প্রয়াত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে নিয়ে স্মৃতিচারণ ও আলোচনায় গত 16 নভেম্বর (সোমবার) www.4thpillars.com -এ উপস্থিত ছিলেন, চলচ্চিত্রকার গৌতম ঘোষ, শৈবাল মিত্র, সুরজিৎ দাশগুপ্ত, ঋতা দত্ত এবং চলচ্চিত্রকার, সাংবাদিক সুব্রত সেন।
1) সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় যে চলে গেলেন, সেই বিষাদ আমাদের মধ্যে অনেকদিন থাকবে। কারণ তিনি আমাদের সংস্কৃতির আকাশকে কয়েক দশক ধরে আলো করে রেখেছিলেন। নিজে আপাদমস্তক মননশীল ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও মানুষ হিসাবে ভীষণ সহজ ছিলেন। বাঙালির যে নবজাগরণ সমৃদ্ধ মানসিকতা, তার অন্যতম উদাহরণ ছিলেন সৌমিত্রবাবু নিজে।
2) সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সব কাজেই উৎকর্ষের শিখরে পৌঁছতে যাওয়ার একটা প্রবণতা ছিল। গ্ল্যামার, ভিআইপি, সেলিব্রিটি, এইসব ধারণা তাঁকে কোনওদিন স্পর্শ করেনি। উনি নিজের চিন্তার, সৃষ্টির জগৎ নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন সর্বদা।
3) মঞ্চ আর সেলুলয়েডের মধ্যে অনায়াসে যাতায়াত করতে খুব কম অভিনেতাই পারেন। সৌমিত্রবাবু সেদিক থেকেও ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি যখন মঞ্চে আসতেন, তখন মঞ্চে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু দিয়েছেন। যখন ক্যামেরার সামনে যেতেন, তখন সেখানকার যা উপাদান, যা দরকার তা নিয়েই কাজ করতেন।
4) আজকালকার দিনে কোনও শিল্পীর সঙ্গে যোগাযোগ করাটা একটা বিশাল ব্যাপার। কিন্তু উনি একমাত্র ব্যক্তি, যিনি নিজেই ফোন ধরতেন, কোনও সেক্রেটারি ছিল না। ওঁর কোনও বিষয়ে অভিযোগ থাকত না।
5) সৌমিত্রবাবুর দারুন পাণ্ডিত্য ছিল। শারীরিক কারণে শেষ দিকে তার কাজ করার ক্ষমতা কমে গিয়েছিল যদিও, কিন্তু তবু তার মধ্যে সহজ একটা ব্যাপার ছিল। বারবার বলতেন, কাজ ছাড়া তিনি বাঁচতে পারবেন না।
6) সাহিত্যের ছাত্র ও গুণমুগ্ধ পাঠক হওয়ার জন্যই হয়তো সৌমিত্রবাবু ভাষা সম্পর্কে ভীষণ সচেতন ছিলেন। হিন্দি ভাষায় তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন না। তাছাড়া উনি সংলাপ নিয়ে খুব সচেতন থাকতেন, ওঁকে দিয়ে যা খুশি সংলাপ বলিয়ে নেওয়া যেত না। চরিত্রের ভিতরে প্রবেশ করে, সংলাপ নিয়ে পরামর্শও দিতেন পরিচালকদের।
7) বয়স উত্তম কুমারের কাছে একটা দারুন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু সৌমিত্রবাবুর বেলায় সেটা হয়নি। উনি সব ধরনের চরিত্রই করেছেন দক্ষতার সঙ্গে। নিজের বয়সকে তিনি হাতিয়ার করেছেন, অভিনেতা হিসাবে বার্ধক্য তাকে বিব্রত করেনি।
8) উনি সত্যজিৎ রায়ের মানসপুত্র ছিলেন। এবং সত্যজিৎ রায়ের জন্যই তিনি বুঝতে পারেন যে, তিনি অনেক কিছুই করতে পারেন। সবকিছু দ্রুত শিখে ফেলার একটা চেষ্টা, জগৎ এবং জীবনকে নতুন চোখে দেখার শিক্ষা তিনি তাঁর প্রিয় সত্যজিৎ রায়ের কাছ থেকেই পেয়েছিলেন
9) সৌমিত্র বাবু চেষ্টা করতেন যতটুকু কাজ করবেন, সেটা উৎকর্ষের সঙ্গে করার। উনি সবসময় সহ অভিনেতা, অভিনেত্রী, টেকনিশিয়ানদের সঙ্গে হাসি মজায় এক সহজ পরিবেশ তৈরি করতেন। উনি বিশ্বাস করতেন সিনেমা আনন্দ করে বানালে তা সুন্দর হয়।
10) এক টেকে শট ওকে করতেন অনায়াস দক্ষতায়। আবার তারই মধ্যে দীর্ঘ কবিতা লিখে ফেলতেন। চিত্রনাট্যের বিশেষ কোনও শব্দ শুনে বলতেন, সেই শব্দ তাঁর মনে নতুন সৃষ্টির বীজ বপন করে দিল।
আমরা 4thPillars রাজনীতি বলতে ক্ষমতা দখলের অঙ্ক কষা বুঝি না। মানুষের স্বাধীন মতামতই শেষ কথা।
গোটা দেশের কৌতূহল, বিতর্কিত দু'টি টুইটের "মালিক' প্রশান্তকে সুপ্রিম কোর্ট কী শাস্তি দেয়।
নগদ ত্রাণের কালচার এখনও রপ্ত হয়নি আমাদের!
রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি নিয়ে, তাঁর ভাবনা নিয়ে কতটুকু চর্চা করে বাঙালি? মনের কথা খুলে বললেন কবীর সুমন।
নির্বাচনী বন্ডোর মাধ্যমে বেসরকারি সংস্থা গোপনে রাজনৈতিক দলকে টাকা জোগাচ্ছে।
দেশের শাসকের বিরুদ্ধে সোচ্চার নাগরিক সমাজ। প্রতিবাদে সামিল কলকাতার শিল্পীরা।