রবিবার বাম-কংগ্রেস-ISF জোটের বিগ্রেড সমাবেশ কি আসন্ন বিধানসভা ভোটে ত্রিমুখীলড়াইয়ের ইঙ্গিত দিল? বিপুল জন সমাবেশে কার ভাগ কতটা, ভোটে কতটা প্রভাবের সম্ভাবনা? এই নিয়েই 1 মার্চ (সোমবার) www.4thpillars.com একটি আলোচনার আয়োজন করেছিল। এই আলোচনায় সুদীপ্ত সেনগুপ্তর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংবাদিক রজত রায়।
1) বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (ISF)-এর জোট আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের লড়াইটাকে ত্রিমুখী করে দিল বলে মনে হয় না। এই নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের ভোট কিছু বাড়লেও বাড়তে পারে। আব্বাসের দলের প্রভাব দক্ষিণবঙ্গের কিছু কিছু জায়গায় সীমিত। তাঁর এই চকিত উত্থানে লড়াইটা আবার দ্বিমুখীই হয়ে উঠতে পারে। সেক্ষেত্রে গত লোকসভার মতো সার্বিক লড়াইটা তৃণমূল বনাম বিজেপিই হতে চলেছে।
2) বামপন্থা আর দল হিসেবে বামপন্থীদের মধ্যে প্রভেদটা ক্রমে প্রকট হচ্ছে৷ ব্রিগেড সমাবেশে মুষ্টিমেয় কয়েকজন ছাড়া আর কোনও নেতার মুখে কৃষক আন্দোলন, ন্যায্য সহায়ক মূল্যের মতো জরুরি বিষয়গুলো উঠে আসেনি। ভোটে জেতার অঙ্কই 28 মার্চের সমাবেশে প্রকট হয়েছে।
3) আব্বাস সিদ্দিকি ব্রিগেডের সভামঞ্চ থেকে জানিয়েছেন, তিনি "তোষণ' নয়, "ভাগীদারি' চান। জোটের রফাসূত্র নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর দলের বিরোধ দেখা দিয়েছে। মালদা, মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের যে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক তা কংগ্রেস অন্য কারও জন্য হাতছাড়া করতে নারাজ। আব্বাসের কথায় এই ভোটটা হঠাৎ ঘুরে যাবে এমন মনে করারও কোনও কারণ নেই। এই ভোটের সিংহভাগ কংগ্রেস এবং তৃণমূলের কাছেই যাবে।
4) 2019-এ বামেদের থেকে যে ভোটটা ইসলামোফোবিয়ার কারণে বিজেপিতে গিয়েছিল, সেটা আবার বামেদের কাছে ফেরা মুশকিল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে এর আগে মুসলিম তোষণের অভিযোগ উঠলেও, ব্রিগেডে আব্বাস-পর্বের পর সেই তকমাটা তাদের গা থেকে উঠে গিয়ে বামেদের গায়ে লাগল।
5) আব্বাস সিদ্দিকি ইসলামিক জলসায় বক্তব্য রেখে জনপ্রিয় হয়েছেন। অতীতে মুসলিম জনজাতিদের নিয়ে আন্দোলনে তাঁর কোনও ভূমিকা ছিল না। হঠাৎ ভোটের আগে তিনি সংখ্যালঘু মসীহা হয়ে উঠতে চাইলে, সংখ্যালঘুরা তাঁকে মানবে কেন? তাছাড়া তিনি তিন তালাক সহ বিভিন্ন বিষয়ে জলসাগুলোয় যে বক্তব্য রাখেন, তা যথেষ্ট রক্ষণাত্মক এবং প্রতিক্রিয়াশীল।
6) এ রাজ্যের মুসলমান সমাজের রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন আছে। তাঁরা অনেকেই স্রেফ বিজেপিকে আটকাতে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছেন গত লোকসভায়। তাঁদের ভোট আব্বাস টানতে পারেন কিনা, সেটাই এখন দেখার। অন্যদিকে ফুরফুরা শরিফও এতদিন তাঁদের রাজনৈতিক সামাজিক দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হলেও সক্রিয় রাজনীতিতে আসেনি। আব্বাসের সক্রিয় রাজনীতিতে আসা ফুরফুরা শরিফকে আব্বাস সিদ্দিকি এবং ত্বহা সিদ্দিকি— এই দুই ভাগে বিভক্ত করে দিয়েছে।
7) আব্বাস এবং তাঁর দল ISF শুধু মুসলিমদের কথা বলছেন না। দলিত, আদিবাসী, নিম্নবর্গের হিন্দুদের অধিকারের কথাও বলছেন। কিন্তু এ দেশের মুসলমান এবং দলিতরা তাঁদের অধিকার নিয়ে অত্যন্ত সচেতন। দলিত এবং মুসলমানদের ক্ষমতার প্রশ্নে বেশ কিছু দ্বন্দ্ব আছে। তাঁরা হঠাৎ আব্বাসের কথায় চলবেন, এমনটা মনে হয় না।
8) আব্বাস সিদ্দিকি ভোট পাটিগণিতে কী প্রভাব রাখবেন, তা বলার সময় এখনও আসেনি। অনেকরকম সম্ভাবনার জন্ম হতে পারে। তরুণ ছাত্র-যুবরা জোটের পক্ষে ভোট দিলে জোটের ভোট শতাংশ এবং আসন বাড়তে পারে। দক্ষিণবঙ্গে সংখ্যালঘু ভোটের একটা অংশও জোটের দিকে ফিরতে পারে। আবার আব্বাস তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট কাটলে এবং বিজেপির দিকে কিছু অতিরিক্ত হিন্দু ভোট গেলে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা হতে পারে। তবে এগুলো সবই সম্ভাবনার কথা।
বাংলায় ক্ষমতায় এলে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই নয়া নাগরিকত্ব আইন CAA চালু করার কথা বললেন অমিত শাহ
করোনা সম্পর্কে ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি সোশাল মিডিয়ায়। এও এক মহামারীই বটে।
এটা খাপ নয়, প্রকৃত অর্থেই
8 জুন কতটা সচেতন শহরবাসী? সোমবারের কলকাতা কেমন ছিল?
দেশের করোনা পরিস্থিতিকে জাতীয় বিপর্যয় বলছে শীর্ষ আদালত, আর সরকার প্রধানমন্ত্রীর বন্দনা করে যাচ্ছে।
বাংলার ত্রস্ত নীলিমায় আবার দাঁড়াতে হবে কে ভেবেছিল?