আমেরিকার এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে ছিল গোট বিশ্ব। ভোটের আগে ও পরের ঘটনাক্রম সব মিলিয়ে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকার মতোই বটে! কী ভাবছেন সেখানকার ভোটদাতারা? কীই বা ভাবছে অভিজ্ঞমহল? এই নিয়েই www.4thpillars.com গত 5 নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) এক আলোচনার আয়োজন করেছিল। ঐতিহাসিক এই ভোট নিয়ে আলোচনায় সাংবাদিক সুদীপ্ত সেনগুপ্তের উপস্থিত ছিলেন, সাংবাদিক প্রণয় শর্মা এবং দুই তরুণ মার্কিন-বাঙালি নাগরিক সোহম সেনগুপ্ত ও নির্বাণ সেনগুপ্ত।
1) আমেরিকায় এবার অনেক আর্লি ভোটিং (আগাম ভোটদান) হয়েছে। এছাড়া করোনার জন্য অনেক সাবধানতা নেওয়া হয়েছিল। জনগণ ভোট দিয়েছে আর স্বয়ং প্রেসিডেন্ট গণনা থামিয়ে দেওয়ার কথা বলছেন- ব্যাপারটা অর্থহীন লেগেছে। আসলে ট্রাম্প পরিস্থিতি অনুকূলে নেই বুঝতে পেরে, নিজের দেশবাসীকে রাগিয়ে তুলতে চেয়েছেন। এমনকি এই নির্বাচনের ফল তিনি আদৌ মানবেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্নচিহ্ন ঝুলিয়ে রেখেছেন। সুস্থ গণতন্ত্রে এমন কেউ করতে পারে নাকি?
2) ট্রাম্প জানেন উনি অত পপুলার নন। পপুলার ভোট ওঁর হাতে নেই। এখন উনি জনগণের মনে সন্দেহের বীজ বপন করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সুইং স্টেটগুলোর (হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলা রাজ্যগুলো) মধ্যে যেখানে তিনি সামান্য এগিয়ে, সেখানে ভোট গণনা চালিয়ে যেতে বলছেন। আবার যেখানে তিনি পিছিয়ে, সেখানে ডেমোক্র্যাটরা ভোটে কারচুপি করছে— এই অভিযোগ তুলে ভোট গণনা বন্ধ রাখতে বলছেন। এর ফলে গোটা দেশে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।
3) আমেরিকায় বসবাসকারী সকল জনগোষ্ঠী সমমনোভাবাপন্ন নয়। এদের মধ্যেও বিভিন্ন স্তর রয়েছে। সবাই যে একই রকম চিন্তাভাবনার দ্বারা পরিচালিত হন, এমনটাও নয়। অনেক সময় স্থান অনুযায়ী ইস্যু পাল্টে যায়, সঙ্গে পছন্দও।
4) ট্রাম্প আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মেরুকরণ তীব্র আকার নিয়েছে। নয়া প্রেসিডেন্ট যেই হোন, আগামী 4 বছর দেশে একটা বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হতে চলেছে। ভোটের অসমাপ্ত ফলাফল দেখে এখনও পর্যন্ত যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে সেনেট এবং হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এ ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকানরা প্রায় সমসংখ্যক আসন পেতে চলেছেন।
5) ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণ-যুবদের অধিকাংশই ডেমোক্র্যাটদের সমর্থক। কিন্তু, যারা একইসঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর সমর্থক, তারা ট্রাম্পকে নিয়ে অখুশি নন। আমেরিকার অধিকাংশ বিত্তবান মানুষই রিপাবলিকান পার্টির সমর্থক। কিন্তু ভারতীয় মার্কিনিদেরদের ক্ষেত্রে এটার ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যায়।
6) হোয়াইট হাউসে যিনিই আসুন ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সুসম্পর্ক বজায় রাখবে। কারণ আমেরিকা এখন ভারতকে একটা বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু বলে মনে করে। কিন্তু শুল্ক যুদ্ধ, করোনার উৎপত্তি নিয়ে বাদানুবাদের আবহে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক কেমন হয়, সেটাই এখন দেখার।
7) নরেন্দ্র মোদী ট্রাম্পের সমর্থনে হিউস্টনে সভা করেছিলেন। কিন্তু ভারতীয় মার্কিনিরা সেটার দ্বারা খুব প্রভাবিত হয়েছেন বলে মনে হয় না। এবারের ভোট হয়েছে মূলত দেশের অভ্যন্তরীণ কিছু স্থানীয় ইস্যু নিয়ে। যেমন, স্বাস্থ্যবিমা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা, কোভিড মোকাবিলায় প্রশাসনের পদক্ষেপ, কর্মসংস্থান প্রভৃতি।
8) আমেরিকার ভোট নিয়ে এত আলোচনা হয়, কারণ আমেরিকা বিশ্বের সবকটি দেশের প্রতিবেশী দেশ। সে দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রভাব সব দেশেই কমবেশি পড়ে। তাই গোটা বিশ্ব এখন হোয়াইট হাউসের চার বছরের মালিক কে হন, সেটা জানতে আগ্রহী।
9) অতীতে আমেরিকার গণতান্ত্রিক ভাবনা এবং মূল্যবোধের যে কদর ছিল, তা এখন আর নেই বললেই চলে। আমেরিকার বহুত্ববাদী সংস্কৃতি নিয়ে যে গর্ব ছিল, সেটাও আর নেই। একসময় আমেরিকাকে বিশ্বের অন্যতম স্থিতিশীল গণতন্ত্র বলে মনে করা হত। এখন মার্কিন নাগরিকরা নিজেদের মার্কিনি পরিচয় দিতে লজ্জা পান। কিছুদিন আগেও কেউ ভাবতে পারত না যে, আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দাঙ্গা কিংবা রক্তপাতের ঘটনা ঘটতে পারে। এখন মনে হচ্ছে ঘটনাক্রম সেই ভয়ঙ্কর কিছুর দিকেই এগোচ্ছে।
পরিবেশ রক্ষা করতে হলে তার অঙ্গ মানুষকেও বাঁচতে হবে।
একটি আত্মহত্যার কাহিনিতে মানুষকে মজিয়ে আসল ইস্যুগুলোকে আড়াল করারই কৌশল
পদার্থবিজ্ঞানে এবারের অন্যতম নোবেল বিজয়ী রজার পেনরোজ। কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে তাঁর কাজের তত্ত্বগত ভিত্তি বাঙ
নির্বাচনী বন্ডের টাকাই কি বিধায়ক কেনাবেচার খেলায় কাজে লাগছে?
বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ মোর্চার রবিবারের ব্রিগেডের বিপুল জন সমাবেশ ভোটে কি দাগ কাটতে পারবে?
কেউ প্রশ্ন তুললেই তাকে রাজনীতির ধ্বজাধারী ঠাহর করে আমরা গণতন্ত্রের পরিসরকে ছোট করে ফেলছি না কি?