অবশেষে ট্রাম্প জমানার অবসান। নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন সকলকে নিয়ে চলার বার্তা দিলেন। শোনা গেল ঐক্য, ভদ্রতা, বিজ্ঞানমনস্কতারপুনঃপ্রতিষ্ঠার কথা। বাস্তবে কী প্রত্যাশিত? 4নভেম্বর (রবিবার) www.4thpillars.com এই নিয়েই একটা আলোচনার আয়োজন করেছিল। এই আলোচনায় সুদীপ্ত সেনগুপ্তর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক প্রণয় শর্মা এবং ভারতীয় মার্কিন তিতাস রায় ও সোহম সেনগুপ্ত।
1) নয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে জো বাইডেনের জয়ে এতদিন সঙ্কুচিত হয়ে থাকা নানাভাবে সংখ্যালঘু এবং দুর্বলতর অংশের অধিকাংশ আমেরিকান স্বস্তিবোধ করছেন। এমনকি অভিবাসী ভারতীয়রাও নির্বাচনের এই ফলাফলে মোটের উপর খুশি।
2) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে জো বাইডেন এবং পরবর্তী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের মুখে, শান্তি, বিজ্ঞান, আশা, একতার কথা শোনা গেছে। এগুলো থেকে তাঁদের প্রতি প্রত্যয় জাগছে। তাঁরা বলছেন, প্রতিপক্ষ মানেই শত্রু নয়। একজন জনপ্রতিনিধির কাছে মানুষ এটাই তো শুনতে চায়।
3) মার্কিন সেনেট এবং হাউস অব রিপ্রেসেন্টেটিভের আসন বিন্যাস কেমন হবে তা আগামী জানুয়ারি মাসের আগে বলা মুশকিল। সেনেটে রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে, বাইডেনকে বিভিন্ন নীতি নির্ধারণে রিপাবলিকানদের একাংশের সাহায্য নিতে হবে। তাই হয়তো আগামীদিনে তিনি সবাইকে নিয়েই চলার চেষ্টা করবেন।
4) বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ট্রাম্প সিদ্ধান্তহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। স্বাস্থ্য, পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়েও তিনি বারবার অবস্থান বদলেছেন। এতে গোটা বিশ্বে আমেরিকার সম্মানহানি হয়েছে। আশা করা যায়, প্রায় 40 বছর মূলস্রোতের রাজনীতিতে থাকা, পোড়খাওয়াবাইডেন এই সমস্ত বিষয়ে স্পষ্ট অবস্থান নিতে পারবেন।
5) গোটা নির্বাচনটা প্রায় ট্রাম্পের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে— একটা গণভোটের চেহারা নিয়েছিল। যে শ্বেতাঙ্গরা চার বছর আগে অনেক আশা নিয়ে ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন, তারা পরে দেখলেন তাদের অনেকের চাকরি গেছে, জীবনযাত্রার মান নেমে গেছে। এরা কিন্তু এবার আর ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দেননি।
6) এই নির্বাচনের ফলাফল থেকে একটা বার্তা পাওয়া গেল যে, বেশিদিন ঔদ্ধত্য কিংবা অপরকে হেয় করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। "ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার' আন্দোলনে কালো মানুষরা দেশের বাকি মানুষদের মতো বাঁচার দাবি জানিয়েছিলেন। সেটা নিয়েও উপহাস করা হয়েছিল। কিন্তু এই ভোটে এগুলোর বিরুদ্ধে একটা বার্তা দেওয়া গেল। হয়তো ট্রাম্পের তৈরি করে যাওয়া সমস্যাগুলোর এখনই কোনও সমাধান হল না, কিন্তু একটা বার্তা তো দেওয়া গেল।
7) এতদিন অনেকেই বলতেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট প্রতিবন্ধী কিংবা সংখ্যালঘু মানুষকে হেয় করতে পারলে আমরা কেন পারব না? বর্ণ কিংবা শ্রেণী— একটা বিদ্বেষ ছড়িয়ে যাচ্ছিল মানুষের মনে। সেটা হয়তো এখনই পুরোপুরি বদলাবে না, কিন্তু কিছু মানুষ সবকিছু আবার পুনর্বিবেচনা করবে। আর এটা অন্তত বলতে পারবে না যে, প্রেসিডেন্ট বলছে তাই আমরাও বলছি। বাইডেনের কথা থেকে অন্তত এমনটা মনে হচ্ছে।
8) ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিসের জয় অনেক মেয়ে এবং অ-শ্বেতাঙ্গ মানুষকে উদ্দীপ্ত করবে যে, উনি পারলে আমরাও পারব। আগামীদিনে এই ট্রেন্ড আশা করি বজায় থাকবে। কালো মানুষরা, এশিয়া-আফ্রিকার অভিবাসীরাবাইডেন এবং তাঁর টিমের মধ্যে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব দেখছেন। এটাই তাঁদের কাছে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
9) বাইডেনের আমলে চিনের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক অনেকটাই ভাল হবে। কিন্তু, 90-এর দশকে আমেরিকার সঙ্গে চিনের যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, তেমনটা হবে বলেও মনে হয় না। খুব সম্ভবতবাইডেন চিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন, আর সেখানে বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। এই বৈঠকের ফলাফল অন্যান্য অনেক সিদ্ধান্তের উপরে ছাপ ফেলবে।
10) ট্রাম্প অহেতুক অভিবাসীদের গোটা আমেরিকার শত্রু বলে দাগিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। অভিবাসন আইন আমেরিকায় এমনিতেই কড়া। কিন্তু বিভাজন সৃষ্টির জন্য অভিবাসী কিংবা মার্কিন নাগরিক মুসলমানদের ওপর তিনি কোপ নামিয়ে এনেছেন। বাইডেন আমলে নিশ্চয়ই এসব কিছুর পরিবর্তন ঘটবে। ভারতের বিশাল বাজারের কথা মাথায় রাখলে, ভারত-আমেরিকার পারস্পরিক সম্পর্কে বিশেষ কোনও বদল আসবে বলে মনে হয় না।
লকডাউনের উদ্দেশ্যকে সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে দিল প্রবাসী শ্রমিকদের ঘরে ফেরা।
কলকাতার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সাংবাদিকদের চোখে কেমন সেই লকডাউন চিত্র, আসুন দেখে নেওয়া যাক।
বিচারও কি দলীয় রাজনীতির অঙ্গ?
সবাই জানত করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসবে এবং সেটা আরও মারাত্মক হবে। তবু কেউ সচেতন হল না।
সামাজিক বার্তা দেওয়া আদালত বা সরকারের কাজ নয়।
লুপ্ত দুই হাতের বয়ান