×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • রাজপথে কৃষক 4: সংস্কার প্রয়োজন, তবে তা কর্পোরেটের স্বার্থে নয়

    রঞ্জন রায় | 25-12-2020

    সোনার ফসল ফলায় যে তার...

      

    কৃষি বিল নিয়ে সরকার ও কৃষকদের মধ্যে সংঘাতের কারণগুলো আগের দুই পর্বে আলোচনা করেছি। এ বার দেখা যাক, কৃষি ক্ষেত্রে কী ধরনের সংস্কার প্রয়োজন

     এই তিনটে আইন যেন মাথা ব্যথা সারাতে মাথা কেটে ফেলা গোছের সংস্কার। সরকারি মান্ডি ব্যবস্থায় গলদ আছে। সেগুলো না শুধরে সরকারের ভূমিকাই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে এই আইনে। বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী এবং স্বরাজ ইন্ডিয়া দলের প্রতিষ্ঠাতা যোগেন্দ্র যাদবের ভাষায়, এই আইন এপিএমসি অ্যাক্ট ও মান্ডি ব্যবস্থার ভাঙা ছাদের ফুটো সারানোর বদলে কিষানদের বাড়ি থেকে বের করে খোলা আকাশের নীচে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে

     তাহলে সমাধান?

    *  সবচেয়ে আগে দরকার মান্ডি ব্যবস্থা বন্ধ না করে গোটা দেশের জন্যে বিস্তৃত করা। প্রথম পর্যায়ে কমিশন ফর এগ্রিকালচারাল কস্টস অ্যান্ড প্রাইসেস (সিএসিপি) এর অনুশংসা অনুযায়ী 42,000 মান্ডির এক নেটওয়ার্ক যাতে কৃষকেরা ক্ষেত থেকে 5 কিলোমিটারের মধ্যে একটি মান্ডি পায়

    *  দরকার এফসিআইয়ের গোডাউনের চেন তৈরি করা, এটা আদানি আম্বানিদের হাতে ছেড়ে না দিয়ে সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো। এখনও কৃষি পরিকাঠামো এবং গবেষণায় সরকারি বিনিয়োগ জিডিপির এক শতাংশের বেশি নয়

    * কৃষকেরা যাতে ধান-গম ছাড়াও অন্য ফসল, যেমন ফল-ফুল-শাকসব্জি চাষের দিকে যান, তার জন্যে নগদ ইনসেনটিভ দেওয়া। ষাটের দশকের শেষে তৎকালীন সরকার অনিচ্ছুক কৃষকদের ওই উচ্চফলনশীল চাষ এবং গোবরের বদলে কেমিক্যাল সার ব্যবহার করতে অমনই ইনসেনটিভ দিয়ে ফল পেয়েছিল

    * দরকার খাদ্য সুরক্ষা এবং কৃষকদের স্বার্থের কথা ভেবে রক্ষাকবচ হিসেবে এমএসপিকে আইন করে বেস প্রাইস করে দেওয়া এবং অন্য ফসল যেমন ফল-ফুল-শাকসব্জিকেও এর অধীনে আনা

    * এসেনশিয়াল কমোডিটিজ অ্যাক্টের পরিবর্তন বাতিল করে অতি আবশ্যক বস্তু, বিশেষ করে খাদ্যশস্যের ব্যাপারে মজুতদারিকে নিয়ন্ত্রণ করা

    *  কন্ট্রাক্ট ফার্মিং এর চুক্তি ত্রিপাক্ষিক হোক। তাতে চাষি এবং কর্পোরেট ক্রেতার সঙ্গে সরকারও গ্যারান্টার হোক

    * ফসল বিমা সুরক্ষা কোম্পানি কর্পোরেটের হাতে ছেড়ে না দিয়ে সরকার আগের মত দায়িত্ব নিক। বিমা কোম্পানি সরকারের জন্যে মুনাফা দেয়, এটা প্রমাণিত

    * মান্ডি এবং ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার পরিচালনা ব্যবস্থায় দুর্নীতি ঠেকাতে আন্তরিক চেক সিস্টেম মজবুত করা হোক

      শেষ করি কিছু প্রশ্ন ও উত্তর দিয়ে

     

    আরও পড়ুন: রাজপথে কৃষক 1: পারস্পরিক অবিশ্বাস ও দু’টো আলাদা ইকোসিস্টেমের লড়াই

     

     

    আন্দোলনে কেবল পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও পশ্চিম উত্তর প্রদেশের চাষিরাই বেশি কেন?

    * একটু পেছনে ফেরা দরকার। নরম্যান বোরলাগের দিশা নির্দেশে সবুজ বিপ্লব শুরু হয়েছিল পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায়। কারণ ওখানকার মাটি এবং সেচের নেটওয়ার্ক দেশের মধ্যে এই কাজের জন্যে সবচেয়ে ভাল বলে উনি মনে করেছিলেন। ভাকরা-নাঙ্গাল বাঁধ এবং নলকূপ খননের এতে বড় ভূমিকা ছিল। গোটা দেশের কৃষক অনেক পরে পাঞ্জাবকে অনুসরণ করেছে। তার ফলে পাঞ্জাবে দ্রুত গড়ে উঠেছে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত কৃষকদের এক সম্পন্ন সমাজ। লাগোয়া পশ্চিম উত্তরপ্রদেশেও এর ছোঁয়া। যদিও কৃষিতে নিযুক্ত চাষিদের 30 শতাংশ কৃষি শ্রমিক

    * গত শতাব্দীর ইকোসিস্টেমে পাঞ্জাব হরিয়ানাই সরকারের খাদ্য ভান্ডারে সবচেয়ে বেশি উদ্বৃত্ত ফসল জমা করে গোটা দেশকে খাইয়েছে। কয়েক বছর আগেও ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার গমের মোট 70 শতাং এবং চালের 60 শতাংশ যোগাত ওই তিনটি অঞ্চল

    *   কৃষিতে ট্যাক্স নেই, অথচ গ্যারান্টি রয়েছে যে মান্ডিতে অবিক্রীত চাল-গম সরকার এমএসপি দরে কিনে নেবে, যা বাজার দরের চেয়ে একটু বেশি। ফলে এই অঞ্চলের কৃষকদের গড়পড়তা আয় গোটা দেশের তুলনায় অনেক বেশি। যদি এক একরে একটি ফসলে দেশের অন্য এলাকায় কৃষকের গড়পড়তা আয় বছরে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা, তো পাঞ্জাব-হরিয়ানা-পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে এই আয় 14000 টাকা

    ওরা চিন্তিত, নতুন আইনে ওদের ‘সুরক্ষিত’ ইকোসিস্টেম ভেঙে যাবে

    *  মিডিয়ায় তো জ্ঞানীগুণীরা বলে চলেছেন মএসপির সুবিধে পায় দেশের মাত্র 7 শতাং কৃষক। এমনকি বিজেপির এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত শান্তাকুমার কমিটির বক্তব্যও তাই। কারণ ওই 7 শতাং কৃষকই শুধু এপিএমসি সরকারি মান্ডিতে ফসল বেচে। তাহলে অমন মান্ডি বা এপিএমসি ব্যবস্থার প্রয়োজন কী? ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার জন্যে করদাতাদের পয়সা নষ্ট করারই বা কী মানে? এই কমিটি 2015 সালে সুপারিশ করে, কৃষকদের থেকে শস্য এফসিআইয়ের গোডাউনে রাখার কাজটা রাজ্য সরকার এবং প্রাইভেট সেক্টরের হাতে তুলে দেওয়া হোক

    * তাই তো বর্তমান সরকার আইন বদলে দিচ্ছে। এবং 2019-এর সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং তার আগে নীতি আয়োগ এই কথাই বলেছিলেন

    * ওরা কি মিথ্যা কথা বলছেন?

    *   না; মিথ্যা নয়, কিন্তু অর্ধসত্য। লুকোনো হচ্ছে যে গোটা দেশের 7,000 মান্ডির 4,000 এর ওপর শুধু পাঞ্জাব হরিয়ানাতেই রয়েছে। ফলে মান্ডিতে যাওয়া 7 শতাংশ এর 80 শতাং কৃষক  ওই এলাকার। এবং ওই অঞ্চলের 90 শতাং কৃষক মান্ডিতেই ফসল বিক্রি করেন


    আরও পড়ুন: রাজপথে কৃষক 2: গোষ্ঠী-চেতনা দিয়েই যেতে হবে সমস্যার মূলে

     

    ধনী কৃষকরা আন্দোলন করছেন কেন?

    এই রহস্যের চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের “ছিনিয়ে খায়নি কেন” গল্পটিতে। যোগী ডাকাতের নেতৃত্বে দুর্ভিক্ষে অনাহারে থাকা মানুষ টুপ করে রাস্তায় মরে পড়ে গেছে কিন্তু ছিনিয়ে খাওয়ার কথা ভাবেনি। বরং একবার লুঠের ভাত পেটে পড়ার পর গুদাম লুঠতে রাজি হয়েছে। সাধারণ মানুষ লড়াইয়ে নামে দারিদ্র্য থেকে নয়, সেটা মেনে নেয় ভবিতব্য বা বিধির বিধান মেনে। লড়তে রাজি হয় যে সুবিধা রয়েছে (বর্তমান ইকোসিস্টেম) তা ধ্বংসের সম্ভাবনা দেখলে

    সিপাহী বিদ্রোহে নানাসাহেব, তাঁতিয়া টোপী, লক্ষ্মীবাঈ ও কুঁয়র সিং কেন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন?

    এরা দেখছে মোদী মুখে মান্ডি এবং এমএসপি থাকার কথা বললেও, অসম প্রতিযোগিতার ফলে মান্ডি এবং এমএসপি ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাবে। বেশি দামের আশায় উত্তরপ্রদেশ ও বিহার থেকে কাঁড়ি কাঁড়ি ফসল পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় এসে বাজারে খোলা বাজারে দাম কমিয়ে দিচ্ছে। কাজেই এমএসপি বাদ দেওয়া নয়, বরং তাকে সমস্ত রাজ্যে চালু করা দরকারি

     

    মান্ডির বাইরে খোলা বাজারে বিক্রি করলে কৃষকেরা ভাল দাম পাবেন?

    অন্তত ন’টি রাজ্যে এপিএমসি থেকে বেরিয়ে গেছে। কারণ কৃষি রাজ্যের এক্তিয়ারে। কিন্তু তাদের আয় কি দ্বিগুণ হয়েছে? বিহারে নীতিশ কুমার 15 বছর আগে ওই কৃষি উৎপাদন এবং বিপণন কমিটি (এপিএমসি) আইনের থেকে বেরিয়ে এসেছেন। ফলটা কী হয়েছে? আজও বিহারের কৃষক এবং কৃষি ভারতে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের অন্যতম। এমএসপির ঠেকনো থাকায় যে ধানের দাম পাঞ্জাবে 1,800 টাকা কুইন্টাল, সেটা পূর্ব বিহারে অসহায় চাষিরা 1,100-1,200 টাকা কুইন্টলে বেচতে বাধ্য হয়েছেন

     

    চাষিরা কী চাইছেন?

    ওঁরা চাইছেন যে এমএসপি আইন হলে গোটা দেশের চাষিদের লাভ হবে। এই এমএসপির নীচে বেচলে শাস্তি হোক। এদের সমর্থনে কৃষি অর্থনীতিবিদ দেবিন্দর শর্মা বলছেন যে শান্তাকুমার কমিটির কৃষিকে কর্পোরেট পুঁজির অধীন করার সুপারিশ বাতিল করে কমিশন ফর এগ্রিকালচারাল কস্টস অ্যান্ড প্রাইসেস (সিএসিপি)এর রেকমেন্ডেশন মেনে নিয়ে 7,000 মান্ডির জায়গায় গোটা দেশে সংখ্যা বাড়িয়ে 42,000 করা হোক। তাহলে চাষির খেত থেকে মান্ডির গড়পড়তা দূরত্ব 5 কিলোমিটারের বেশি হবে না

    সরকার বলছে চাষিদের স্বামীনাথন কমিশনের হিসেবে বর্ধিত এমএসপি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু চাষিরা মানছে না। সত্যিটা কী?

    সরকারের বক্তব্য পুরোপুরি ঠিক নয়। স্বামীনাথন কমিশন দু’রকম উৎপাদন ব্যয়ের কথা বলেছেঃ সি-1 ও সি-2

    সি-1 = (বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ কর, বিদ্যুৎ, পরিবহণ, ডিজেল, হাল-গরু ইত্যাদি) + পারিবারিক শ্রম

    সি-2= সি-1 + অপরচুনিটি কস্ট, ( অর্থাৎ কৃষক যদি চাষে খরচা না করে ওই টাকাটা ব্যাঙ্কে রাখত বা অন্য কোনও বিনিয়োগে যা আয় করত সেটা)

    স্বামীনাথনের সুপারিশ: সরকারের উচিত চাষিদের থেকে সি-2 রাশির দেড়গুণ দামে ফসল কেনা। অর্থাৎ এমএসপি হবে সি-2 খরচের 150%চাষিরা তাই চাইছে

    কিন্তু সরকার এমএসপি হিসেবে দিচ্ছে সি-1 এর 150%

    সত্যি কি কংগ্রেস সরকারও এই ধরনের সংস্কার করে কৃষি উৎপাদন ও বিপণনকে খোলা বাজারের আওতায় আনতে চেয়েছিল?

     পুরোপুরি সত্যি

    এমনকি গত 2019 কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তেহার বলছে— “Congress will repeal the Agricultural Produce Market Committee Act and make trade in agricultural produce—free from all restrictions.''

    সেই সময়, ইউপিএ-2 সরকারের আমলে বিজেপির তাবড় নেতারা কি এর বিরোধিতা করেছিলেন?

      এটাও সত্যি। আজ বিজেপি মন্ত্রীরা কৃষকদের আড়তদারদের খপ্পর থেকে বের করে আনার কথা বলছেন, আন্দোলনের পেছনে আড়তদারদের টাকা বলে আঙুল তুলছেন। কিন্তু 2012-র 6 এবং 7 ডিসেম্বর বিজেপির দুই প্রয়াত সাংসদ সুষমা স্বরাজ ও অরুণ জেটলি কংগ্রেসের এপিএমসি তুলে দেওয়ার বিরুদ্ধে মান্ডি ব্যবস্থার পক্ষে জোরালো যুক্তি সাজিয়ে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন। ইউটিউবে ওঁদের চমৎকার যুক্তিতর্ক শুনতে পারেন

    o   জেটলির বক্তব্য ছিল (6 ডিসেম্বর, 2012)আপনারা ক্যাপিটালিস্ট মার্কেটের ডায়নামিক্স কিছুই বোঝেননি। আড়তদার নামক স্থানীয় ছোটখাট মিডলম্যানদের সরিয়ে দিলে তার জায়গা নেবে কর্পোরেটের রাঘববোয়াল মিডলম্যানেরা। চাষির সর্বনাশ হবে

    o   সুষমার বক্তব্য (5 ডিসেম্বর, 2012) আড়তদারেরা স্থানীয়, চাষিদের পরিচিত এবং ওদের ইকোসিস্টেমের অংশ । এরা ওদের সময়ে অসময়ে সার-বীজ, নগদ টাকা ধার এবং দরকার হলে মেয়ের বিয়েতে সাহায্য সবই করে

    o   খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত 15 এপ্রিল, 2016 সালে ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল মার্কেটের অনলাইন কেনা বেচার প্ল্যাটফর্ম বা e-NAM এর উদ্বোধন করতে গিয়ে জোর দিয়ে বলেন যে আড়তদারেরা কৃষি পণ্য কেনাবেচার গুরত্বপূর্ণ অঙ্গ। এরাও এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে লাভবান হবে। নতুন আইনে কয়েক হাজার আড়তিয়া কাজ হারাচ্ছে। এরা যে সক্রিয় ভাবে আন্দোলনে সামিল হবে তাতে অবাক হওয়ার কী আছে?

