এমন দিন কি আমরা চেয়েছিলাম অনুপমা?
তোমাকে ছুঁতে না পারার ব্যকুলতা জমাতে জমাতে এই একখানা কবিতা লিখছি, নিরুপায়।
তোমাকে বেশি, বড়ো বেশি মনে পড়ছে এখন।
মনে পড়ছে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরা রান্নাঘরের দিনগুলো।
বাসের শেষ সিটে বসে শুনতে থাকা সলিল চৌধুরী। কয়েকটা হলদে গমগমে দুপুর। বিলাসিতার বিকেল। সান্ধ্যকালীন সম্মোহ। ঝাঁপিয়ে পড়া জ্যোৎস্নায় আমাদের নগ্নতা। আর যা কিছু ব্যক্তিগত...
এখানে সময় থেমে গেছে অনন্তকাল।
জানালার দিকে তাকিয়ে গুনছি দিন, সব ঠিক হয়ে যাবার।
বাতাসে ভেসে ভেসে আসছে শাঁখের ক্যাকোফোনি। আজানের আওয়াজ।
একটা আশঙ্কাময় নিস্তব্ধতা বেড়ে উঠছে রোজ।
গুজবের ধুলো ছুটছে চারিদিক।
কারা যেন জোর করে ঢেলে দিচ্ছে অস্থিরতা।
আমার দমবন্ধ হয়ে আসছে ক্রমশ।
এই বায়োমলিকিউলার ওয়েপন, সংখ্যাতত্ত্বের লাশ, রাজনৈতিক লালসা, অর্থনীতির ধ্বস এসব কিছু পেরিয়ে, আমি এখন জানতে চাই তোমার শরীরের ওম।
স্নানের পর কতটুকু জল ছড়িয়ে গেছে তোমার কাঁধ, আমি জানতে চাই।
আমি জানতে চাই, তোমার ছাদের টবগুলোতে গোলাপের কুঁড়ি।
তোমার ভালবাসার বারান্দা...
এই মৃত্যুভয়, মহামারী ফুরিয়ে এলে, আর একটা বিকেল আমরা হেঁটে যাব কলকাতা।
সুমনের গান আর জীবনানন্দের কবিতায় আমাদের চুম্বন হবে আরও একবার।
পাখিরা ডেকে যাবে অবিরাম। ফড়িংয়েরা ছুটে যাবে ঘাস। উপচে ওঠা যাত্রী নিয়ে ছুটে যাবে ট্রেন। ট্রামের মন্থরতায় ঝিমোবে অফিসের ক্লান্তি। হাওয়ায় ভেসে ভেসে উঠবে জীবন।
বাতাসে ছড়িয়ে দিয়ে মোহ, আমি তোমার কপালে এঁকে দেব বেঁচে থাকা।
জ্যোৎস্নার উপচে ওঠা আলোয় টলটল করে উঠবে তোমার দু'চোখ। আরও একবার।
জীবন, আমায় তুমি বাঁচিয়ে রেখো শুধু।