রেজমান
তরুণ কবি। রেজমান সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে মাস কমিউনিকেশনে স্নাতক হয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিল্ম স্টাডিজে ডিপ্লোমা করেন। বর্তমানে তিনি একজন পেশাদার লেখক, লেখালিখি নিয়েই থাকেন। তাঁর চারটি বই ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে।
কবিতা
১. মৃত্যুর দেশ
এটা মৃত্যুর দেশ। আর উপত্যকার গায়ে লাল-কালো দাগ।
এখানে মিছিলে, মিটিংয়ে রাখে বহুমত খেদ।
তুমি বোমা বেঁধে চলো শুধু, একা লেম্পশেড।
এটা মৃত্যুর দেশ। তুমি প্রত্যুত্তরে দিও হিংসা ও রাগ।
এটা জন্তুর দেশ। বিভেদের মাঝে শুধু মানুষ মহান।
এখানে, সাড়ে তিন বছরও যৌন খিদে।
তোমার বুকে ভগবান, মুখে দোহাই গুঁজে।
এটা জন্তুর দেশ। তুমি মাংসাশী নদী ভুখা, খরস্রোতা।
এটা তোমাদের দেশ। কেউ একা শুধু রাজা, যার রাজ্য মহান।
এখানে প্রত্যেকে বাইরের, শাসনদ্রোহী।
তুমি মিথ্যে প্রেমিক। তুমি অ-বান্ধবী।
এটা তোমাদের দেশ বলে মারছে আইন আর তোমাদের দেশ বলে মরছে জওয়ান।
এটা আমাদেরও নয় কিনা যাচাইকরণ।
এটা তোমাদের হলে তবে দলিল, "লে আও"।
এটা কাদেরই বা, ঠিক করে দিচ্ছে দালাল।
তুমি আনন্দে আটখানা, আগুন জ্বালাও, শুধু আগুন জ্বালাও।
২. আপৎকালীন সময়ের কবিতা
একাধিক দাবিদাওয়া; না হওয়া মীমাংসা
বিরোধিতা মুছে দেওয়া রাষ্ট্রীয় চতুরী,
ভাগ হতে হতে পিঠ ঠেকে গেলে হিংসায়
উড্ডীন মুঠো তুলে এগোনোটা জরুরি।
নতুবা নিরূপায় শুধু অপলক পিটপিট
বাজেটে-বাজারে যত নাটকীয় ভঙ্গি,
রাষ্ট্রীয় কায়দায় ভরে যাবে কিল ফিড
ভুলে মুখ খুললেই অপরাধী, জঙ্গি।
সামরিক দলে দলে জড়ো হওয়া ক্যাম্পে
কৃত্তিম কন্টক, মিছিলের ক্ষতয় পা'য়
স্লোগানে স্লোগানে যত নিষিদ্ধ টেমপ্লেট
বিরোধিতা মুঠোহাত তোমারও তো বর্তায়।
একবার এসো, এসে ভুল করে দাঁড়িয়ে
চিল্লিয়ে দেখ, কত দোনামনা কেটে যায়
অধিকার আদায়ের লড়াইয়েতে বারবার
প্রতিবাদী পক্ষরা আমরণ হেঁটে যায়।
৩. রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয় ও একটি জরুরি ঘোষণা
কর গুনে গুনে দাঙ্গা বোঝাচ্ছেন, ইতিহাসের মাষ্টারমশাই
কালো ব্ল্যাকবোর্ডে পেরিয়ে যাচ্ছে অঙ্কের ক্লাস।
দুটো ভোট জুড়ে দিলে, একটা রুটির মূল্য কত হবে, সেসব হিসেব অনেক কঠিন। সিলেবাসে নেই।
চারের সাথে পাঁচ যোগ করলে এবার থেকে তেরো হবে, ঘোষণা
করে দিয়েছে রাষ্ট্র।
ভূগোলে শেখানো হবে প্ল্যানচেট।
বিজ্ঞান ক্লাসে পড়ানো হবে ভগবানের সাথে মানুষের সম্পর্ক,
খিদে বিশ্বাস।
বাংলা ক্লাস জুড়ে নীরবতা পালন হবে চুপচাপ।
আজ থেকে কোনও অন্ধ ছেলে কোনও বোবা মায়ের হাত ধরে স্কুলে আসতে পারবে না আর।
রাষ্ট্র পাল্টে গেছে। কাল থেকে নতুন সিলেবাস।
এখানে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সবাই হনুমান চালিসা।
কেন লিখি
যে জিনিস নিয়ে মনে হয় লেখা উচিত, তাই লিখি। বা যে জিনিস নিয়ে কাজ করতে পারছি না, অথচ তা নিয়ে সরব হওয়া উচিত, তাই লেখা হয়ে আসে আমার কাছে।
দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদটিকে উপহাসের বিষয়ে পরিণত করেছেন নরেন্দ্র মোদী।
সবাই জানত করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসবে এবং সেটা আরও মারাত্মক হবে। তবু কেউ সচেতন হল না।
উৎসবের সময়ে রোগের সংক্রমণ কমাতেই বা সরকার কী করছে? অনেক প্রশ্ন। উত্তর অজানা।
দেশে ক্রমশ এনকাউন্টার কিলিং কি বৈধতা পাচ্ছে?
আজ প্রথম পর্বে গায়ক অরিত্র দাশগুপ্ত-র বাড়ির অন্দরে চোখ রাখব আমরা।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইটা মন্ত্রশক্তি দিয়ে জেতা যাবে না।