×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • জাতীয় শিক্ষানীতি 4 : পার্থ প্রতিম রায় এবং মৈত্রী ভট্টাচার্য

    4thPillars ব্যুরো | 06-08-2020

    নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি (NEP 2020) নিয়ে www.4tthPillars.com ধারাবাহিক আলোচনা করছে। বৃহস্পতিবার আলোচনার চতুর্থ দিনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ পার্থ প্রতিম রায় এবং JBNSTS-এর অধিকর্ত্রী, অধ্যাপিকা মৈত্রী ভট্টাচার্য। তাঁদের বক্তব্য, নয়া নীতির ইতিবাচক দিকগুলো বাস্তবের মাটিতে কতটা ফলপ্রসূ হয়, সেটাই আসল।

     

     

    1) নয়া শিক্ষানীতিতে শিক্ষার অধিকার আইনকে সার্বিকভাবে ফলপ্রসূ করার একটা সদিচ্ছা দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি মিড ডে মিল ব্যবস্থার সঙ্গে পড়ুয়াদের জলখাবার দেওয়ার কথাও বলা হচ্ছে 3 বছর বয়স থেকে। এর যথার্থ রূপায়ণ হলে অবশ্যই তা ইতিবাচক পদক্ষেপ হবে।

     

    2) এই শিক্ষানীতিতে বলা বড় লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য জিডিপির অন্তত 6 শতাংশ শিক্ষাখাতে খরচ করতে হবে। বুনিয়াদি ও প্রাক-প্রাথমিক স্তরে বাচ্চাদের শিক্ষার পাশাপাশি পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিতে হবে। তবে তার জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্য— দুই সরকারকেই তাদের খরচ বাড়াতে হবে।

     

    3) নয়া শিক্ষানীতিটি লিখিত দলিল হিসাবে 10-10 পাবে। কিন্তু আর্থ-সামাজিক এবং রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে তার সামঞ্জস্য আছে কিনা ভেবে দেখা দরকার। আর্থ-সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া এলাকার জন্য স্পেশাল এডুকেশন জোন তৈরির কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু তার জন্য যে বিপুল অর্থ প্রয়োজন, তার জোগান হবে কীভাবে?

     

    4) নতুন নীতির ফলে শিক্ষায় গ্রাম-শহর বিভাজন হতে পারে। শিক্ষামন্ত্রক সহ চারটি মন্ত্রক এই বিষয়ে একযোগে কাজ করবে বলা হচ্ছে। কিন্তু স্বাধীনতার পর 70 বছর ধরে এমন অনেক কথা বলা হয়েছে। সেগুলোর বাস্তব রূপায়ণ কতটা হয়েছে, তা সকলের জানা।

     

    5) শিক্ষানীতির লক্ষ্য হওয়া উচিত যেন একজন পড়ুয়াকে স্কুলে যেতে অনেকটা পথ অতিক্রম করতে না হয়। তাই কম পড়ুয়া থাকার অজুহাতে দু'টো বিদ্যালয়কে মিশিয়ে দেওয়া কাজের কথা নয়।

     

    6) অনেক সরকারি স্কুলেই পড়ুয়াদের জন্য শৌচাগারের কোনও ব্যবস্থা নেই। এর ফলে বিশেষত মেয়েদের মধ্যে স্কুলছুটের প্রবণতা বাড়ছে। ঋতুমতী মেয়েরা মাসের বিশেষ দিনগুলোতে স্কুলে যেতে পারছে না। প্রান্তিক অঞ্চলে পড়ুয়া স্কুলে যেতে না পারলে, তার শিক্ষালাভের অন্য কোনও উপায় নেই।

     

    7) নয়া শিক্ষানীতির একটা ইতিবাচক দিক হল, শিক্ষকতা পেশাটাকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নতুনদের এই ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশে মানবসম্পদের অভাব নেই। তাই ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতকে অন্তত 25:1 করা হয়তো সম্ভব। কিন্তু এত বছরে যা সম্ভব হয়নি, সেটা খুব তাড়াতাড়ি হবে বলে মনে হয় না।

     

    8) পাঠ্যপুস্তক রচনার ক্ষেত্রে রাজ্যগুলিকে কিছু ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। নয়া নীতিতে স্কুলস্তরে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো বিষয় শেখানোর কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু মৌলিক বিজ্ঞান কিংবা হাতে কলমে বিজ্ঞান শেখানোর গুরুত্বের উল্লেখ নেই।

     

    9) বলা হচ্ছে শিক্ষাক্ষেত্রে কোনও লাভজনক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হবে না। কিন্তু একইসঙ্গে এও বলা হচ্ছে, কোনও স্বেছাসেবী সংস্থা অবৈতনিক শিক্ষাদানে এগিয়ে আসতে পারে। এই অসঙ্গতির ব্যাখ্যা নেই।

     

    10) কোনও জনহিতকর প্রতিষ্ঠান শিক্ষাদানে এগিয়ে এলে ভালই। স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান মাত্রেই কোনও বিশেষ উদ্দেশ্যে শিক্ষাদান করবে, এমনটা নাও হতে পারে। রামকৃষ্ণ মিশন কিন্তু কোনও ধর্মশিক্ষাকে প্রশ্রয় দেয়না।

     

    11) ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক এই বৈচিত্র্যময় দেশে রূপায়ণ করা সম্ভব নয়। আমাদের দেশের যে বৈচিত্র্য, তাকে শিক্ষার মধ্যে তুলে ধরতে না পারলে শিক্ষার উদ্দেশ্যই বৃথা থেকে যাবে। নীতিতে অবশ্য বলা হচ্ছে, স্থানীয় সংস্কৃতি, ভাষাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু, অভিজ্ঞতা বলে, কেন্দ্রীয় নির্দেশ মেনেই চলতে হয় এসব ক্ষেত্রে।

     

    12) নয়া নীতিতে হাতেকলমে শিক্ষা এবং বিশ্লেষণধর্মী পাঠের জায়গাটা বিশেষ রাখা হয়নি। স্কুল স্তর থেকে বিজ্ঞান শিক্ষায় পড়ুয়াদের উৎসাহিত করতে হবে। এই জায়গাটায় বড় গাফিলতি

     

    13) নয়া নীতি কি কোচিং নির্ভরতা কমাতে পারবে? টিউশন নির্ভর পড়াশোনায় পড়ুয়াদের মান পড়ছে। আইআইটি-তে যারা পড়তে যাচ্ছেন, তারা সবাই মেধাবী নয়। তাদের অনেকেরই বিষয়বস্তুর উপর ততটা দখল নেই। তারা "আউট অফ বক্স' কিছু ভাবতেও ব্যর্থ হচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনও স্ফুলিঙ্গ দেখা যাচ্ছে না। শিক্ষার লক্ষ্য পড়ুয়াকে বিষয়টা চামচ দিয়ে খাইয়ে দেওয়া নয়।

     

    14) গবেষণার ক্ষেত্রে আগের থেকে অর্থ অনুদান অনেক কমে গেছে। বেসিক সায়েন্সকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি এই নীতিতে।

     

    15) 3-6 বছর বয়সী পড়ুয়াদের যাঁরা পড়াবেন, তাঁদের আলাদা করে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।

     

    16) যেখানে সম্ভব সেখানে মাতৃভাষায় (অঞ্চলভেদে স্থানীয় ভাষা) শিক্ষাদানের কথা বলা হচ্ছে। মানে অন্য মাধ্যমের, মূলত ইংরাজি মাধ্যমের বেসরকারি স্কুলগুলিও থাকছে। কিন্তু "যেখানে সম্ভব' কথাটির মধ্যেই কিন্তু অনেক প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বাংলা ইংরাজি মাধ্যম স্কুলগুলির মানের ফারাক আরও প্রকট হবে।

     

    17) ইংরাজি ছাড়া চিন কিন্তু দেশীয় ভাষাতেই বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে প্রভূত উন্নতি করেছে। সেখানে উচ্চশিক্ষায় ইংরাজিতে জোর দিয়েও আমরা অনেক ক্ষেত্রেই ওদের মুখাপেক্ষী। চিন জাপানের মতো আমাদের দেশেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে শিল্পমহলের একটা সংযোগ দরকার ছিল। এতে পড়ুয়ারা উপকৃত হবেন।

     

    18) মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের জন্য অনুবাদ ও ব্যাখ্যার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, আমরা এই রাজ্যেই যেমন বলতে পারি, আগে বিভিন্ন শিক্ষাব্রতীদের হাত দিয়ে যেমন বহু গুরুত্বপূর্ণ বইয়ের বাংলা অনুবাদ হয়েছে, কিংবা মৌলিক কোনও বই লেখা হয়েছে, তেমনটা এখন আর দেখা যায় না। মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে এটা একটা বড় প্রতিকূলতা।


    4thPillars ব্যুরো - এর অন্যান্য লেখা


    আজ তৃতীয় পর্বে গায়িকা সারণির বাড়ির অন্দরে চোখ রাখব আমরা।

    ভোটের পর হিংসা দমনের অছিলায় দিল্লির শাসকের এজেন্ট হিসেবে কর্তব্য পালন করছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।

    ভ্যাকসিনের ভাল খারাপ সম্পর্কিত তথ্য হাতে না এলে সাধারণ মানুষের মনে ভ্যাকসিন নিয়ে ভয় কাটবে না।

    অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে মিডিয়ার ভূমিকা কীরকম?

    তদন্তের ফলাফল আসার আগেই মিডিয়ার বিচারসভায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন রিয়া চক্রবর্তী।

    গোটা দেশের কৌতূহল, বিতর্কিত দু'টি টুইটের "মালিক' প্রশান্তকে সুপ্রিম কোর্ট কী শাস্তি দেয়।

    জাতীয় শিক্ষানীতি 4 : পার্থ প্রতিম রায় এবং মৈত্রী ভট্টাচার্য-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested