×
  • নজরে
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমরা

  • কী মজা, স্কুল খুলছে

    তানিশা দাস | 15-11-2021

    প্রতীকী ছবি

    আমি আজ ভীষণ খুশি, ভীষণ ভীষণ খুশি! এত আনন্দ বোধহয় আমি আমার কোনও জন্মদিনেও পাইনি। কেন? কেন আবার কী? কাল থেকে যে স্কুল খুলছে (School Reopening)! এক বছর আট মাস বাদে আবার স্কুল যাব, মজা হবে না? 

     

    আমি ক্লাস টেনে (Class 10) পড়ি, আর ক'দিন বাদেই মাধ্যমিক। স্কুল আর ক'দিনই বা হবে আমাদের, তবুও এই যে স্কুল খুলছে, বন্ধুদের সঙ্গে আবার দেখা হবে এতেই যেন এক অদ্ভুত আনন্দ হচ্ছে। সত্যি বলতে কী, আমি তো সময় গুনছি, যে আর ক'ঘণ্টা বাকি স্কুল যেতে। 

     

    আরও পড়ুন:দূষণের প্রতি পল গণনার ঘড়ি

     

    প্রথম দিকে যখন লকডাউন (Lockdown) শুরু হল তখন বেশ মজা লাগত, ঘুম থেকে ওঠো, উঠেই কোনওক্রমে হাতমুখ ধুয়ে ড্রেসটা পরে ক্লাসরুমে জয়েন করে যাও। বিছানায় বসে ক্লাস করো। কেউ কেউ তো ক্যামেরা অফ রাখত ক্লাসের মাঝে। কত সুবিধা ছিল। কিন্তু একটা সময় এই সুবিধাগুলোর উপর যেন বিরক্তি ধরে গেল। তখন টিচারদের সামনে থেকে ক্লাস নেওয়া, বোঝানো, দুষ্টুমি করলে বকা এগুলোই খুব মিস করতে শুরু করলাম। ওই গতে বাঁধা জীবনটাই যেন বারবার হাতছানি দিয়ে ডাকত। ঘরবন্দি জীবনে হাঁপ ধরে গেছিল। মনেপ্রাণে চাইতাম স্কুল খুলুক। অবশেষে সেই অপেক্ষার শেষ হল। 

     

    স্কুললাইফ, মানে স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে কেন ভাল লাগে? এর অনেক কারণ আছে। বাড়িতে থেকে কোনও টিচার ক্লাস না নিলে, অফ থাকলে গান শুনতাম, নইলে বোনের সঙ্গে মারপিট করতাম, অথবা ফোন! আর এই শেষ জিনিসটা নিয়ে তো বাড়িতে রোজই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাঁধত

     

    ব্যাগ গুছোতে ব্যস্ত আমি

     

     আর অন্যদিকে স্কুল মানেই টিফিন টাইমে একে অন্যের টিফিন ভাগ করে খাওয়া, ফ্রি টাইমে একটু গল্প করা, টিচার না এলে শিক্ষামূলক ভিডিও দেখা, গেমস খেলা। ক্লাস চলাকালীন খাতায় লিখে লিখে মনের কথা আদানপ্রদান করা। কত্ত কি! জানেন আমাদের স্কুলের সামনে একজন ফুচকাওয়ালা বসতেন। কি দারুণ ফুচকা বানাতেন, সপ্তাহে তিন-চার বার ছুটির পর ওঁর থেকে ফুচকা খেতাম। এখন আসবেন কী না কে জানে! আর স্কুল মানে তো শুধু স্কুল নয়, গাড়ি করে বন্ধুদের সঙ্গে যাওয়া, পথঘাট, ছুটির পর হুটোপুটি, ব্রেকে সব মাথা এক হয়ে গল্প করা-- অনেক কিছুই। টিচারদের ভালবাসা, পড়ানো তো আছেই। পাশাপাশি কোনও বিষয়ে জিজ্ঞাস্য থাকলে সেগুলোও অনেক সহজেই তাঁদের থেকে জেনে নেওয়া যায়। আবার সেই পুরনো দিন ফিরে আসছে। আশা করি অনুষ্ঠান, রিহার্সাল এগুলোও ফিরবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা আর থাকতে পারব না

     

     মাধ্যমিকের পর কোন বন্ধু কোথায় যাব জানি না, কিন্তু তার আগে ক'দিন যে এই একসঙ্গে থাকার, ক্লাস করার সময়টা আবার পাচ্ছি এটাই অনেক বড় পাওনা। মনটা এক অদ্ভুত ভাল লাগায় ভরে যাচ্ছে। আজই আমার বিকেলে একলা ছাদে ঘোরার দিন শেষ। যাই সন্ধ্যা হয়ে এল। পড়তে বসতে হবে। ব্যাগ গুছোতে হবে। স্যানিটাইজার, মাস্ক সব নিতে হবে। এখন তো বইখাতার মতো এসবও স্কুল ব্যাগের অঙ্গ হয়ে গেল। 

     

    লেখক বিদ্যা ভারতী গার্লস হাইস্কুল, নিউ আলিপুরের ছাত্রী। 

     


    তানিশা দাস - এর অন্যান্য লেখা


    দীর্ঘকাল পরে স্কুল যাওয়ার আনন্দ ভাগ করে নিল ক্লাস টেনের এক ছাত্রী।

    কী মজা, স্কুল খুলছে-4thpillars

    Subscribe to our notification

    Click to Send Notification button to get the latest news, updates (No email required).

    Not Interested