুড়ে এখন নাগরিকত্ব আইন বা সি এ এ, এন আর সি এবং
ইতিহাসের পুরনো ক্ষত বাঙালি ভদ্রলোকদের বিজেপি-প্রেমী করে তুলেছে।
CAA-এর বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলন আর পাঁচটা রাজনৈতিক আন্দোলনের মত নয়। এই লড়াই সংবিধান বাঁচানোর লড়াই
বলশেভিক বিপ্লবের পর ধর্মের পীড়নের ইতিহাসের চাকা ঘুরে গিয়ে এখন ধর্মকে ব্যবহার করেই রুশজাতীয়তাবাদউস্ক
এই প্রথম মমতার বিরুদ্ধে খোলাখুলি দুর্নীতির অভিযোগ করছে বাংলার মানুষ