আন্তরজালে শিক্ষা...অনলাইন এডুকেশন এতদিন এদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে ছিলো মাধ্যম হিসেবে গৌণ৷ কিন্তু কোরোনা কোভিড ১৯ মোকাবিলায় মানুষের ঘরবন্দি হয়ে থাকা এই গৌণ মাধ্যমটিকেই শিক্ষাদানের প্রধান উপায় বলে গণ্য করতে বাধ্য করেছে৷
২২মার্চের পর থেকে ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে বন্ধ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷ বোর্ড পরীক্ষাগুলিও মাঝপথে স্থগিত৷ একটানা লকডাউনে পড়ুয়াদের মানসিক অবসাদ কাটাতে আইসিএসই বোর্ড বিদ্যালয়গুলিতে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে ক্লাশ চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন৷ বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে কিছু নির্দেশিকা৷ যেমন— কোনও অ্যাপস বা অন্য কোনও পদ্ধতিতে ছাত্র-শিক্ষক যোগাযোগ বজায় রাখা, মডেল প্রশ্ন তৈরি করা, মূল্যায়ণ করা, বাড়িতে বসে করা যায় এমন প্রকল্পের কাজ দেওয়া ইত্যাদি৷ পশ্চিমবঙ্গে বেশ কিছু স্কুলে অনলাইনে অথবা অডিও/ভিডিও রেকর্ড পড়ুয়াদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ক্লাশ চলছে৷ তবে সেগুলি বেশির ভাগই সাউথ পয়েন্ট, ফিউচার ফাউন্ডেশন, শ্রীশিক্ষায়াতনের মতো বেসরকারি ইংংরাজি মাধ্যম স্কুল৷
এরাজ্যে হাতে গুণে দু একটি সরকারি বাংলামাধ্যম বিদ্যালয়ে এই ধরণের শিক্ষাদান শুরু হয়েছে৷ এদের মধ্যে অগ্রণী শিয়ালদহ অঞ্চলের টাকী বয়েজ স্কুল৷ ছাত্রদের তথ্যপঞ্জী থেকে ফোন নম্বর নিয়ে প্রত্যেক ক্লাশের একটি করে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে৷ সেখানে শিক্ষক/শিক্ষিকারা বিভিন্ন ওয়ার্ক শিট, অডিও, ভিডিও পাঠাচ্ছেন৷ এছাড়া কোয়ারেন্টাইম টিভি, বিশ্ববাংলা সংবাদের মতো কিছু অনলাইন মিডিয়া শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বিশিষ্ট শিক্ষক/শিক্ষিকামন্ডলীর মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাশের সুযোগ নিয়ে এসেছেন৷
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষাদফতর ঘোষণা করেছেন যে আপাতত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীরা, যারা আগামী বছরে বোর্ড পরীক্ষা দেবে, তাদের জন্য আগামী ৭ এপ্রিল ২০২০ থেকে ১৩ এপ্রিল ২০২০ প্রতিদিন একঘন্টা একটি বেসরকারি চ্যানেলে অভিজ্ঞ শিক্ষকেরা নির্দিষ্ট বিষয় ও নির্দিষ্ট অধ্যায়ের উপর আলোচনা করবেন৷ সঙ্গে থাকবে মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক ও এডুকেশন হেল্প লাইন৷
লকডাউনের সময়ে শিক্ষার্থীদের বৌদ্ধিক চর্চা বজায় রাখতে উদ্যোগগুলি প্রশংসনীয়৷ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কতজন শিক্ষার্থীর কাছে অনলাইন এডুকেশনের সুবিধা পৌঁছবে৷ উঠে আসছে সেইসব আর্থসামাজিক প্রশ্ন৷
নিবেদিতা রায়।
গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড মাল্টিপারপাস স্কুল ফর বয়েজ, টাকি হাউস।
কতজন শিক্ষার্থীর কাছে অনলাইন এডুকেশনের সুবিধা পৌঁছবে?