‘পদক চাই পদক!’ আমাদের দেশে ইদানীং উন্নয়নের জন্য পদকের প্রয়োজন হচ্ছে। প্রত্যন্ত গ্রামের যে ছেলে মেয়েগুলো অলিম্পিকে গেছে তাদের গ্রামের বাসিন্দারা আশায় বুক বাঁধছেন এইবার বুঝি গ্রামটা উন্নয়নের মুখ দেখল!
লাভলিনা বরগোহাঁই, বর্তমানে অন্যতম আলোচিত নাম। মেয়েটি থাকে অসমের বারো মুখিয়া নামের এক গ্রামে, যার অধিবাসী প্রায় 2000 জন। কিন্তু হলে কী হবে, এতদিন সেখানে না ছিল ভাল রাস্তা, না ছিল কলের জল। কোনও মুমূর্ষু রোগীকে ওই ভাঙাচোরা পথ দিয়ে নিয়ে যেতে যেতেই তার প্রাণবায়ু বেরিয়ে যেত, হাসপাতালের মুখ দেখা হত না। এতগুলো মানুষের যাতায়াতের পথ বলতে মেঠো পথ একটি, যা এই গ্রামকে বাকি অঞ্চলের সঙ্গে জুড়েছে। এই গ্রামের নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্র মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে! যেখানে শয্যা নেই, কদাচিৎ আসে ডাক্তার। তাদের মেয়ে এবার অলিম্পিকে পদক পাওয়ার পর এই ছবিটা বদলাবে বলে আশায় বুক বেঁধেছেন গ্রামের সকলে। কারণ এর আগে হিমা দাস আন্তর্জাতিক খেলায় পদক পাওয়ার পর তাঁর গ্রামেরও উন্নয়ন ঘটেছে। দেড় কিলোমিটার পাকা রাস্তা তৈরি হয়েছে, এমনকি একটি মিনি স্টেডিয়াম তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: মেয়েরাই দেশের গৌরব আনছে টোকিও থেকে
অন্যদিকে রবি দাহিয়া যে গ্রামের বাসিন্দা, সেখানে দিনে মাত্র দু’ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। পরিষ্কার খাবার জল অবধি ঠিক মতো পাওয়া যায় না সেখানে। একটা হাসপাতাল নেই, স্টেডিয়াম নেই, প্রায় কিছুই নেই। কিন্তু রবিও এবার পদক জিতেছেন অলিম্পিকে, দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। তাঁর কিছু তো প্রাপ্য আছেই! তাই তাঁর গ্রামে এবার বিদ্যুতের খুঁটি বসছে।
বাদ যাননি মীরাবাই চানুও। তাঁর বাড়ির সামনেও পাকা রাস্তা তৈরি হয়েছে যেমনটা, অতীতে মেরি কমের বেলায় হয়েছিল। কি অবাক হচ্ছেন? জল, রাস্তা, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা এই রকম সাধারণ অথচ গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাগুলো পাওয়ার জন্য এতগুলো গ্রামের মানুষকে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে। আজ তাদের গ্রামের কেউ পদক পেল বলে তারা খানিক উন্নয়নের মুখ দেখছে। তাহলে না জানি গোটা ভারতে এমন কতগুলো গ্রাম আছে, যারা এই সামান্যতম সুযোগ সুবিধাটুকু পায় না।
বিগত কয়েক দিনের ছবি দেখে এটা অন্তত স্পষ্ট, অতি প্রত্যন্ত গ্রামের উন্নয়ন ঘটাতে চাইলে তোমায় দেশকে আন্তর্জাতিক পদক এনে দিতেই হবে। তবে তোমার অঞ্চলের উন্নয়নের দায়িত্ব সরকার নেবে, নচেৎ নয়। সরকারের ভারী ঠেকা পড়েছে অ্যাথলিট তৈরি করার! আগে নিজেরা তৈরি হও, সম্মান আনো তারপর হবে বাকি কথা। এই তো চলছে এখন! ফলে যাদেরই পরিচিত বা প্রতিবেশী অলিম্পিকে যাচ্ছে, তারা সেই অ্যাথলিটের খেলা দেখার জন্য মুখিয়ে থাকে না, তারা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে সেই অ্যাথলিট যেন জিতে ফেরে। তাহলে তাদের অবহেলার শাপমোচন ঘটবে! হায় রে সমাজ! হায় রে সরকার! কেউ পদক পাওয়ার স্বপ্ন দেখে সম্মানের জন্য, কেউ পদক পাওয়ার স্বপ্ন দেখে একটু ভাল থাকার জন্য।
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব যেন মারণ উৎসব না হয়, তার চেষ্টা পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদেরই করতে হবে।
মন্দির মসজিদের মতো ঐতিহাসিক স্থাপত্যের গায়েও ধর্মের রং লাগানো হচ্ছে চিহ্ন দেখে।
রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম হওয়ার দরুন দুই বোনেরই খুব ছোট বয়সে দেশপ্রেমের সঙ্গে পরিচয় ঘটে।
প্রায় সারাদিনটাই গল্পের বই পড়াতেই আটকে আছি!
প্রেমে ব্যর্থ হয়েই অনেকে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন, মুক্তি কোথায়?
সব শাশুড়ি কি সমান হয়? ভাল মন্দ কি সকলের মধ্যেই থাকে না?