×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • ‘দেশসেবক’ চেয়ারম্যান, তবু কদর নেই দেশনায়কের!

    শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত | 25-11-2021

    প্রতীকী ছবি।

    নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস (Netaji Subhash Chandra Bose)-এর 125তম জন্মজয়ন্তী উদযাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Narendra Modi) চেয়ারম্যান করে একটি কমিটি  হয়েছে। এই কমিটি গঠনের জন্য গেজেট নোটিফিকেশন (Gazette Notification) জারি হয়েছে গত 8 জানুয়ারি। 9 জানুয়ারী, 2021 প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (PIB) এই কমিটির কথা ঘোষণা করেছে। তবে ওই পর্যন্তই। তার পর আর এই কমিটি কোনও বৈঠক এ পর্যন্ত হয়নি। অথচ, নেতাজির 125তম জন্মজয়ন্তী আসতে চলেছে। এটা কি নেতাজির প্রতি অসম্মান প্রদর্শন নয়? এই প্রশ্ন তুলেছেন বোস পরিবারের মুখপাত্র ও নেতাজির 125তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্য চন্দ্র বোস (Chandra Bose)‘এটা জাতির লজ্জা’ বলে মন্তব্য করেছেন চন্দ্র বোস।

     

     

    নেতাজির 125তম জন্মজয়ন্তী নিয়ে গঠিত কমিটিকে ‘জাম্বো কমিটি’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। এই কমিটির চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ ছাড়াও কমিটিতে রয়েছেন নেতাজি কন্যা অনিতা বোস পাফ, নেতাজি পরিবারের সদস্য অর্ধেন্দু বোস, রেণুকা মালাকার, চন্দ্র বোস, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিদেশমন্ত্রী রাজনাথ সিং, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার, বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা, অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী, রাজ্যসভার সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়-সহ মোট 85 জন। চন্দ্র বোসের মন্তব্য: ‘‘কমিটির এত জন সদস্যের মধ্যে কেউ এক জন বললেন না, কেন বছর ঘুরতে চললেও নেতাজির 125তম জন্মজয়ন্তী উদযাপনের রূপরেখা নিয়ে, পরিকল্পনা নিয়ে কেন প্রধানমন্ত্রী কোনও বৈঠক ডাকলেন না? আমার প্রশ্ন, তা হলে এই কমিটি করার কী দরকার ছিল?’’ তবে বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার ও রাজু বিস্তা অবশ্য জানিয়েছেন, কোনও বৈঠক কমিটি গঠনের পর থেকে হয়নি। জগন্নাথ সরকারের কথায়: ‘‘বৈঠক হওয়া উচিত ছিল।’’

     

     

    আসলে বার বার দেখা গিয়েছে, নেতাজিকে নিয়ে দেশবাসীর যে আবেগ সেই আবেগ কংগ্রেস সরকারের কোনও কালেই ছিল না। এমনকি, নেতাজির জন্মদিনে জাতীয় ছুটিও এখনও পর্যন্ত ঘোষণা করল না দিল্লির কোনও সরকার। তবে এরই মধ্যে নেতাজিকে নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের আগ্রহ, চলতি বছর তাঁর নেতাজির বাড়িতে আসা, তার পর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল গ্রাউন্ডে নেতাজির জন্মদিন 23 জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিত থাকার ফলে মনে হয়েছিল, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার হয়তো নেতাজির ক্ষেত্রে কংগ্রেসের চাইতে খানিকটা অন্য রকমের ভাবনা নিয়ে চলতে চাইছে। কিন্তু চন্দ্র বোসের বক্তব্যের পর বোঝা যাচ্ছে, নেতাজিকে নিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির ভাবনার কোনও পার্থক্য নেই। আসলে বিধানসভা নির্বাচনের আগে সবটাই বিজেপির নির্বাচনী চমক। চন্দ্র বোস বলছেন, ‘‘আমার মনে হয়েছে বিজেপি হয়তো ভাবছে, বাংলার ক্ষমতায় আসা হল না, তাই এ সব করে আর লাভ কী?’’

     

    আরও পড়ুন: রাজাধিরাজ কি তবে সত্যিই ফকির হলেন?

     

    চন্দ্র বোস অভিযোগ করে বলেন, ‘‘নেতাজিকে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ রেল মিউজিয়াম করার জন্য আমি নিজে প্রধানমন্ত্রীকে চার বার চিঠি লিখেছি। প্রাক্তন ও বর্তমান রেলমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছি। কোনও উত্তর পাইনি। কমিটির বৈঠক যাতে হয় তার জন্য চিঠি লিখেছি, কোনও চিঠির আজ পর্যন্ত উত্তর পাইনি।’’ চন্দ্রবাবু জানান, 2020-র 21 অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লায় পতাকা তুললেন আজাদ হিন্দ সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে। বললেন, প্রতি বছর এই দিনটি উদযাপন হবে, পতাকা তোলা হবে। এই বছর প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে এলেন না। রাষ্ট্রপতিও এলেন না। 14 এপ্রিল, 1944-এ ব্রিটিশদের পরাজিত করে আজাদ হিন্দ বাহিনী ভারতের মাটিতে প্রথম স্বাধীনতা ঘোষণা করে। কর্নেল শওকত মালিক মইরাংয়ে পতাকা তোলেন। সেই দিনটিও এবার উদযাপন হল না। তাঁর মন্তব্য: ‘‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে 14 এপ্রিলের অনুষ্ঠানে যেতে অনুরোধ করেছিলাম। তিনি যাননি।’’ চন্দ্র বোস এখন অপেক্ষায় আছেন, 1943 -এর 30 ডিসেম্বর আন্দামানে নেতাজি পতাকা তুলেছিলেন, সেখানে প্রধানমন্ত্রী যান কি না সেটা দেখার জন্য।

     

     

    কংগ্রেসের সঙ্গে নেতাজির বিরোধ ছিল। 1939-এ নেতাজি কংগ্রেস ছেড়ে ফরোয়ার্ড ব্লক নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। মহাত্মা গান্ধী যখন ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত স্বাধীনতার সপক্ষে মতপ্রকাশ করছেন, নেতাজি তখন তার বিপক্ষে ছিলেন। আমরা দেখেছি ভারতীয় রাজনীতিতে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস খুব একটা প্রাসঙ্গিকতা পাননি। তিনি ও তাঁর রাজনীতির মূল আদর্শ ছিল অসাম্প্রদায়িকতা।

     

     

    তা হলে কি নরেন্দ্র মোদী বিজেপির উপর থেকে সাম্প্রদায়িক তকমা হঠাতে এবং বাঙালির মন জয় করতেই নেতাজির 125তম জন্মজয়ন্তী কমিটি গড়েছিলেন? কলকাতায় নেতাজির বাড়ি এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী? এই প্রশ্নে চন্দ্র বোসের উত্তর, ‘‘কোনও কিছুই যে রাজনীতির ঊর্ধে নয়, সেটা এখন বোঝা যাচ্ছে।’’


    শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত - এর অন্যান্য লেখা


    ভূত চতুর্দশীকে কেন্দ্র করে নানা ধর্মীয় রীতি সংস্কারের মধ্যে উৎসবের আদলেও একটা গা-ছমছমে ভাব এখনও রয়েই

    ছিন্নমূল হয়ে ওপার থেকে এপার বাংলায় এসে বাজি বানিয়ে বুড়িমা কালীপুজোর মহালগ্নে বাঙালির শ্রেষ্ঠ ব্র্যান

    জ্বালানির দামবৃদ্ধির সঙ্গে এবারের অতিবৃষ্টি যুক্ত হওয়ায় শাক সবজি অগ্নিমূল্য, এখনই দাম কমার আশা নেই।

    প্রকৃতির ক্যানভাসে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মণীশ মিত্রের দেবী মঙ্গলকাব্য

    গাড়ির গতি কমিয়েই কলকাতার পথ দুর্ঘটনা ও সেই কারণে মৃত্যু রোখা যায়, মত বিশেষজ্ঞদের।

    অস্তিত্ব রক্ষায় মরিয়া সিপিএম বিজেমূল ভুল বলে মেনেও যেন মানতে পারছে না।

    ‘দেশসেবক’ চেয়ারম্যান, তবু কদর নেই দেশনায়কের!-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested