×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • ভিক্ষায় আত্মনির্ভর

    রজত রায় | 02-03-2021

    আত্মনির্ভর ভারত নিয়ে ঢক্কানিনাদই সার!

    republicworld.com-এর একটা খবরে চোখ আটকে গেল। চিন আমাদের 25,000 অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠাচ্ছে। সেজন্য পরিবহন বিমানে মালবোঝাইয়ের প্রস্তুতি চলছে। একই খবরে আরও বলা হয়েছে যে, বহু দেশ ভারতকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের মধ্যে আছে ব্রিটেন, ফ্রান্স, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, কুয়েত, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, হংকং, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিন। অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ছাড়াও ওই সব দেশ থেকে ভেন্টিলেটর, তরলীকৃত অক্সিজেন, পিপিই কিট, করোনা টেস্ট কিট, N95মাস্ক, হিমায়িত অক্সিজেন (cryogenic oxygen) রাখার আধার ইত্যাদি আসছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করোনা টিকা তৈরির কাঁচামাল ভারতে পাঠানোর উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। ফলে, আমাদের দেশে কোভিশিল্ড উৎপাদন এবার বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।

     

     

    বর্তমানে দেশে করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ ব্যাপক হারে বাড়ছে। 30 এপ্রিল পর্যন্ত দেশে মোট আক্রান্ত 1,87,62,976 জন, গত 24 ঘন্টায় আক্রান্ত 3,86,452 জন আর 24 ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে 3,498 জনের। মোট মৃত্যুর সংখ্যা দুই লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের কোনও কোনও মহল মনে করছেন, মে মাসের মাঝামাঝি দৈনিক আক্রান্তদের সংখ্যা 6-7 লক্ষ ছোঁবে, আর দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা 7,000 হতে পারে। 

     

     

    এখন প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর খবর আসছে। অক্সিজেন, হাসপাতালে বেড, জরুরি ওষুধ রেমডেসিভির-এর জন্য হাহাকার চরমে। ফলে, এইসব জিনিস এখন কালোবাজারে চড়া দামে বিকোচ্ছে। ভ্যাকসিন নিয়েও জটিলতা দেখা দিয়েছে। সরকারি হিসাবে 15 কোটির কিছু কম মানুষকে ইতিমধ্যে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ সেকেন্ড ডোজও পেয়ে গেছেন। কিন্তু 18 থেকে 45 বছর বয়সীদের টিকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হলেও সরকার টিকার ব্যবস্থা করতে পারছে না। এতদিন পশ্চিমবঙ্গ সহ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকার জন্য এবং তারপরে কুম্ভমেলায় মনোযোগ দেওয়ার কারণে গোটা দেশে করোনা হু হু করে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, এক বছর সময় পেয়েও সরকার করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলানোর জন্য কোনও পরিকল্পনা ও প্রস্তুতিই নেয়নি। তাই হাত পাততে হচ্ছে বিভিন্ন দেশের কাছে। যারা আমাদের ভিক্ষার ঝুলিতে দান দিচ্ছে, তাদের মধ্যে চিন তো আছেই, পাকিস্তানও আছে। আজ আমরা সত্যিই আত্মনির্ভর!

     

     

    এদিকে ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন জায়গায় সংবাদ মাধ্যমে করোনা মোকাবিলায় মোদীর ব্যর্থতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা অব্যাহত। এবার আসরে অবতীর্ণ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি তাঁর অধীন বিভিন্ন দেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসকে ভারতের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য সক্রিয় হতে বলেছেন। সত্যিই তো, হাতে ভিক্ষার পাত্র বাড়িয়ে ধরার সঙ্গেই দাতাদের ধমকানোর চেষ্টায় ‘আত্মনির্ভর ভারত’ যে বিশ্ব রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র সেটা মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মোদী তো কয়েক মাস আগেই দাবি করেছিলেন যে, ইউরোপ, আমেরিকা যা পারেনি, করোনার বিরুদ্ধে বিজয়লাভ হয়ে ভারত গোটা বিশ্বকে তা দেখিয়ে দিয়েছে। এবার করোনার দ্বিতীয় পর্বে মোদীর নেতৃত্বে ভারত এখন সত্যিই বিশ্বব্যাপী করোনা যুদ্ধে নতুন নজির সৃষ্টি করছে। ‘আত্মনির্ভর ভারত’ এখন ভিক্ষা পাত্র হাতে।


    রজত রায় - এর অন্যান্য লেখা


    খেলার মাঠের বাইরে রাজনীতিতে তিনি পশ্চিমী আধিপত্যবাদের বিরোধের মূর্ত প্রতীক

    উন্নয়নের খাজনা যখন দিতেই হবে, তখন আয়করের মতো একটা স্বীকৃত ঘোষিত হার থাকলেই ভাল!

    কৃষিজ পণ্যের পাইকারি বাজারও এখন বন্ধ। ফলে, চাষি তাঁর ফসল বাজারে বিক্রি করতে পারছেন না।

    ইতিহাসের পুরনো ক্ষত বাঙালি ভদ্রলোকদের বিজেপি-প্রেমী করে তুলেছে।

    এই অবস্থায় দেখার, সরকার কত দ্রুত মানুষকে দোরগোড়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে।

    চাষি তার ইচ্ছা মতো উৎপন্ন পণ্যের বিপণনের অধিকার পাবে কি? মনে হয় না।

    ভিক্ষায় আত্মনির্ভর-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested