মাঙ্কি পক্স! দু'বছর ধরে করোনায় জেরবার হওয়ার পর এটা আবার কী নতুন উৎপাত? রোগটি 12টা দেশে ছড়িয়েছে বলছে!
মাঙ্কি পক্স নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সাবধানবাণী প্রচার শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু এটা Covid-এর মতো কোনও আনকোরা নতুন রোগ নয়। ওষুধ না থাকুক, প্রতিষেধক কী জানা আছে। মোদ্দা কথাটা হল, সরকার এবং বিজ্ঞানীদের এই নিয়ে চিন্তা করার যথেষ্ট কারণ আছে, তবে সাধারণ মানুষের এখনই উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
মাঙ্কি পক্স রোগটা আসলে কী ?
মাঙ্কি পক্স হল এক ধরনের পক্স বা বসন্ত। প্রথম বাঁদরের শরীরে রোগ সৃষ্টি করে বলে আবিষ্কৃত হলেও এটি মানুষকেও আক্রমণ করতে সক্ষম। এর প্রাকৃতিক দেশগত অবস্থান (endemic region) হল আফ্রিকা। গুটি বসন্ত বা স্মল পক্সের চেয়ে তুলনামূলক ভাবে অনেক কম ভয়ঙ্কর হলেও আফ্রিকার কঙ্গো অঞ্চলে 1200-র বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত, এবং জনা ষাটেকের মৃত্যুও হয়েছে। মাঙ্কি পক্সেরই অন্য একটি প্রজাতি দেখা গেছে আফ্রিকার নাইজিরিয়া অঞ্চলে, সেখানে অবশ্য সংক্রমণের হার, মৃত্যুহার দু'টোই কম। চিন্তা শুরু হয়েছে কারণ এটি তার নিজস্ব দেশগত অবস্থানের বাইরে, ইউরোপ, দুই আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার 12টি দেশে অল্প অল্প সংখ্যায় ছড়িয়েছে, কিন্তু মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। ভারতে এখনও কোনও কেস পাওয়া যায়নি।
এই রোগটির এখনও পর্যন্ত কোনও ওষুধ নেই। জ্বরজারি, শ্বাসকষ্ট, ইনফেকশন ইত্যাদি উপসর্গ অর্থাৎ সিম্পটম অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়। অনেকের ক্ষেত্রে নিজে নিজেই সারে। বেশ ছোঁয়াচে রোগ, সংক্রমণ ছড়ায় নিঃশ্বাস ও চামড়ার মধ্যের ছোটখাট ক্ষত দিয়ে। সংক্রমণের উৎস হল পক্স রোগীর যে কোনওরকম দেহরস। রোগীর সংস্পর্শ এবং রোগীর ব্যবহৃত জিনিসপত্র, কাপড় চোপড়, বিছানা ইত্যাদির মাধ্যমে এটি ছড়ায়। যৌন সংসর্গে অবশ্যই ছড়ায়, এবং সাম্প্রতিক ঘটনাগুলির বেশিরভাগই সেই পথে ছড়িয়েছে- বিশেষ করে পুরুষ-পুরুষ সংসর্গের ফলে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, যৌন সংসর্গ থেকে দূরে থাকলেই মাঙ্কি পক্স থেকে বাঁচা যাবে। রোগীর দেহরস থেকে দূরে থাকলে, অর্থাৎ মাস্ক, গ্লাভস, প্রয়োজন হলে পিপিই এবং সাবান দিয়ে হাত ধোয়া-এই হল বাঁচার উপায়।
এই হল আপাতত মাঙ্কি পক্স সম্বন্ধে খবর। কিন্তু এটা নিয়ে চিন্তা কেন, তা বুঝতে গেলে কিছু বিজ্ঞান এবং ইতিহাসের অবতারণা করতে হয়।
পক্স রোগ ও পক্স ভাইরাস গোষ্ঠী
সারা গায়ে পুঁজ ভরা ফোস্কা যে রোগে বেরোয়, তাকেই পক্স বলে। এটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ এবং মূলত পক্স ভাইরাস গোষ্ঠীর সংক্রমণে দেখা যায়। পক্স ভাইরাস একটি বেশ বড় গোষ্ঠী, এখনও পর্যন্ত 83 রকম বিভিন্ন ভাইরাসকে এই গোষ্ঠীভুক্ত করা হয়েছে। এই ভাইরাসগুলি কেউ কেউ মাত্র এক ধরনের প্রাণীকেই আক্রমণ করে। যেমন স্মল পক্সের ভাইরাস, যার বৈজ্ঞানিক নাম Variola-শুধুই মানুষকে আক্রমণ করে। আবার অনেক ভাইরাস আছে। যেমন- cowpox virus, monkeypox virus। এদের অস্তিত্ব প্রথমে নামধারী প্রাণীটিতে আবিষ্কৃত হলেও, পরে দেখা গেছে তারা এক জাতীয় প্রাণী থেকে অন্য জাতীয় প্রাণীতে সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম। আবার কিছু প্রাণীতে তারা দিব্যি রোগ না ঘটিয়ে পোষ মেনে থাকে, অর্থাৎ Zoonotic Reservoir-এর কাজ করে। করোনার দৌলতে এই ব্যাপারটার সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। বাদুড় থেকেই তো Covid-19 সৃষ্টিকারী ভাইরাস SARS-Cov2 মানুষে ছড়িয়েছিল! Cowpox গরু থেকে গোয়ালাতে ছড়ায়। মাঙ্কি পক্স শুধু বাঁদর নয়, আরও নানা প্রাণী, যেমন কাঠবিড়ালিতে ছড়ায়, এবং ঠিক যে ভাবে কোভিড ছড়িয়েছিল, সেই ভাবে, অর্থাৎ জীবন্ত বা মৃত প্রাণীর সংস্পর্শ থেকে মানুষে ছড়ায়, তারপর মানুষ থেকে মানুষে।
স্মল পক্সের কথা ছয়ের দশকের পর যাদের জন্ম হয়েছে, তাদের তেমন জানার কথা নয়। কারণ 1980 সালে পৃথিবী থেকে স্মল পক্স রোগ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, আর স্মল পক্সের ভাইরাস Variola রয়ে গেছে আমেরিকা ও রাশিয়ার দু'একটি গবেষণাগারের ফ্রিজারে। কিন্তু তার আগে, প্রাক-কোভিড পৃথিবীতে স্মল পক্স যত মানুষ মেরেছে, কোনও জীবাণু-বিষাণুই তত মানুষ মারেনি। দুই আমেরিকার বহু আদিবাসী নির্বংশ হয়ে গিয়েছিল স্মল পক্সে। আমার বাবা ও তাঁর পিঠোপিঠি দাদা ম্যাট্রিক পরীক্ষার ঠিক আগে স্মল পক্সে আক্রান্ত হন তিরিশের দশকে। বাবা সেরে উঠলেও জ্যাঠা বাঁচেননি। আগেকার দিনের বর্ণনায় পাওয়া যেত "পক্সের দাগ'। আমার বাবা একদিকে ভাগ্যবান ছিলেন। পক্সে যে ফোস্কার মতো জিনিস চামড়া ছেয়ে ফেলে, চোখ নষ্ট করে এবং চিরকালের মতো গভীর দাগ রেখে যায়, বাবার তা শুধু পায়ে ছিল। মাঙ্কি পক্স মৃদু হলেও চোখ নষ্ট হওয়ার বা দাগ থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
আরও পড়ুন:আতঙ্কের নয়া নাম মাঙ্কি পক্স
পক্স থেকে প্রতিরোধ ক্ষমতা ও টিকা
পক্স গোষ্ঠীর ভাইরাসগুলির পরস্পরের মধ্যে মিল প্রচুর। এরা যখন মানুষে রোগ সৃষ্টি করে, কিছু কিছু লক্ষণে মিল থাকে, যদিও তীব্রতার তারতম্য থাকতে পারে। যেমন স্মল পক্স, কাউ পক্স, মাঙ্কি পক্স, সবার ক্ষেত্রেই চামড়ায় ফোস্কা দেখা যায়। এই মিলের কারণে এই গোষ্ঠীর মধ্যে কোনও একটি ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হলে, এই গোষ্ঠীরই অন্য কোনও ভাইরাসের আক্রমণের বিরুদ্ধে অন্তত কিছুটা প্রতিরোধ ক্ষমতা (Cross-Protection) থাকবে। এই মিল দেখেই 1798 সালে এডওয়ার্ড জেনারের মাথায় আসে যে, যে সব গোয়ালার গো-বসন্ত বা Cowpox হয়ে গেছে, তাদের স্মল পক্সের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে গেছে। অর্থাৎ, গো-বসন্তের বিষাণু কারও শরীরে ঢুকিয়ে দিলে তার আর গুটি বসন্ত বা স্মল পক্স হবে না। পৃথিবীর প্রথম টিকা আবিষ্কার, সেই যুগান্তকারী আবিষ্কারের গল্প হয়তো অনেকেরই জানা।
পক্সগোষ্ঠীর আর একটি ভাইরাস, Vaccinia রোগসৃষ্টির ক্ষমতায় অনেকটাই মৃদু। বিংশ শতাব্দীতে Vaccinia ভাইরাসের আবিষ্কারের পরে ধীরে ধীরে গুটি বসন্তের টিকা হিসেবে গো-বসন্তের বিষাণুর পরিবর্তে Vaccinia-র ব্যবহার শুরু হল। এর পরে অতি দ্রুত সারা পৃথিবীর টিকাকরণ করে ফেলাতে 1970 সালের পর গুটিবসন্তের বিরুদ্ধে আর কোনও টিকাকরণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। আরও দশ বছরের পর্যবেক্ষণ জানাল যে, পৃথিবীতে নতুন করে কোনও গুটি বসন্তের ঘটনা ঘটেনি। কাজেই 1980 সালে পৃথিবীকে গুটি বসন্ত মুক্ত ঘোষণা করা গেল। পক্স ভাইরাস গোষ্ঠীর এই মিলটির নিরিখে বলা যায় যে, যাঁরা 1970 সালের আগে গুটি বসন্তের টিকা নিয়েছিলেন বা যাঁদের গুটি বসন্ত হয়েছিল, মাঙ্কি পক্সের বিপদ থেকে তাঁরা অনেকটাই মুক্ত।
তবে চিকেন পক্স বা জল বসন্ত কিন্তু কোনও সুরক্ষা দেবে না!
এই প্রসঙ্গে একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা মনে রাখা দরকার। চিকেন পক্সও তো পক্স, তাহলে চিকেন পক্স হয়ে থাকলে কি তারা মাঙ্কি পক্স থেকে বিপদমুক্ত? না একেবারেই নয়, কারণ ফোস্কা ও আর কয়েকটা বাহ্যিক লক্ষণ বাদ দিলে চিকেন পক্স বা জল বসন্ত পক্স নয়। জলবসন্ত হয় Varicella Zoster Virus থেকে- যেটি পক্স গোত্রের নয়, হারপিস (Herpes) গোত্রের।
জৈব আতঙ্কবাদের ভয় ও শ্বেতাঙ্গদের পক্স-অস্ত্রের দ্বারা গণ সংহারের ইতিহাস
মাঙ্কি পক্সের এই ভয়। পশ্চিম দেশে যার শুরু, এর পিছনে আছে অনেক পুরাতন পাপের ইতিহাস। আটলান্টিকের ওপারের বিশাল ভূখণ্ড এপারের মানুষের মতোই অজানা ছিল গুটি বসন্তের। এপারে অবশ্য গুটি বসন্তের ইতিহাস আরও সহস্রাব্দ প্রাচীন। বোধিসত্ত্ব অবদান কল্পলতাতে আছে নটী বাসবদত্তার "মারীগুটিকা' আক্রান্ত হওয়ার ও বুদ্ধ-শিষ্য উপগুপ্তের সেবার কাহিনী, যা রবীন্দ্রনাথের কালজয়ী "অভিসার' কবিতার উৎস। যাই হোক, আমেরিকা ভূখণ্ড আবিস্কারের পরে স্পেন গেল মেক্সিকোতে সাম্রাজ্য বিস্তার করতে। মেক্সিকোতে আজটেক (Aztec) সভ্যতা তখন উন্নতির শিখরে। 1521 সাল নাগাদ স্পেনের সেনাপতি করতেস (Corte's) হাজার খানেক মাত্র সৈন্য নিয়ে আজটেক সভ্যতা দখল করে নিলেন, সম্মুখ সমরে নয়, অদৃশ্য অস্ত্র গুটি বসন্তের জীবাণু ছড়িয়ে। যেহেতু মহাসমুদ্রের ওপারে গুটি বসন্ত ছিল না, স্থানীয় অধিবাসীদের প্রতিরোধ ক্ষমতাও ছিল না এই রোগের বিরুদ্ধে। এক বছরের মধ্যে আজটেকদের 40 শতাংশ জনসংখ্যা কমে গেল। এখানেই শেষ নয়, দু'টো শতাব্দী বাদে আর এক কলঙ্কময় অধ্যায় লিখে গেছেন ব্রিটিশ কলোনিয়ালরা। 1763 সালে, লর্ড জেফ্রি আমহার্স্ট যখন ব্রিটিশ নর্থ আমেরিকার গভর্নর জেনারেল, নেটিভ আমেরিকান (যাদের ওরা ইন্ডিয়ান বলে)-রা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। সেই বিদ্রোহীদের শায়েস্তা করতে আমহার্স্ট হুকুম দিয়েছিলেন গুটি বসন্তের রোগীর ব্যবহৃত কম্বল দান করতে। আমেরিকানদেরই অনেকে ঘৃণার সঙ্গে এই ঐতিহাসিক ঘটনার বর্ণনা দিলেও আমহার্স্ট এখনও সেখানে পূজ্য। বস্টনের কাছে আমহার্স্ট শহর তাঁরই নামাঙ্কিত, সেটা কেউ পাল্টাবার কথাও বলে না।
শুধু মানুষকেই নয়, পরিকল্পিত ভাবে প্রাণী হননেও ব্যবহার হয়েছে পক্সগোষ্ঠীর ভাইরাসের। অস্ট্রেলিয়াতে খরগোশ ছিল না। ইউরোপীয়রা সেখানে গেড়ে বসার সময়ে পোষ্য হিসেবে খরগোশের আমদানি করে। অচিরেই বংশবৃদ্ধি করতে করতে খরগোশের সংখ্যা এত বেড়ে যায় যে, কৃষিপ্রধান অস্ট্রেলিয়াতে তা একটা বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। Myxoma নামে এক ধরনের পক্স ভাইরাস আছে, যারা শুধু খরগোশের শরীরেই রোগ সৃষ্টি করে। শুধু তাই নয়, ইউরোপীয় খরগোশে মারণরোগ হানে, কিন্তু অন্য প্রজাতির খরগোশে তেমন কিছু করে না। গত শতাব্দীর পাঁচের দশকে Myxoma আক্রান্ত খরগোশ ছেড়ে দিয়ে অস্ট্রেলিয়াতে খরগোশের মড়ক ঘটানো হয়। কিছু খরগোশের প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মায়। আবার Myxoma-ও বিবর্তিত হয় কালের নিয়মে। উত্তরসূরীদের কেউ মৃদু, আবার কেউ টিউমার ঘটায়, কেউ বা অতি দ্রুত প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। অবশ্যই তারা চিন্তার বিষয়।
মাঙ্কি পক্স নিয়ে দুশ্চিন্তা এই প্রথম নয়। 2001-এ আমেরিকার 9/11-র ঘটনাগুলির পরে পরেই Anthrax রোগ ছড়ানোর ঘটনা ঘটে, যেটাকে জৈব অস্ত্র ভাবা হয়েছিল। তারপর থেকেই পশ্চিমি দুনিয়া নিজেদের দেখানো পথ, অর্থাৎ জৈব সন্ত্রাসবাদের ভয়ে ভীত। তাছাড়া আধুনিক বিজ্ঞান অনেক কিছু জানলেও বলতে পারে না কোন জীবাণু বা বিষাণু হঠাৎ নিজে নিজে রূপ পরিবর্তন বা মিউটেট করে লাগামছাড়া হয়ে যেতে পারে। Covid সে আশঙ্কার তো জাজ্জ্বল্যমান প্রমাণ।
2003 সালে আফ্রিকা থেকে আমদানি হওয়া কিছু ইঁদুরের সঙ্গে মধ্য আমেরিকায় মাঙ্কি পক্স ছড়ায়। সৌভাগ্যের বিষয় সে বারে আক্রান্তদের উপসর্গ মৃদুই ছিল, এবং তাদেরকে আলাদা রাখাতেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু পক্স ভাইরাস থেকে জৈব অস্ত্রের বিশ্বযুদ্ধ হতে পারে, এই ভয় পশ্চিমি দুনিয়াতে আছেই। যে কারণে দু'তিন রকমের পক্স ভ্যাকসিন ওদের মজুত থাকেই। সৈন্যদের যুদ্ধে পাঠানোর আগে নিয়ম করে তা দেওয়া হয়।
মাঙ্কি পক্সের মোকাবিলা কীভাবে করা উচিত?
আমাদের দেশ কীভাবে মোকাবিলা করবে মাঙ্কি পক্সের? ইচ্ছে করলে এই রোগকে সহজেই মোকাবিলা করা যায়। সাগরপার ধরে কারা কোথা থেকে আসছে, এখন সবই তো জানা যায়। সেই রকম বুঝলে যাত্রীদের কোয়ারান্টাইন করার ব্যবস্থা আবার নতুন করে চালু করাই যায়। এই মুহূর্তে যেসব দেশে এটি ছড়িয়েছে, তার মধ্যে বেলজিয়াম বিদেশ ভ্রমণকারীদের জন্যে কোয়ারান্টাইন ব্যবস্থা শুরু করে দিয়েছে। এই মুহূর্তে একটা বড় সুবিধে হল Covid-এর কারণে মাস্ক, গ্লাভস, শিল্ড, পিপিই কিট ইত্যাদির ব্যবহার আমরা শিখে গেছি। কোভিড দেখা গেল বায়ুবাহিত একটি রোগ, মাস্ক ছাড়া বাকিগুলোর প্রয়োজন ততটা নেই। কিন্তু পক্স তো হাতে হাতে, অর্থাৎ স্পর্শেও সংক্রমণ ঘটায়। কাজেই ছড়াচ্ছে জানলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে ।
কিন্তু এই মুহূর্তে আতঙ্কের কোনও ঘটনাই ঘটেনি ভারতে মাঙ্কি পক্স নিয়ে। কাজেই সাধারণ মানুষের চিন্তা করার কিছু নেই। চিন্তা করা উচিত সরকারের , বিজ্ঞানীদের। Vaccinia Virus ভারতে অপ্রতুল নয়, তাই বানিয়ে রাখা যেতে পারে আপৎকালীন ভ্যাকসিন, বিশেষ করে 1970 সালের পরে জন্মানো ব্যক্তিদের জন্য।
(ড: সুস্মিতা ঘোষ ডায়াগনোরাইট-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং জৈব-রসায়নবিদ। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের প্রাক্তন পোস্ট ডক্টরাল ফেলো। সুস্মিতার ডায়াগনোরাইট সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত একটি স্টার্ট-আপ সংস্থা, যার লক্ষ্য সকলের জন্য সুলভে বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক ডায়গনস্টিক্স।)
Covid-19 টেস্ট নিয়ে যা হচ্ছে তা কিন্তু কতটা বিজ্ঞানসম্মত তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
মলদ্বারের ক্যান্সার নিরাময়ের সফল ওষুধ নিয়ে মাতামাতি কিন্তু সব ধরনের ক্যান্সারে প্রযোজ্য নয়
স্মল পক্স বা গুটি বসন্তের টিকা 1970-এর আগে নেওয়া থাকলে মাঙ্কি পক্সের ভয় নেই।
স্বাধীনতার 75 বছরে অমৃতের সাগর কিনারে বসে বিষপানে মত্ত ভারত
কোনও ঢাকা না থাকলে করোনা সোজা বর্ষিত হতে পারে মাথায়, মুখে, নাকে, হাতে
ল্যাবরেটরি বা প্রকৃতিতে করোনা ভাইরাসের ডেল্টাক্রন রূপ বলে কিছু নেই, এটা নিতান্তই মিডিয়ার সৃষ্টি।