জাতীয় শিক্ষানীতি (NEP) 2020 নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা চলছে। বাকি বিশ্বের মতোই ভারতও যখন করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তখন হঠাৎই দেশে নয়া শিক্ষানীতি চালুর কথা ঘোষণা করল কেন্দ্র। 34 বছর ধরে চলে আসা শিক্ষানীতির খোলনলচে প্রায় পুরোটাই বদলে ফেলা এই নতুন শিক্ষানীতিতে কতটা উপকৃত হবে পড়ুয়ারা? বিশ্বের শিক্ষা মানচিত্রে কি উল্লেখযোগ্য স্থান করে নিতে পারবে ভারত? জনপরিসরে এই সংক্রান্ত যে প্রশ্নগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেগুলো নিয়েই www.4thPillars.com ধারাবাহিক আলোচনা করেছে। সোমবার আলোচনার প্রথম দিনে উপস্থিত ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরী। তাঁর বক্তব্যে নয়া শিক্ষানীতি নিয়ে যেমন ইতিবাচক কিছু দিক উঠে এল, তেমনই বেশ কিছু জায়গায় কিছু আশঙ্কা এবং পরিকল্পনাহীনতার দিকটিও তিনি তুলে ধরলেন। দর্শকদেরও প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি।
1) 3 বছর বয়স থেকে বুনিয়াদি এবং প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় দেশের সকল পড়ুয়াকে আনার চেষ্টা ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে, এই স্তর থেকেই শিক্ষার বিপুল চাপ যেন খুদেদের বহন করতে না হয়। সেক্ষেত্রে তাদের টিকাকরণ, স্বাস্থ্যের দিকটি রাতে অবহেলিত না হয় তা দেখতে হবে।
2) অনলাইন শিক্ষা বিকল্প হতে পারে না।ছাত্র-শিক্ষক সাক্ষাৎ বা সংযোগ না থাকলে শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় একটা বড় ফাঁক রয়ে যেতে পারে।
3) প্রাক-প্রাথমিকে দেশের বিপুল সংখ্যক পড়ুয়াকে শিক্ষার আওতায় আনতে সরকারের প্রচুর টাকা ব্যয় হবে। টাকার অঙ্কটা বিপুল হলেও ছাত্রপিছু বরাদ্দ যৎসামান্য। একই শিক্ষাবর্ষে শিক্ষাখাতে খরচের দু'রকম হিসাব প্রদান পরিসংখ্যান নিয়ে সন্দেহ জাগায়।
4) স্বাধীনতার সময় থেকে শিক্ষাবিদরা দেশের জিডিপির অন্তত 6 শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দের দাবি জানিয়ে আসছেন। সেই লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছে এখনও পৌঁছনো যায়নি।
5) নয়া নীতিতে পড়ুয়াকে বহু বিষয়ের মধ্যে পছন্দের বিষয়কে বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলেও, কার্যক্ষেত্রে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই এত বিষয় পড়াতে পারে না।
6) স্নাতক স্তরের পড়ুয়া, কোর্সের মাঝপথে বেরিয়ে এলেও তাকে শংসপত্র দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তার আংশিক শিক্ষালাভটা অসাড় হয়ে যাচ্ছে না। এটা ভাল দিক। কিন্তু, 4 বছরের ব্যাচেলার্স ডিগ্রি করেই সোজা পিএইচডি, এত বড় লাফটা বোধহয় ঠিক হল না।
7) উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে। বিশ্বমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে গেলে তাদের আরও বেশি স্বাধীনতা দিতে হবে। আগের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির উপর নতুন নিয়ন্ত্রক সংস্থা গড়ার চেষ্টা হলে, বহুমুখী নিয়ন্ত্রণে আসল লক্ষ্যটাই নষ্ট হবে।
8) নয়া নীতিতে বিজ্ঞানমনস্কতা, আন্তর্জাতিকতাবাদের মতো বিষয়গুলোকে রীতিমতো অবহেলা করা হয়েছে। সুনাগরিক হওয়ার 29টি শর্তের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্রের কর্তব্য কী, তা বলা নেই।
9) শিক্ষার মাধ্যম কোন ভাষা হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক বাদানুবাদ নিষ্প্রয়োজন। সাধারণত দেশের পড়ুয়ারা মাতৃভাষায় লেখাপড়া করার সুযোগ পান। তবে মাধ্যমের সঙ্গে বিষয়কে গুলিয়ে ফেললে মুশকিল। জ্ঞান চর্চার বাহন হিসেবে ইংরেজির গুরুত্ব থাকবেই।
10) শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য দরজা খুলে রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে সঙ্ঘ পরিবারের মতো সংগঠনকে দিয়ে ঘুরপথে শিক্ষার গৈরিকীকরণের একটা আশঙ্কা রয়ে যায়। তাছাড়া পাঠ্যক্রম তৈরি না করে তড়িঘড়ি এই শিক্ষাবর্ষ থেকেই নয়া ব্যবস্থার কিছু দিক কার্যকর করার চেষ্টাও ভাল ইঙ্গিত নয়।
11) কোভিডের কারণে সিবিএসই-র পাঠ্যসূচী থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ দেওয়া হয়েছে। সরকারের লক্ষ্য সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে প্রকাশ্যে খুন কৃষ্ণাঙ্গ। ন্যায়বিচারের দাবিতে পথে নেমে এসেছে গোটা দেশ।
সমসাময়িক বাংলা ভাষার অগ্রণী কবি ও প্রাবন্ধিক সুমন গুণের জন্ম কলকাতায়। .
দুই রাজ্যে এবার বিধানসভা ভোটে বিজেপির মুখে কোথায় নাগরিকত্ব প্রসঙ্গ?
নিতান্ত গরিব পরিবার থেকে উঠে আসা পাসোয়ান কি নিজের শিকড় ভুলে গিয়েছেন?
কলকাতার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সাংবাদিকদের চোখে কেমন লকডাউন চিত্র, আজ দেখুন ষষ্ঠ পর্ব।
উৎসবের সময়ে রোগের সংক্রমণ কমাতেই বা সরকার কী করছে? অনেক প্রশ্ন। উত্তর অজানা।