     

    আরও পড়ুন: রাজপথে কৃষক 3: নীল আকাশে বাজপাখি ও টিয়া একসঙ্গে উড়বে?

     

    উপসংহার

    কৃষি অর্থনীতিবিদ দেবেন্দ্র শর্মা সম্প্রতি বিভিন্ন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলছেন, এই কৃষির খোলাবাজারের মডেলটি নতুন কিছু নয় বরং ইউরোপ আমেরিকায় অনেক আগে থেকেই পরীক্ষিত একটি ব্যর্থ মডেল। এর ফলে ওদের দেশে কৃষকদের আমদানি বছরের পর বছর কমছে এবং কৃষকেরআত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে। প্রথম বিশ্বের ওসব দেশে কৃষি এবং তার পণ্য রপ্তানি মূলত সরকারি ভর্তুকি নির্ভর। প্রতি বছর ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন বৈঠক করে এই ভর্তুকির পরিমাণ ঠিক করে।

     

    দিল্লির জেএনইউয়ের ‘সেন্টার ফর ইকনমিক স্টাডিজ অ্যান্ড প্ল্যানিং’ এর অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হিমাংশুর বক্তব্য ভাবার মত। তিনি বলছেন, যদিও কৃষকদের মান্ডি ব্যবস্থার অদক্ষতা/ত্রুটি/আড়তদারদের কার্টেল নিয়ে প্রচুর ক্ষোভ রয়েছে, তবু তারা এটাকে তুলে দেওয়ার বদলে সংস্কারের পক্ষপাতী। বর্তমান ইকো-সিস্টেমে আড়তদারেরা গাঁয়ের কৃষকদের জন্যে তথ্য, খবরাখবর, বীজ-সার এবং কখনও কখনও বিনা কোল্যাটারালে সরল ঋণ পাওয়ার উৎস। যেভাবে ওদের প্রতিনিধিদের, মান্ডি সংগঠনের বা রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে বিলগুলো ওদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হল তাতে ওরা ক্ষুব্ধ। এর আগে কৃষি উৎপাদন বা বিপণন নিয়ে যত সংস্কার হয়েছে তাতে সবসময় স্টেক-হোল্ডারদের মতামত নেওয়া হয়েছে।

     

    গত 11 ডিসেম্বর মুখ খুলেছেন বিশ্ব ব্যাংকের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা কৌশিক বসু। তিনি বলেছেন, ভারতের কৃষিতে সংস্কার দরকার। কিন্তু এই তিনটে আইন কর্পোরেটের স্বার্থে তৈরি এবং কৃষকদের জন্যে ক্ষতিকর। তাই সরকার যদি জেদ ছেড়ে কৃষকদের কথা মেনে এই আইন তিনটে বাতিল করে এবং কৃষকদের প্রতিনিধি ও অর্থনীতিবিদদের এক কমিটি বানিয়ে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে নতুন বিল আনে তাহলে তাঁর গৌরব বাড়বে বই কমবে না


    রঞ্জন রায় - এর অন্যান্য লেখা


    শিল্পপতিদের ব্যাঙ্ক খুলতে অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। এর ফলে ভারতের ব্যাঙ্কিং সেক্টর মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত

    দাঙ্গার সময় গান্ধীজির মুসলিম শরণার্থীদের সাহায্যে হিন্দু যুবকদের এগিয়ে আসার আহ্বানে খেপেন সাভারকর।

    সাভারকর কি “কুইট ইন্ডিয়া” আন্দোলনের বিরোধিতা করে ব্রিটিশের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন?

    বিজ্ঞানের নবতম শাখা কামধেনু গৌ-বিজ্ঞানের জন্ম হল!

    নারীদিবস বছরে একদিন কেন? এটা আলাদা করে পালন করার দরকার কী? কই, ঘটা করে পুরুষদিবস তো হয় না!

    সেলুলার জেলের নাম পালটে তাঁর নামে রাখা হল। এ বার দাবি তাঁকে ‘ভারতরত্ন’ দেওয়া হোক।

    রাজপথে কৃষক 4: সংস্কার প্রয়োজন, তবে তা কর্পোরেটের স্বার্থে নয় -4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested