অপ্রসন্ন দয়িতাকে শান্ত করতে কীভাবে সুরবিন্যাস করতে হয় তাও সুরের দেবতারা শিখিয়ে গেছেন আমাদের। শিখগুরুরা ঈশ্বরের উদ্দেশে তাঁদের আর্তি বারবার নিবেদন করে গেছেন এই রাগটিতে নির্মিত শবদকীর্তনের মধ্যে দিয়ে। গুরু গ্রন্থসাহিবে গুরু নানকজি থেকে শুরু করে গুরু রামদাসজি, গুরু অর্জনদেবজি, গুরু তেগবহাদুরজি, সন্ত কবির এবং সন্ত নামদেবের সৃষ্টি করা মোট উনিশটি শবদ আছে যেগুলি এই রাগে গীত হয়।
অনুমান করা হয় হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় শৈলীতে এই রাগটি এসেছিলো সুফি সাধকদের দৌলতে। তাঁরা ঈশ্বরকে ভালোবেসে সাধনা করতেন। প্রিয়তমের স্তুতি করার আশায় তাঁরা এই রাগে গান বাঁধতেন। হিন্দুস্তানি সঙ্গীত থেকে এই রাগটি কর্ণাটকি শৈলীতে গ্রহণ করা হয়েছিলো। তবে তার গঠন অবিকল হিন্দুস্তানি ধাঁচে ছিলোনা। তাঁদের মতে তিলঙের আরোহ নেওয়া হয়েছে গম্ভীরনট রাগে আর অবরোহটি পেয়েছে সাবিত্রী রাগ।
একটা কোমল নিষাদের স্পর্শ কীভাবে পুরো মেজাজটা তর্র করে দেয় রাগ তিলং তার একটা দারুণ উদাহরণ। ঔড়ব-ঔড়ব রাগে থাকে দশটা স্বর আরোহ-অবরোহে। তা বাকি ন'টা স্বর তো নিজেদের ভূমিকায় নিপুণভাবে ডিউটি করছে। কিন্তু কোমল নিষাদ সব সময়েই ভিতর পর্যন্ত গিয়ে ভিজিয়ে দেয়। তার চালচলন সব সময়েই অন্যরকম। দুশো বছর আগে নিধুবাবু এই গানটি বেঁধেছিলেন পুরোপুরি রাগস্বভাবের কথা মনে রেখে। এই রাগে বাঁধা তাঁর অন্য কোনও গান এই অধমের কানে বাজেনি। কিন্তু এই গানটি তো একাই রানি। ভ্রমরের প্রতি কমলিনীর অভিমান, রাগ তিলঙের সাবেকি মর্মকথা নিঙড়ে তুলে আনে বাংলা টপ্পার শরীরে। না-চিজের দুঃসাহস না ধৃষ্টতা, তা জানিনা।
এক হি গুজারিশ, গুস্তাখি মাফ হো।
অনুমান করা হয় হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় শৈলীতে এই রাগটি এসেছিলো সুফি সাধকদের দৌলতে
তঁহু যাবে, মহু যাবো, রাজিম কে মেলা…