×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • স্কুল খোলার নির্দেশ আছে, সাফাইয়ের লোক নেই!

    শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত | 27-10-2021

    প্রতীকী ছবি

    আগামী 16 নভেম্বর 2021 থেকে রাজ্যের সব স্কুল খোলার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের এই নির্দেশের ফলে আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে হবে(Offline classes in West Bengal) ওই নির্দেশে উল্লেখ করা হয়েছে আগামী 15 নভেম্বরের মধ্যে সমস্ত স্কুলের ভবন ও ক্লাসরুম পরিষ্কার করতে হবে, স্যানিটাইজ করতে হবে কিন্তু প্রশ্ন উঠছে আদৌ কি দীর্ঘ প্রায় দু'বছরের কাছাকাছি স্কুলগুলি বন্ধ থাকার পর এত দ্রুত সব সরকারি, সরকার পোষিত স্কুল পরিষ্কার করে ফেলা সম্ভব? শুধু এককালীন পরিষ্কার করা নয়, নিয়মিত সাফাই করে কোভিড বিধির মানদণ্ড অনুযায়ী পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাই আসল চ্যালেঞ্জ।

     

    সরকারি স্কুল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর বক্তব্য, সরকারি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নেই হাতে গোনা যে কয়েকটি স্কুলে ঝাড়ুদার কর্মীরা রয়েছেন তাঁরাও চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত নয় একই কথা বলেছেন শাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিক্ষা পাপিয়া সিনহা তিনি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে স্কুল চত্বর অপরিষ্কার অবস্থায় ফেলে রাখার অভিযোগও করেছেন কারণ ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের আরসি-ডিসি কেন্দ্র এবং গণনাকেন্দ্র হয়েছিল শাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুল তাই উপনির্বাচন-পর্ব মিটে যাওয়ার পরেও বহুবার নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেও স্কুলের প্রাঙ্গণ, ক্লাসরুম স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পরিষ্কার করাতে পারেননি বলে অভিযোগ করছেন

     

    সাফাইয়ের কাজ চলছে স্কুলে

     

    এই একই সমস্যার কথা বলেছেন অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স এন্ড হেডমিস্ট্রেস-এর সাধারণ সম্পাদক ও কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাইস্কুল, মথুরাপুর, দক্ষিণ 24 পরগনার প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি তাঁর অভিযোগ আরও গুরুতর তিনি বলেছেন, ‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে তাঁদের স্কুল ও দক্ষিণ 24 পরগনার বহু স্কুলের ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বহু স্কুলবাড়ি বিপর্যস্ত হয়ে রয়েছে ইয়াসের প্রচন্ড ঝাপ্টার পর তাই এসব ঠিক না করে কীভাবে আগামী 16 নভেম্বর থেকে স্কুলে ক্লাস শুরু করা যাবে?’

     

    আরও পড়ুন:যখন খুশি ক্লাস, প্রশ্ন করলেই গেট আউট

     

    তবে এরই মধ্যে কলকাতার বেশ কিছু বেসরকারি স্কুল ক্লাসরুম পরিষ্কার করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেতারা স্কুলের তহবিল থেকে টাকা খরচ করে স্কুল পরিষ্কার করার কাজ করছেতারা এটা করতে পারছে কারণ পড়ুয়াদের কাছ থেকে এই সমস্ত বেসরকারি, ইংরেজি মাধ্যম স্কুল মাসে মোটা টাকা স্কুলে পড়ার জন্য নিয়ে থাকেকিন্তু সরকারি বা সরকার পোষিত স্কুলের আয় তো এইভাবে হয় নাতাদের সরকারের ওপর ভরসা করেই থাকতে হয় তাই সমস্যাটা সেদিক থেকে বড় আকার নিচ্ছে

     

    পশ্চিমবঙ্গ সরকারি স্কুল শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু রীতিমতো ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছেন, ‘রাজ্যে 39টি সরকারি স্কুল রয়েছেস্কুলপিছু 10 থেকে 16জন গ্রুপ-ডি কর্মচারি থাকার কথা কিন্তু বেশিরভাগ সরকারি স্কুলে এক থেকে তিনজনের বেশি গ্রুপ-ডি কর্মী নেই এর মধ্যে কেউ পিওন, কেউ ঝাড়ুদার, কেউ দারোয়ান তাই কাদের দিয়ে 15 নভেম্বরের মধ্যে স্কুলের ক্লাসরুম পরিষ্কার করা হবে? সরকারি ঘোষণা সরকার করেছেকিন্তু সরকার সব জানে কোন স্কুলে ক’জন ঝাড়ুদার আছেতারপরও তাহলে কভাবে সরকার এই নির্দেশ দেয়? তাই আমাদের মনে হচ্ছে কোনওভাবে 16 নভেম্বর থেকে স্কুলের ক্লাস শুরু হলেও খুব বেশিদিন এইভাবে ক্লাস চালানো সম্ভব নয়এখন হয়তো একশো দিনের কাজের লোক বা বাইরের লোক দিয়ে এক-দু'দিন স্কুলের ক্লাসরুম পরিষ্কার করিয়ে দেবেতারপর?’

     

    এদিকে শাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া সিনহার সঙ্গে এই প্রসঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘আমার স্কুলে গ্রুপ-ডি কর্মী নেইসরকারের কাছে বলার পরেও আমি কর্মী পাইনিআমরা আমাদের স্কুলে বাংলা, ইংরেজি ও উর্দু মাধ্যমে পড়াইসরকারের অর্থাৎ PWD দফতরের দায়িত্ব আমাদের স্কুল পরিষ্কার করারকিন্তু তাদের কাছে খবর দিলে তাদের সেই কাজ আর হতে চায়নাতবে আমরা স্কুলের তরফে নিজেরাই বাইরের লোক দিয়ে ক্লাসরুম পরিষ্কার করার কাজ করেছিঅভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেছি ক্লাস শুরু করার বিষয়েঅভিভাবকরা ক্লাস শুরু হওয়ার কথা শুনে খুশি, তবে সংক্রমণের চিন্তা সন্তানদের জন্য তাঁদের মধ্যে যথেষ্ট রয়েছে সেই একই চিন্তা আমাদেরও আছে তাই চিন্তা নিয়েই এগোতে হচ্ছে, সরকারি নির্দেশকে মান্যতা দিতেই হবে।'

     

     

    স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমরা যেটা বুঝতে পেরেছি তাতে একেবারে নির্ভাবনায় স্কুল খুলে দেওয়ার মতো পরিবেশ বা পরিকাঠামো রাজ্যের সরকারি, সরকার পোষিত স্কুলে নেইবেসরকারি কিছু স্কুলে এই সমস্যা না থাকলেও সেই সংখ্যাটা নগন্যতাই এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে সেই অর্থে রাজি হচ্ছেন নাএই প্রসঙ্গে আমরা কলকাতার জিডি বিড়লা স্কুলের অভিভাবক সংগঠনের নেতা রাজীব ঘোষকে প্রশ্নকরলে তিনি জানান, ‘আমরা চাইছি সমস্ত ছাত্রীর আগে করোনা টিকা নেওয়া হোকতারপরেই তাদের স্কুলে ক্লাস করার জন্য ডাকা হোক।'


    শিবপ্রিয় দাশগুপ্ত - এর অন্যান্য লেখা


    প্রকৃতির ক্যানভাসে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মণীশ মিত্রের দেবী মঙ্গলকাব্য

    কলকাতা পুর নির্বাচনে বামফ্রন্টের ইস্তাহার দেখে মনে হচ্ছে তৃণমূলের সাফল্য অনুসরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। 

    দুয়ারে পুর নির্বাচন, প্রচার-মিছিলে বাড়বে সংক্রমণ, আশঙ্কা চিকিৎসকদের

    নোটবন্দির পাঁচ বছর পার। এখনও মানুষের ভরসা নগদ লেনদেনেই।

    মৃত্যুর ঘটনাটাকেই অস্বীকার করে তার দায়িত্ব থেকে হাত মুছে ফেলছে কেন্দ্র রাজ্য সমস্ত সরকার

    বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের পূর্বাভাস, মাঠের ফসল প্লাবিত হয়ে মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা  

    স্কুল খোলার নির্দেশ আছে, সাফাইয়ের লোক নেই! -4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested