×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • The day Pluralistic Tolerant India was attacked and Babri Masjid was destroyed

    4thPillars ব্যুরো | 02-10-2020

    সাংবাদিক সুদীপ্ত সেনগুপ্তর সঙ্গে আলোচনায় সাংবাদিক রজত রায় এবং সাংবাদিক দেবব্রত ঠাকুর।

    বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার রায়ে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে বেকসুর দায়মুক্ত হলেন অভিযুক্ত সকলেই। তারপর থেকেই জনমানসে প্রশ্ন, কৌতূহল; সত্যিই কি no one destroyed Babri Masjid? 1992-এর 6 ডিসেম্বরের ঘটনা দেশের রাজনীতির গতিপ্রকৃতি বদলে দিয়েছে। কী হয়েছিল সেইদিন অযোধ্যার বিতর্কিত সেই স্থানে? এই সব প্রশ্নকে সামনে রেখেই www.4thpillars.com-এর 1 অক্টোবরের  আলোচনায় সাংবাদিক সুদীপ্ত সেনগুপ্তর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক রজত রায় এবং সাংবাদিক দেবব্রত ঠাকুর, যিনি ঘটনার দিন অকুস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

     

     

    1) প্রায় এক লক্ষ করসেবকের জনসমাগম হয়েছিল সেদিন। পরিকল্পনা ছিল 1000 জনের এক একটি দল গিয়ে এক প্রতীকী করসেবা করবে। কিন্তু ক্রমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। বাবরি মসজিদের সবকটি প্রবেশদ্বারে জনস্রোত আছড়ে পড়ে।

     

    2) করসেবকদের একটা দল অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে গিয়েছিল। এই দলটা ছিল অত্যন্ত উদ্ধত এবং অসহিষ্ণু, এরা এসেছিল তখনকার প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসিংহ রাওয়ের নিজের কেন্দ্র নান্দিয়াল থেকে। এদের সঙ্গে গাঁইতি, শাবল এবং মোটা দড়ি ছিল। এরা বিতর্কিত স্থানের আশেপাশে কিছুদিন আগে থেকেই ঘোরাঘুরি করছিল। এমনিতে মসজিদটি একটা দোতলা বাড়ির সমান মাটির কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে ছিল। 1992-এর জুলাই মাসেও মসজিদটির গম্বুজে কিছু মানুষ উঠে গেরুয়া পতাকা টাঙিয়েছিল।

     

    3) দক্ষিণ ভারত থেকে আসা এই উগ্র দলটি যখন মসজিদের পিছন দিক দিয়ে মসজিদের মাথায় উঠে পড়ল, তখন বাকি জনতাও সেদিকে স্রোতের মতো এগিয়ে যায়। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের শৃঙ্খলাবদ্ধ স্বেচ্ছাসেবকরাও সেই উন্মত্ত জনস্রোতকে আটকাতে পারেনি। সংঘের তৎকালীন সরসংঘবাহক এইচ.বি. শেষাদ্রি চারটি দক্ষিণী ভাষায় উন্মত্ত জনতাকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি।

     

    4) বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা অশোক সিঙ্ঘলের চেষ্টাতেও এই জনতাকে থামানো যায়নি। মসজিদের প্রথম গম্বুজ পড়ে যাওয়ার পর সেখানে উপস্থিত নেতারা বুঝলেন, পরিস্থিতি তাঁদের হাতের বাইরে চলে গেছে। তখন ঘটনার স্রোতে গা ভাসিয়ে উমা ভারতী, সাধ্বী ঋতম্ভরারা মাইকে স্লোগান দিতে লাগলেন, "এক ধাক্কা অউর দো, বাবরি মসজিদ তোড় দো'

     

    5) একদিনের প্ররোচনায় বাবরি মসজিদ ভাঙেনি। 1990-এ আডবাণীর রথযাত্রার সময় থেকেই ধারাবাহিক ভাবে উস্কানি দেওয়া চলছিল। ভোট রাজনীতির স্বার্থেই নেতারা এই ইস্যুটাকে জিইয়ে রাখতে চেয়েছিলেন। মণ্ডল বনাম কমণ্ডলের লড়াইয়ে সাফল্য পাওয়া বিজেপি এই উগ্র হিন্দুত্বের আবহকে বজায় রাখতে চেয়েছিল।

     

    6) কেন্দ্রীয় বাহিনীর র‍্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত বি.বি.সারস্বতের কথা থেকে জানা যায় সেদিন মসজিদ চত্বরে উত্তেজনার খবর পাওয়া মাত্র তাদের ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা ছিল। তারা রওনাও হয়েছিলেন বাবরি মসজিদের দিকে। কিন্তু মাঝপথেই তাদের ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

     

    7) এমন একটা ধারণা আছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও বিজেপির এই হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির চির অবসানের জন্য বাবরি মসজিদ ধ্বংস হোক, এমনটা চেয়েছিলেন। অন্যদিকে সংঘ এবং বিজেপি নিজেদের স্বার্থেই মসজিদকে ধ্বংস করতে চায়নি। কিন্তু উন্মত্ত জনতাকে যখন তারা ধরে রাখতে পারল না, তখন বিজেপি নেতা প্রমোদ মহাজনকে আক্ষেপ করতে শোনা গেল যে, "ইস্যু হাতের বাইরে চলে গেল'

     

    8) সেদিন উন্মত্ত জনতার প্রতি সংঘের স্বেচ্ছাসেবকরা মাইকে বলছিলেন, করসেবকদের মধ্যে থাকা নরসিংহ রাও, মুলায়ম সিংহদের বাহিনী বাকিদের হিংসায় প্ররোচিত করছে। উন্মত্ত করসেবকদের অন্ধ্রের নান্দিয়াল থেকে নরসিংহ রাও-ই পাঠিয়েছিলেন এই জল্পনাটা বেশ কয়েকদিন চলেছিল।

     

    9) বর্তমান সরকারের বহু বিতর্কিত সিদ্ধান্তেরই আইনি বৈধতা মিলছে। কাশ্মীরে 370 নং ধারার অবলুপ্তির সিদ্ধান্তও আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়েনি। সামগ্রিক ঘটনাপ্রবাহ 1933-এর হিটলার শাসিত জার্মানিকে মনে করাচ্ছে।

     

    10) এত বছর ধরে তদন্ত প্রক্রিয়া চালিয়েও সিবিআই যদি সুসংহত এবং মজবুত তথ্যপ্রমাণ আদালতে পেশ করতে না পারে, তখন আদালতেরও কিছু করার থাকে না। এক্ষেত্রে শুধু বিচারকের রায় নিয়ে প্রশ্ন তুলে লাভ নেই। আইনগ্রাহ্য তথ্যপ্রমাণ ভারতীয় দণ্ডবিধি মেনে যেভাবে পেশ করার কথা সেভাবে আদালতে পেশই করা হয়নি - সিবিআই নিজেই তা স্বীকার করেছে।

     

    11) বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর জোশি, সিঙ্ঘলরা বলেছিলেন, ঘটনা যখন ঘটেই গেছে, তখন নেতা হিসাবে আমাদের তার দায় নিতেই হবে। উমা ভারতী অবশ্য অকপটে যাবতীয় কৃতকর্মের দায় নিজে নিতে চেয়েছিলেন।

     

    12) সামাজিক এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য যদি যোগেন্দ্র যাদব, সীতারাম ইয়েচুরিদের অভিযুক্ত করা হয়, তবে আডবাণী, সিঙ্ঘলরা কেন দোষী সাব্যস্ত হবেন না? তাঁরা তো ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

     

     


    4thPillars ব্যুরো - এর অন্যান্য লেখা


    তুমি সে সব চামুণ্ডার জিভে ছুঁড়ে জড়িয়েমড়িয়ে শুয়ে থাকো, যেন আমি তোমার পোষ্য নই,সন্তান!

    যে দল নিজে অক্ষম, অচল, বিভ্রান্ত, সে মানুষকে কী পথ দেখাবে?

    সমবেত প্রতিবাদ ও জনরোষের সামনে অবশেষে আদিত্যনাথের সরকার বাধ্য হয় তাদের সিদ্ধান্ত বদলাতে।

    সব মিলিয়ে বর্ষবরণের চেয়ে বর্ষবিদায়ের আনন্দ বোধহয় এবার একটু বেশি।

    প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের আবিষ্কার নিয়ে গর্ব করার বদলে কল্পিত পুষ্পক রথের গল্প ফাঁদে মূর্খ।

    ধর্ষণের অপরাধ কি বিয়েতে মকুব হয়ে যায়?

    The day Pluralistic Tolerant India was attacked and Babri Masjid was destroyed-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested